জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বৈধ ঘোষণা

- Update Time : ১১:৪২:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
- / 45
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করেছে আপিল বিভাগ। এর ফলে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া দলটির নিবন্ধন আবারও বৈধ বলে গণ্য হবে।
রবিবার (১ জুন) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় দেন। দলটির পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক ও শিশির মনির। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে করা আপিল শুনানি শেষ হয় গত ১৪ মে। সেদিনই রায়ের জন্য ১ জুন দিন ধার্য করেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এর আগে ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর দলটির আইনজীবীরা অনুপস্থিত থাকায় আপিল বিভাগ আপিলটি খারিজ করে দেয়। পরে আবেদন করে আপিলটি পুনরুজ্জীবন করা হয় এবং ৩ ডিসেম্বর থেকে শুনানি শুরু হয়।
২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে সাময়িক নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন। তবে ২০০৯ সালে তরিকত ফেডারেশন, জাকের পার্টি ও সম্মিলিত ইসলামী জোটসহ কয়েকটি দলের নেতারা দলটির নিবন্ধন চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধনকে সংবিধান পরিপন্থী ও অবৈধ বলে রায় দেন। তখন জামায়াতের গঠনতন্ত্রে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিষয়টি কেন্দ্রীয় ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়।
হাইকোর্ট রায়ে দলটির আপিল করার অনুমতি দিলেও একই বছরের ৫ আগস্ট আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত জামায়াতের স্থগিতাদেশের আবেদন খারিজ করে। ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর দলটি নিয়মিত আপিল করে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও জামায়াতের প্রত্যাবর্তন
২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর আপিল খারিজ হওয়ার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মোড় নেয়। সরকারবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যেই ২০২৪ সালের ১ আগস্ট সরকার জামায়াতে ইসলামী ও তাদের অঙ্গসংগঠন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
তবে একই বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ওই নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে নতুন প্রশাসন। ২৮ আগস্ট জামায়াতের রাজনৈতিক নিষিদ্ধাদেশ প্রত্যাহার হয় এবং দলটি পুনরায় নিবন্ধন বৈধ করার জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করে।
আইনজীবীদের প্রতিক্রিয়া
রায়ের পর জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা জানান, এ রায়ের মাধ্যমে দলটি এখন থেকে পূর্ণ রাজনৈতিক অধিকারসহ নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃত রাজনৈতিক দল হিসেবে কার্যক্রম চালাতে পারবে।
এই রায়ের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলমান একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও আইনগত বিতর্কের অবসান ঘটল। তবে বিষয়টি ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।