ঢাবির মুহসীন হলে ঘুমন্ত অবস্থায় মাথায় পলেস্তারা খসে আহত শিক্ষার্থী
- Update Time : ০১:৪১:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫
- / 75
জাননাহ, ঢাবি প্রতিবেদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় শিক্ষার্থীর মাথায় বড় আকারের পলেস্তারা খসে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ঐ শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (৬ জানুয়ারি) রাত সোয়া ১টায় হলের ২০৪ নম্বর রুমে এমন ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থীর নাম মাসুদ রানা। তিনি ২০১৮-১৯ সেশনের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ।তার মাথার দুই জায়গায় ফেটে গেছে। তার মধ্যে এক জায়গার ক্ষত বেশ গভীর।
জানা যায়, রাতে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ২০৪ নম্বর রুমে মশারি টানিয়ে ঘুমাতে যান মাসুদ ও ফরহাদ জোবায়ের। রাত সোয়া ১টার দিকে হঠাৎ পলেস্তারা খসে সোজা মাসুদের মাথায় পড়ে। এতে তার মাথার দুই জায়গা ফেটে যায়। তবে পলেস্তারা মশারির ওপরে পড়ায় বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে যান এ শিক্ষার্থী।
রুমটির অন্য শিক্ষার্থী ফরহাদ জোবায়ের এক ভিডিওতে বলেন, এখন রাত ১টা ২০ মিনিট। আমি ২ মাস আগে রুমে ওঠার সময় দেখি রুমের পলেস্তারা নেই। পরে হল প্রশাসনকে জানালেও কোনো উত্তর পাইনি। সেজন্য আমি নিজে মিস্ত্রি ডেকে পলেস্তারা লাগাই। কিন্তু আজ হঠাৎ মাসুদ ভাই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর একপর্যায়ে বিশাল আকারের পলেস্তারা ভাইয়ের মাথার খসে পড়ে। এতে ভাইয়ের মাথা দুই জায়গায় ফেটে যায়। তাকে সকালে মেডিকেলে নিয়ে মাথায় সেলাই দিতে হতে পারে।
তিনি বলেন, মশারি না টানিয়ে ঘুমালে ক্ষত আরও বাড়তে পারত, আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। এরপরও প্রশাসন কবে সজাগ হবে, আমি জানি না।
ঘটনার পর রাত আড়াইটার দিকে নিরাপদ আবাসিক হল স্থাপনের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাসভবনের সামনে অবস্থান করেও স্লোগান দেন তারা।
পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইমার্জেন্সি সিটি স্ক্যান করালে আপাতত মাসুদকে ডাক্তার আশঙ্কামুক্ত বলেছে জানান মাহবুব তালুকদার নামে এক শিক্ষার্থী।
তিনি আরও বলেন, মুহসীন হলের মাসুদ রানা ২০৪ নাম্বার রুমে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। রাত দেড়টায় ছাদ খসে বড় একটি টুকরা তার মাথায় পড়ে। মৃত্যু ব্যতীত কি আমাদের প্রশাসন পরিবর্তন হবে না? উন্নত আবাসন ব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক নিরাপত্তায় প্রশাসন এত উদাসীন কেন? তারা তো শিক্ষক,কর্মকর্তার-কর্মচারীর ব্যাপারে উদাসীন নয়!
এ বিষয়ে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ নাজমুল আহসান বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনায় আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ঘটনার পর আমি এবং হাউজ টিউটররা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছিলাম। আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মশারি না থাকলে হয়তো তার অবস্থা আরও গুরুতর হয়ে যেত, কিন্তু সৃষ্টিকর্তা রহম করেছেন। আমি নতুন প্রাধ্যক্ষ হয়েছি। আমি আমার জায়গা থেকে হলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কাজ করার চেষ্টা করছি, শিক্ষার্থীরাও আমাকে সহযোগিতা করছে।
মুহসীন হলের ভবনটা ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে প্রাধ্যক্ষ বলেন, এ ভবন সংস্কারের চেয়ে নতুন ভবন নির্মাণ করা বেশি জরুরি। এ ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি।