চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য সরকারি অনুদান পাচ্ছেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী
- Update Time : ০৬:৫৪:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুন ২০২১
- / 168
মো: শুভ ইসলাম, জাককানইবি:
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) সাবেক শিক্ষার্থী তরুণ নির্মাতা ফজলে হাসান শিশির স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য পাচ্ছেন সরকারি অনুদান। গত ১৬ জুন ‘স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি’র সিদ্ধান্তের আলোকে ২০২০-২১ অর্থ বছরের জন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদান প্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সরকারী এই অনুদানের পরিমাণ ২০ লক্ষ টাকা।
তার নিজের লিখা ‘ঝিরি পথ পেরিয়ে’ স্বল্পদৈর্ঘ্য । চলচ্চিত্রটিতে প্রযোজক হিসেবে আছেন মো. সিফাত হাসান এবং চলচ্চিত্র নির্মাণ তত্ত্বাবধানের জন্য মেন্টরের ভূমিকা পালন করবেন খ্যাতনামা পরিচালক অমিতাভ রেজা।
এই তরুণ নির্মাতা ছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ইংরেজিতে স্নাতক ডিগ্রী গ্রহণের পর চলচ্চিত্র বিষয়ে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য তিনি ভারত সরকারের বৃত্তি গ্রহণ করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্রবিদ্যা বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জনের জন্য ভর্তি হন।
এরপর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তিনি দেশে ফিরে মেধাবী নির্মাতা দেবাশীষ দাস (ডুব) এর চলচ্চিত্র ‘মুকুলের যাদুর ঘোড়া’র নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে যোগদান করেন।
২০০৯-এ, কলেজে পড়ার সময় কিছু না বুঝেই। ধীরে ধীরে আলোকচিত্রের প্রতি প্রচন্ড ঝোঁক থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণ ও বোঝাপড়ার দিকে আগ্রহ ক্রমশ বাড়তে থাকে।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, এভাবে ধীরে ধীরে আগ্রহের জায়গাকে উপজীব্য করে কাজ করতে থাকি, সিনেমা দেখতে থাকি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র সংগঠনের হাল ধরি। অনার্স শেষে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলচ্চিত্র বিষয়ক পড়াশোনার জন্য যাই, যা আমার চলচ্চিত্রিক বোঝাপড়ায় একটা শক্ত ভূমিকা রাখে।
এর আগে, ২০১৩ সালে তার প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মোমেন্টোস প্যারালেলোস’-এর জন্য তিনি দ্য ডেইলি স্টার ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক আয়োজিত ‘Celebrating Life 2013’-তে সেরা চলচ্চিত্রের পুরষ্কার পান।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে যুক্ত ছিলেন ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফি ক্লাব, জাককানইবির সাথে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা যে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই, তখনো একটা বেশ ঘরোয়া পরিবেশ বিরাজ করছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে। তবে যেহেতু বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ক্যাম্পাসে স্থায়ীভাবে থাকেন না, তাই ক্লাস পরবর্তী সময়েই একটা শূণ্যতা বশ করে ফেলত ক্যাম্পাসে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র শিল্পকে উপজীব্য করে নিজেদেরকে আরো পরিশীলিত জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা।
তিনি বলেন, আমরা নিয়মিত আলোকচিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, ওয়ার্কশপ করে যেতাম। থিয়েটার ও পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের স্টুডিও থিয়েটার হলটা না পেলে আমাদের অনেক প্রদর্শনীই সম্ভব হতো না সেই সময়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক বিকাশে আমাদের আরো বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা থাকলেও অর্থ ও অডিটোরিয়াম এর অভাবে অনেক কিছুই আলোর মুখ দেখেনি।
চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদান প্রাপ্ত এই নির্মাতা দ্রুততম সময়ে ‘ঝিরিপথ পেরিয়ে’ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের নির্মাণ কাজ শুরু করবেন আশা করছেন। ‘ঝিরিপথ পেরিয়ে’ নিয়ে তিনি বলেন, এটার চিত্রনাট্য লেখা হয়েছিল কলকাতায় বসে। সরকারি অনুদানের জন্য এই স্ক্রিপ্ট এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র জমা দেই গত বছরের ডিসেম্বর মাসে। প্রায় ছয় মাস পরে সরকারি প্রজ্ঞাপন দেখে নিশ্চিত হই যে এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি অনুদান এর জন্য মনোনীত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন যে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ চিত্রনাট্য অনুযায়ী চলচ্চিত্রটির চরিত্রায়ন ও চিত্রায়ণ পর্যায়। এই গল্পটির চিত্রায়ন হবে বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের মারমা অধ্যুষিত একটা জনপদকে ঘিরে। তাই এর চিত্রায়ণ পর্যায় এর থেকেও বেশি চ্যালেঞ্জিং হল এর চরিত্রায়ন পর্যায়। এরই মাঝে রয়েছে করোনা পরিস্থিতি। দেখা যাক, কত দ্রুত লোকেশন ও চরিত্র নির্বাচনে বেরিয়ে পড়া যায়।
উল্লেখ্য যে,এ বছর এই বিভাগে ১০ জনকে মোট ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে ১০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও তাদের প্রযোজক ও পরিচালকের নাম প্রকাশ হয়।