রাসূল (সা.) কে অনুসরণ করলে সামাজিক অস্থিরতা নির্মূল সম্ভব: শায়েখ আহমাদুল্লাহ
- আপডেটের সময়: ১০:৪১:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / 74
শাহিন রাজা, ইবি প্রতিনিধি:
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘আজকে আমরা যে সামাজিক অস্থিরতা দেখতে পাচ্ছি, যে অবিচার দেখতে পাচ্ছি, যদি রাসূল (সা.) কে চর্চা করা হয়, তাকে অনুসরণ করা হয়, তাহলে সকল অস্থিরতা পরিপূর্ণভাবে নির্মূল করা সম্ভব। মক্কার যে মানুষগুলো রাসূল (সা.) কে চরম অপমানিত করে, লাঞ্ছিত করে ও কষ্ট দিয়ে বিতাড়িত করেছিলেন, মক্কা বিজয় করার পর তিনি সেই সব লোকদের উপর কোন প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি; বরং সবাইকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা দিয়েছিলেন। ধৈর্য এবং সহিষ্ণুতার যে উদাহরণ তিনি রেখেছেন, সেটা শুধুমাত্র তার কথার মধ্যে নয়, তার কাজের মাধ্যমে তিনি বাস্তবায়ন করেছেন।’
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অডিটোরিয়ামে সিরাতুন নবী (সা.) উদযাপন উপলক্ষ্যে ‘বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সুন্নাতে রাসূলুল্লাহ (সা.)’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সিরাত বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘আজকের বিশ্বে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে হয়তো সবাই কথা বলবে। কিন্তু রাসূল (সা.) শুধু কথাই বলেননি বরং তিনি তা কার্যে বাস্তবতায়ন করেছেন। তিনি হযরত বেলাল হাবসী (রা.) কে এমন জায়গায় বসিয়েছিলেন, যে জায়গায় বসানোর ফলে সমাজের কেউ বর্ণবাদ নিয়ে টু শব্দ করবার মতো সাহস দেখায়নি। আমরা যদি রাসূল (সা.) এর বিদায় হজের ভাষণ পর্যালোচনা করি, তাহলে দেখা যাবে তিনি কীভাবে একটি ন্যায় এবং মানবিক পৃথিবী গড়ে তুলেছিলেন। তার আদর্শের মধ্যে যারা বেড়ে উঠেছেন, তারা মানব ইতিহাসে ইনসাফের যে উদাহরণ তারা তৈরি করেছেন, এটা বোধহয় মানব ইতিহাসে আর কখনো ফিরে আসবে না।’
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘আজকের পৃথিবীতে যে অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং দারিদ্র্যের চ্যালেঞ্জ আমরা দেখতে পাচ্ছি, সম্পদের অসম বণ্টন দেখতে পাচ্ছি। বেকারত্ব, ভোগবাদ মানুষকে কুরে কুরে খাচ্ছে, ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। এ সবকিছু থেকে উদ্ধারের জন্য মুহাম্মদ (সা.) এর সেই জীবনদর্শনে যেতে হবে, যে জীবনদর্শন মানুষকে আখেরাতমুখী করে, যে জীবনদর্শন মানুষকে মানবকল্যাণে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলে। বর্তমান বিশ্বের যেসব দেশে নারীদের অধিকার নিয়ে কথা বলে, তাদের দেশেই বেশি নারী নির্যাতন হচ্ছে। কিন্তু মুহাম্মাদ (সা.) অনেক আগেই নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য বলেছেন, তিনি নারীদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল আচরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাদেরকে সংসারে আটকে রেখে কিংবা বৈবাহিক জীবনে তাদেরকে আবদ্ধ করে রেখে জুলুম করতে নিষেধ করেছেন।’
শায়খ বলেন, ‘রাসূল (সা.) হিজরতের আগ মুহূর্তেও তার কাছে রাখা আমানতগুলো হযরত আলী (রা.) কে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, যেন সবাই তাদের আমানতগুলো বুঝিয়ে পায়। আমাদেরকে উন্নতের উচ্চ শিখরে পৌঁছাতে হলে রাসূলুল্লাহর আদর্শ নিজেদের মাঝে বাস্তবতায়ন করতে হবে। আজকের বিশ্বের অমুসলিম দেশের শিশুরা কোন মিথ্যা বলে না, কাউতে ধোঁকা দেয় না। কিন্তু অনেক মুসলিমদের মিথ্যা কথা বলতে শোনা যায়, যা মুসলিম হিসেবে নিজেদেরকে লজ্জিত হতে হয়।’
অনুষ্ঠানে সিরাতুন নবী (সা.) উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রফীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।






























