স্বাধীনতা দিবসে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আলোচনা অনুষ্ঠিত
- Update Time : ০৮:১৮:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০২৪
- / 81
কুবি প্রতিনিধি,
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দুপুর ২ টায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক মিলনায়তনে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ আবু তাহেরের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মাহমুদুল হাছানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল, কুমিল্লা জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. জি এম মনিরুজ্জামান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক ড. জি এম মনিরুজ্জামান বলেন, ভারত পাকিস্তান ভাগ হয়েছিলো দ্বিজাতিতত্ত্বের উপর ভিত্তি করে৷ আর এটা ছিল একটি ভুল সিদ্ধান্ত। এরপর পাকিস্তানিরা বাংলার মানুষের উপর নির্যাতন নিপীড়ন শুরু করে আর এ নিপীড়ন থেকে মুক্ত করেছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান৷ স্বাধীনতার আগে ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, ঢাকা শহরে চালানো হয়েছিলো গণহত্যা যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এছাড়াও বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিলো যাদের মধ্যে অন্যতম ছিল মুনির চৌধুরি, জহির রায়হান। জহির রায়হান অবশ্য যুদ্ধের কিছুদিন পর গুম হন৷ তার তৈরিকৃত প্রামাণ্যচিত্র স্টপ জেনোসাইড যা সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। আমেরিকা আমাদের মুক্তি যুদ্ধে অসহযোগিতা করলেও আমেরিকান সাংবাদিকরা প্রামাণ্যচিত্রটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নামেন। আবার সেই অশুভশক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। তখন আমাদের পাড়ার আমরাসহ ১১ পরিবার একঘরে ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করতেও পারতাম না। এভাবে পাকিস্তানিদের শাসন আমলের মতো স্বাধীন বাংলায়ও ৩০ বছর এমন শাসন চলে। বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে নেতৃত্ব দিচ্ছে। দেশ আগাচ্ছে সব দিক থেকে। আমরা চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে এমন উন্নয়ন চিরস্থায়ী হোক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান বলেন, আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে সরণ করছি স্বাধীনতার যুদ্ধে প্রাণ দেওয়া সকল শহিদের ও স্বাধীনতার ঘোষক শেখ মুজিবুর রহমানকে। অনেক আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন হয়। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতো তবে আমাদের দেশ অনেক আগে উন্নয়নশীল দেশে অনেক আগে পরিণতি হতো। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে তাদের অনেকের শাস্তি হয়েছে। আবার অনেকে শাস্তি হওয়ার আগে মৃত্যুবরণ করেছে। যদি তাদের মরণোত্তর শাস্তি হতো তাহলে আরো শান্তি পেতাম। মুক্তি যুদ্ধ একটা ইতিহাস আর বঙ্গবন্ধুকে এ ইতিহাসের অংশ বললে ভুল হবে, বঙ্গবন্ধু নিজেই একটা ইতিহাস। সর্বশেষ একটা কথায় বলি বঙ্গবন্ধুর দেখানো স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে কাজ করে যাচ্ছে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমরা চাই উনার হাত ধরে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে উঠুক।
সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মোঃ আবু তাহের বলেন, আমি মহান স্বাধীনতা দিবসে একটি কথা বলতে চাই যাদের মধ্যে দেশ প্রেম আছে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা ছেড়ে দিয়ে অন্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারেনা। ভিসির ইন্ধনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে তিন আর টুকরো করা হয়েছে। এ ছাত্রলীগ ছিল বঙ্গবন্ধুর হাতেগড়া সংগঠন। উনি কীভাবে দাবি করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের। কর্মকর্তা-কর্মচারী দের মধ্যে দুই ভাগ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দাবির সাথে এক মত ঘোষণা করে ছাত্রত্ব খুইয়েছেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলো আমি কতগুলো চোর পেয়েছি। আসলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ও একটা চোর পেয়েছে। অবৈধভাবে তিনি ইনক্রিমেন্ট নিচ্ছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে মিথ্যাচার করছেন। তিনি কখনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মানুষ হতে পারেন না। তাই আমি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্টেক হোন্ডারদের আহ্বান জানাবো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুর্নীতিবাজ মুক্ত করতে।
উল্লেখ্য সকালে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে পৃথকভাবে শহিদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।