নোবিপ্রবিতে ছাত্রলীগের হেনস্তার শিকার সাংবাদিক
- Update Time : ০৬:৪৩:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২
- / 184
নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কর্মীর দ্বারা নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির এক সদস্য হেনস্তার শিকার হয়েছেন।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ১২ ডিসেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম মোস্তফা ও ২০২০-২১ বর্ষের ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম উদ্দিন রাফির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সাথে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালের সামনে মারামারির ঘটনা ঘটে৷ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অফিস সূত্রে এ তথ্য জানার পর বিষয়টি সম্পর্কে খোজ নেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও আরটিভি অনলাইনের প্রতিনিধি মো. রিয়াদুল ইসলাম মুঠোফোনে নাঈম মোস্তফাকে কল দিলে সে এই বিষয়ে ফোনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায় এবং ওই সাংবাদিককে সালাম হলের সামনে আসতে বলে।
এসময় ওই সাংবাদিক বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য সালাম হলের সামনে আসলে অভিযুক্ত নাঈম মোস্তফা সাজানো নাটক অনুযায়ী রিয়াদুলকে তার আগে থেকে প্রস্তুত করে রাখা রাজনৈতিক সিনিয়রদের মাধ্যমে হেনস্তা করে৷
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, এসময় ওই সাংবাদিকের উপর চড়াও হয় শাকিল মোস্তফা (অর্থনীতি, ২০১৮-১৯), আরমান মিহাম (শিক্ষা, ২০১৮-১৯), নাঈম মোস্তফা (শিক্ষা, ২০১৯-২০), আকরাম হোসাইন (এমআইএস, ২০১৯-২০), জোভান আহমেদ নাঈম (শিক্ষা প্রশাসন, ২০১৮-১৯) প্রলেক্স বড়ুয়া (বাংলা, ২০১৮-১৯), হাসিব শান্ত ও মোহাম্মদ আদনান আলী। এসময় তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারধর করে।
আরো জানা যায়, ওই সাংবাদিকের গায়ে হাত দিয়ে ধাক্কাধাক্কি করতে করতে একপর্যায়ে নাঈম মোস্তফা ও শাকিল মোস্তফা তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। ঘটনাস্থলে কয়েকজন ক্যাম্পাস সাংবাদিক আসলে মোবাইল ফোন ফেরত দেন। এসময় শাকিল মোস্তাফা অনবরত গালাগালি করতে থাকেন এবং বলেন,’ প্রশাসনের কাছে টাকা খেয়ে নিউজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকরা’। এছাড়া প্রশাসন ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করেন।”
ঘটনা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্য ইকবাল হোসেন সুমন, শাহানা রহমান এবং সালাম হলের প্রভোস্ট ড.আনিসুজ্জামান রিমন ও সহকারী প্রভোস্ট রায়হান আহমেদ রিমন সমাধানের চেষ্টা করেন।
জানা যায়, হামলা ও হেনস্থার ঘটনায় অভিযুক্ত শাকিল মোস্তফা, আরমান মিহাম, নাঈম মোস্তফা, আকরাম হোসাইন, জোভান আহমেদ নাঈম, প্রলেক্স বড়ুয়া, হাসিব শান্ত ও মোহাম্মদ আদনান আলী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী এবং শীর্ষ পদপ্রার্থী জাহিদ হাসান শুভর অনুসারী। এর আগে সালাম হলে মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মারামারির ঘটনায়ও নাম আসে শাকিল মোস্তফা, আদনান আলী, প্রলেক্স বড়ুয়া সহ একই রাজনৈতিক গ্রুপের বেশ কয়েকজনের।
বিষয়টি জানতে চাইলে ছাত্রলীগ পদপ্রার্থী জাহিদ হাসান শুভ বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি এখনো কিছু জানি না।
এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিচার দাবী জানান নোবিপ্রবির সাংবাদিকবৃন্দ। এক যৌথ বিবৃতিতে নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আব্দুল কবীর ফারহান ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুদ্দীন পাঠান এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার নিন্দা জ্ঞাপন করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রলীগ থেকে তাদের বহিষ্কার দিয়ে কলঙ্কমুক্ত করার দাবী জানান।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, ছাত্রলীগ কর্মীর দ্বারা সাংবাদিক হেনস্তার এটি অত্যন্ত ঘৃন্য কাজ। আমরা ঘটনা তদন্ত করে অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করব।