পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে প্রশাসন ভবনে তালা দেওয়ার ঘটনায় অনুসন্ধান কমিটি
- Update Time : ০৯:৪৯:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫
- / 11
পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়ার ঘটনায় অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে প্রশাসন।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কলেজ পরিদর্শক এফ নজরুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ১২ সদস্যবিশিষ্ট ওই অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ঘটনার সুষ্ঠু অনুসন্ধানের মাধ্যমে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতির জাতীয়তাবাদী সহায়ক কর্মজীবী পরিষদ ও সহায়ক কর্মচারী পেশাজীবী ফোরাম সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পৃথক পৃথক আবেদনে জানায়, ২ জানুয়ারি সকাল পৌনে ১০টা থেকে কতিপয় শিক্ষার্থী ও অজ্ঞাতপরিচয় বহিরাগতরা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে ভবনে কর্তব্যরত সহ–উপাচার্যদ্বয়, কোষাধ্যক্ষসহ প্রায় ২৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটকে রাখেন। তাঁরা সেদিন রাত প্রায় পৌনে ১০টা পর্যন্ত তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকেন। এ সময় আবেগাপূর্ণ ও বিব্রতকর অভিনয়ের মাধ্যমে ছড়ানো হয় প্রোপাগান্ডা, দেওয়া হয় প্রাণনাশের হুমকি। ভেতরে আটকে থাকা অসুস্থ রোগী, নফল রোজাদার, সন্তানসম্ভবা নারীসহ কিছু মানুষ অসহায় অবস্থায় পড়েন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাঁরা সেদিনের সেই ঘটনাকে দুঃখজনক, আইনবহির্ভূত, অমানবিক ও ন্যক্কারজনক উল্লেখ করে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত, প্রশাসনিক ও একাডেমিক ব্যবস্থা নিয়ে বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও প্রশাসনিক গতিশীলতা ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মুক্তার হোসেন বলেন, ওই দিন একটা অমানবিক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। ওই ঘটনার পর তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ পরিস্থিতি জানিয়ে ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের ঘটনা তদন্তের দাবি রাখে।
পোষ্য কোটা বাতিলের আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন। তদন্ত কমিটির ব্যাপারে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি হতেই পারে। দেখা যাক, তদন্ত প্রতিবেদনে কী আসে।
এর আগে ১ জানুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দ পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করে শুধু সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা সম্পূর্ণভাবে বাতিলের দাবিতে পরদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন সহ–উপাচার্য, প্রক্টর, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসকসহ দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর তাঁরা অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পান। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ওই রাতেই পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল বলে ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব।
এ ঘোষণার পর থেকে কোটা পুনর্বহালের দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট ও সর্বশেষ বুধবার দিনব্যাপী কর্মবিরতি পালন করেন। দাবি না মানলে ১৫ ও ১৬ জানুয়ারি তাঁরা কর্মবিরতি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন।