ঢাবিতে ৪র্থ মুহসীন হল আন্তঃক্লাব জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

  • Update Time : ০২:৩২:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 47

জাননাহ, ঢাবি প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ডিবেটিং ক্লাব আয়োজিত ‘৪র্থ হাজী মুহম্মদ মুহসীন স্মারক আন্তঃক্লাব জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৪’-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২টি বিতর্ক ক্লাব অংশ নেয়। চূড়ান্ত বিতর্কে ফজলুল হক মুসলিম হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (সরকারি দল) ৬-৩ ব্যালটে হারায় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা ডিবেটিং ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (বিরোধী দল)। শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক নির্বাচিত হন বিরোধী দলের উপনেতা উম্মে সুহালা। বিতর্কের বিষয় ছিল ‘এই সংসদ, জুলাই বিপ্লবীদের বিপ্লব পরবর্তী সময়ে পতিত ক্ষমতাসীন দল ও তার দোসরদের প্রতি উদার মানসিকতাকে সমর্থন করে’।

মুহসীন হল ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদিক শিকদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান । অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

এ ছাড়া হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, রূপায়ণ গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান মাহির আলী খাঁন রাতুল, হল বিতর্ক ক্লাবের মডারেটর আইনুল ইসলাম, ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি অর্পিতা গোলদার এবং সাধারণ সম্পাদক আদনান মুস্তারি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, শিক্ষা, যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন, শৃঙ্খলাবোধ ও মূল্যবোধ বিকাশের ক্ষেত্রে বিতর্ক চর্চার গুরুত্ব অপরিসীম। বিতর্ক চর্চার মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সত্য উদ্ঘাটনসহ নানান প্রাসঙ্গিক বিষয় উঠে আসে। বিতর্ক মানেই জনমত সৃষ্টি করা। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যে সংস্কার কমিশন গঠন করেছি। ১৫ তারিখের মধ্যে সে রিপোর্ট আসবে। রিপোর্টগুলোকে নিয়েও আমরা বিতর্ক করব। এই বিতর্কের উদ্দেশ্য হবে যেন সবার মাঝে ঐক্যমত্য সৃষ্টি করতে পারি এবং জাতি হিসেবে এগিয়ে যেতে পারি।

প্রধান আলোচক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সহপাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে বিতর্কের গুরুত্ব অপরিসীম এবং এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই বিতর্কের মাধ্যমেই মানবিক মানুষ হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। কারণ, বিতর্কের মাধ্যমে যুক্তির চর্চা হয় এবং বিভিন্ন মতামতের গ্রহণযোগ্যতা এখানে থাকে। যার ফলে, বিতর্ক করে যে সকল বিজ্ঞ মানুষ তৈরি হয় তারা মানবিক পৃথিবী তৈরিতে ভূমিকা পালন করতে পারে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রূপায়ণ গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান মাহির আলী খাঁন রাতুল বলেন, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিতর্কের মতো একটি নান্দনিক বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত। আশাকরি অন্যান্য কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোও এগিয়ে আসবে। 

তিনি আরও বলেন, আগামীতে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য এই ধরনের বিতর্কের মাধ্যমে যুক্তিশীল ও স্মার্ট জনবল তৈরি করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই ধরনের প্রতিযোগিতা বিতার্কিক, সমাজ এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতে নতুন চিন্তার খোরাক দেবে। আমরা আগামীতেও এ ধরনের আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত থাকব।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ঢাবিতে ৪র্থ মুহসীন হল আন্তঃক্লাব জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

Update Time : ০২:৩২:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫

জাননাহ, ঢাবি প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ডিবেটিং ক্লাব আয়োজিত ‘৪র্থ হাজী মুহম্মদ মুহসীন স্মারক আন্তঃক্লাব জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৪’-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২টি বিতর্ক ক্লাব অংশ নেয়। চূড়ান্ত বিতর্কে ফজলুল হক মুসলিম হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (সরকারি দল) ৬-৩ ব্যালটে হারায় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা ডিবেটিং ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (বিরোধী দল)। শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক নির্বাচিত হন বিরোধী দলের উপনেতা উম্মে সুহালা। বিতর্কের বিষয় ছিল ‘এই সংসদ, জুলাই বিপ্লবীদের বিপ্লব পরবর্তী সময়ে পতিত ক্ষমতাসীন দল ও তার দোসরদের প্রতি উদার মানসিকতাকে সমর্থন করে’।

মুহসীন হল ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদিক শিকদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান । অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

এ ছাড়া হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, রূপায়ণ গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান মাহির আলী খাঁন রাতুল, হল বিতর্ক ক্লাবের মডারেটর আইনুল ইসলাম, ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি অর্পিতা গোলদার এবং সাধারণ সম্পাদক আদনান মুস্তারি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, শিক্ষা, যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন, শৃঙ্খলাবোধ ও মূল্যবোধ বিকাশের ক্ষেত্রে বিতর্ক চর্চার গুরুত্ব অপরিসীম। বিতর্ক চর্চার মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সত্য উদ্ঘাটনসহ নানান প্রাসঙ্গিক বিষয় উঠে আসে। বিতর্ক মানেই জনমত সৃষ্টি করা। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যে সংস্কার কমিশন গঠন করেছি। ১৫ তারিখের মধ্যে সে রিপোর্ট আসবে। রিপোর্টগুলোকে নিয়েও আমরা বিতর্ক করব। এই বিতর্কের উদ্দেশ্য হবে যেন সবার মাঝে ঐক্যমত্য সৃষ্টি করতে পারি এবং জাতি হিসেবে এগিয়ে যেতে পারি।

প্রধান আলোচক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সহপাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে বিতর্কের গুরুত্ব অপরিসীম এবং এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই বিতর্কের মাধ্যমেই মানবিক মানুষ হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। কারণ, বিতর্কের মাধ্যমে যুক্তির চর্চা হয় এবং বিভিন্ন মতামতের গ্রহণযোগ্যতা এখানে থাকে। যার ফলে, বিতর্ক করে যে সকল বিজ্ঞ মানুষ তৈরি হয় তারা মানবিক পৃথিবী তৈরিতে ভূমিকা পালন করতে পারে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রূপায়ণ গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান মাহির আলী খাঁন রাতুল বলেন, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিতর্কের মতো একটি নান্দনিক বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত। আশাকরি অন্যান্য কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোও এগিয়ে আসবে। 

তিনি আরও বলেন, আগামীতে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য এই ধরনের বিতর্কের মাধ্যমে যুক্তিশীল ও স্মার্ট জনবল তৈরি করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই ধরনের প্রতিযোগিতা বিতার্কিক, সমাজ এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতে নতুন চিন্তার খোরাক দেবে। আমরা আগামীতেও এ ধরনের আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত থাকব।