স্বাধীন দেশে সকলের নিজ নিজ ধর্ম পালন করার অধিকার রয়েছে
- Update Time : ০৮:৪০:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অক্টোবর ২০২১
- / 205
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার ওপর আঘাতের সঙ্গে জড়িত সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন, চিহ্নিত সাম্প্রদায়িক শক্তি শারদীয় দুর্গোৎসব চলাকালে পূজামণ্ডপ, মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা করেছে। তারা দেশকে ধর্মান্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। তাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে ‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তি রুখে দাঁড়াও’ শিরোনামে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তারা এ আহ্বান জানান।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ। বক্তৃতা করেন জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব ওমর ফারুক, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল মজিদ, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ দীপ আজাদ, ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক জিহাদুর রহমান, ডিইউজের দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল আলম।
সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান।
উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর দুর্গাপূজার অষ্টমীতে কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ অবমাননার অজুহাত তুলে হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নোয়াখালীর চৌমুহনীসহ বিভিন্ন স্থানের মন্দিরে ও হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, খুন, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদ আয়োজিত সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা হামলার সঙ্গে জড়িত এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সমাবেশে জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, এ দেশ যে ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তাতে ধর্মের বিভেদ ছিল না। হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহৎ একটি উৎসবে এ ধরনের হামলা মেনে নেওয়া যায় না। এদেশে সবাই মিলেমিশে থাকার জন্য স্বাধীন হয়েছে। একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে দিতে তৎপর হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক হতে হবে।
সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, একটি চক্র এদেশকে ধর্মান্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। সামরিক শাসকেরা কূটকৌশল হিসেবে রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহার করে। রাজনীতি এখন এতো দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে গেছে সেই সময়ের অবস্থানও ধরে রাখতে পারে না। কারা দাঙ্গা বাধিয়ে মানুষ মারার পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে, তাদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
সাংবাদিক নেতা ওমর ফারুক বলেন, ঘটনাস্থলে থাকা মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হামলাকারীরা বহিরাগত। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি চক্র সক্রিয়। পূজামণ্ডপে হামলার সময় পুলিশ ছিল না কেন সেই প্রশ্ন রাখেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, সাংবাদিক হিসেবে জনগণের প্রতি কর্তব্য রয়েছে। সেই কর্তব্যের তাগিদে আজ সাংবাদিকেরা এ ধরনের হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সংহতি জানিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। স্বাধীন দেশে সকলের নিজ নিজ ধর্ম, কৃষ্টি পালন করার অধিকার রয়েছে। সেই অধিকারে যারা বাধা দেবে তাদের প্রতিহত করা হবে।