জাবিতে সাংস্কৃতিক জোটের ‘কালো দিবস’ পালিত

  • Update Time : ১১:৪২:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২২
  • / 191

জাবি প্রতিনিধিঃ

নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ‘কালো দিবস’ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে মৌন মিছিল, সমাবেশ ও আবৃত্তি সন্ধ্যার আয়োজন করেছে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট।
আজ রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে-এর পাদদেশ থেকে মৌন মিছিলটি শুরু হয়ে শহীদ মিনারের পাদদেশে শেষ হয়।

মিছিল শেষে সাংস্কৃতিক জোটের সহ সাধারণ সম্পাদক প্রাপ্তি তাপসীর সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ আবৃত্তি সংগঠন ধ্বনি’র উপদেষ্টা ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ রেজা বলেন, ‘ধ্বনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র আবৃত্তি সংগঠন। এখানে শুধু আবৃত্তি করা হয় না, গণতান্ত্রিক চর্চা করা হয়। দেশে কিংবা দেশের বাইরে যেকোন সাম্প্রদায়িকতা কিংবা নির্যাতনের প্রতিবাদে আন্দোলন করে ধ্বনি। আমাদের গণতান্ত্রিক চর্চাকে, প্রতিবাদী চরিত্রকে যারা পছন্দ করতো না তারা ২০১০ সালে আমাদের কক্ষে আগুন লাগায়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে পুড়িয়ে ফেলে। এতে করে আমরা দমে যাইনি। সেদিনের আগে আমাদের যে অবস্থান ছিলো, আজও তা আছে আগামীতেও থাকবে।’

সেসময়ে চলমান উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনকে স্থমিত করার জন্য এ ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে উল্লেখ করে ধ্বনির তৎকালীন সভাপতি কামালউদ্দিন রিমন বলেন, তখন ধ্বনির বয়স ১৪ বছর। ১৪ বছর পর ২৭ নভেম্বর নতুন কমিটিতে আমি সভাপতির দায়িত্ব পাই। আমার দায়িত্বের একদিনও হয়নি সেরকম একটি সময়ে ধ্বনি কক্ষে আগুন লাগানো হয়। ঘটনার ১২ বছর পরেও প্রশাসন থেকে এ বিষয়ে কোন সুরাহা পাওয়া যায়নি। তদন্ত হবে আশ্বাস পেয়েও কোনো তদন্ত প্রতিবেদন আমরা দেখিনি। আগুন দিয়ে সংস্কৃতি পুড়িয়ে দেয়া যায় না। সংস্কৃতির নিজস্ব শক্তি আছে যেটা থাকে বুকে। ১২ বছর পরেও ধ্বনি তার আপন গতিতে চলছে। আগের চেয়েও শক্তিশালী হয়েছে।

ধ্বনির বর্তমান সভাপতি ইমরান শাহরিয়ার বলেন, সেদিনে আগুনের ছাই থেকে ধ্বনি ফিনিক্স পাখির মতো জন্ম নিয়েছে। নতুন উদ্যোমে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। সকল প্রকার অন্যায়-জুলুমের বিরুদ্ধে সংগঠনটি পূর্বের ন্যায় তাদের প্রতিবাদ জারি রাখছে৷ সামনের দিনগুলোতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
সমাবেশ শেষে ধ্বনি’র প্রযোজনায় আবৃত্তি সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। ধ্বনি’র আবৃত্তি শিল্পীরা প্রতিবাদী কবিতা আবৃত্তি করেন।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ২৭ নভেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবৃত্তি সংগঠন ‘ধ্বনি’র কক্ষে আগুন দেয়ার ঘটনায় প্রতিবছর এই দিনে ‘কালো দিবস’ পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কর্মীরা। সেসময় চলমান উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনের রেশ ধরে এমন ঘটনা ঘটে।

 

#…..

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


জাবিতে সাংস্কৃতিক জোটের ‘কালো দিবস’ পালিত

Update Time : ১১:৪২:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২২

জাবি প্রতিনিধিঃ

নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ‘কালো দিবস’ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে মৌন মিছিল, সমাবেশ ও আবৃত্তি সন্ধ্যার আয়োজন করেছে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট।
আজ রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে-এর পাদদেশ থেকে মৌন মিছিলটি শুরু হয়ে শহীদ মিনারের পাদদেশে শেষ হয়।

মিছিল শেষে সাংস্কৃতিক জোটের সহ সাধারণ সম্পাদক প্রাপ্তি তাপসীর সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ আবৃত্তি সংগঠন ধ্বনি’র উপদেষ্টা ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ রেজা বলেন, ‘ধ্বনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র আবৃত্তি সংগঠন। এখানে শুধু আবৃত্তি করা হয় না, গণতান্ত্রিক চর্চা করা হয়। দেশে কিংবা দেশের বাইরে যেকোন সাম্প্রদায়িকতা কিংবা নির্যাতনের প্রতিবাদে আন্দোলন করে ধ্বনি। আমাদের গণতান্ত্রিক চর্চাকে, প্রতিবাদী চরিত্রকে যারা পছন্দ করতো না তারা ২০১০ সালে আমাদের কক্ষে আগুন লাগায়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে পুড়িয়ে ফেলে। এতে করে আমরা দমে যাইনি। সেদিনের আগে আমাদের যে অবস্থান ছিলো, আজও তা আছে আগামীতেও থাকবে।’

সেসময়ে চলমান উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনকে স্থমিত করার জন্য এ ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে উল্লেখ করে ধ্বনির তৎকালীন সভাপতি কামালউদ্দিন রিমন বলেন, তখন ধ্বনির বয়স ১৪ বছর। ১৪ বছর পর ২৭ নভেম্বর নতুন কমিটিতে আমি সভাপতির দায়িত্ব পাই। আমার দায়িত্বের একদিনও হয়নি সেরকম একটি সময়ে ধ্বনি কক্ষে আগুন লাগানো হয়। ঘটনার ১২ বছর পরেও প্রশাসন থেকে এ বিষয়ে কোন সুরাহা পাওয়া যায়নি। তদন্ত হবে আশ্বাস পেয়েও কোনো তদন্ত প্রতিবেদন আমরা দেখিনি। আগুন দিয়ে সংস্কৃতি পুড়িয়ে দেয়া যায় না। সংস্কৃতির নিজস্ব শক্তি আছে যেটা থাকে বুকে। ১২ বছর পরেও ধ্বনি তার আপন গতিতে চলছে। আগের চেয়েও শক্তিশালী হয়েছে।

ধ্বনির বর্তমান সভাপতি ইমরান শাহরিয়ার বলেন, সেদিনে আগুনের ছাই থেকে ধ্বনি ফিনিক্স পাখির মতো জন্ম নিয়েছে। নতুন উদ্যোমে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। সকল প্রকার অন্যায়-জুলুমের বিরুদ্ধে সংগঠনটি পূর্বের ন্যায় তাদের প্রতিবাদ জারি রাখছে৷ সামনের দিনগুলোতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
সমাবেশ শেষে ধ্বনি’র প্রযোজনায় আবৃত্তি সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। ধ্বনি’র আবৃত্তি শিল্পীরা প্রতিবাদী কবিতা আবৃত্তি করেন।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ২৭ নভেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবৃত্তি সংগঠন ‘ধ্বনি’র কক্ষে আগুন দেয়ার ঘটনায় প্রতিবছর এই দিনে ‘কালো দিবস’ পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কর্মীরা। সেসময় চলমান উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনের রেশ ধরে এমন ঘটনা ঘটে।

 

#…..