নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে আলোচনায় বাধা, প্রতিবাদে মানববন্ধন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের

  • Update Time : ০৩:২৪:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / 106

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ‘আমরা কেন উদ্বিগ্ন’ শীর্ষক আলোচনা সভা আয়োজনের কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষের বাধায় তা করতে পারেনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’। 

বুধবার(১৩ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার অডিটোরিয়ামে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১: আমরা কেন উদ্বিগ্ন?’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু অনুষ্ঠান শুরুর ৩০ মিনিট আগে সেটির বরাদ্দ বাতিল করেন মিলনায়তনের দায়িত্বে থাকা কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবদুল বাছির। এ ঘটনার পর সেখানেই কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান উপস্থিত শিক্ষকরা। এরপর বেলা ৩টার দিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে একটি প্রতিবাদী সমাবেশ করেন তারা।

জানা যায়, আলোচনা সভা শুরুর ৩০ মিনিট আগে যখন সবাই অডিটোরিয়ামের সামনে জড়ো হচ্ছিলেন তখন (দুপুর ১টা ৪৮ মিনিট নাগাদ) কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুল বাছির ফোন দিয়ে আলোচনা সভা না করার কথা জানান। ফলে অডিটোরিয়ামের দরজাটি বন্ধ রাখা হয়। 

জানা গেছে, মিলনায়তনটি আয়োজকদের অন্যতম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. তানজিম উদ্দিন খানের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।

এ বিষয়ে ড. তানজিম উদ্দিন খান বলেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম নিয়ে আলোচনা সভার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার ভবনের অডিটোরিয়ামটি আমাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শুরুর আধা ঘণ্টা আগে আমাকে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির ফোন দেন। তিনি বলেন, এ ভেন্যুতে আমাদের দেওয়া বুকিং বাতিল করা হয়েছে। আমরা যেন প্রোগ্রামটি না করি। সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ তিনি আমাকে বলেননি। তবে বলেছেন, এক জায়গা থেকে তিনি ফোন পেয়েছেন। ওই জায়গার পক্ষ থেকে নাকি বলা হয়েছে, আমাদের যেন স্পেসটি ব্যবহার করতে না দেন। এরপর তিনি আমাকে বলেন, যেহেতু ফোন এসেছে সেহেতু ঝামেলা হতে পারে। আপনাদের অনুরোধ করবো আপনারা যেন প্রোগ্রাম না করেন।

অধ্যাপক ড. তানজিম বলেন, আমরা ভেন্যু বরাদ্দের আবেদনেই প্রোগ্রামের বিষয়বস্তু উল্লেখ করেছিলাম। যখন তিনি অনুমোদন দিয়েছিলেন তখন তিনি দেখেই অনুমোদন দিয়েছেন। এখন বলছেন অন্য বক্তব্যের কথা। আর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে যে কোনো বিষয়ে আমরা প্রশ্ন তুলতে পারি, সমালোচনা করতে পারি। শিক্ষক হিসেবে এ শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে কথা বলা আমাদের অধিকার, দায়িত্ব।

পরে নির্ধারিত অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে ঢাবির অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন করেন তারা।

মানববন্ধনে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন বলেন, রাষ্ট্র নতুন একটা শিক্ষাক্রম চালু করছে। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করবো, নিজেদের মত প্রকাশ করবো, এরকম একটা নিরীহ প্রোগ্রামকে যে সরকার, যে প্রশাসন বা যারা সহ্য করতে পারে না, যারা মেনে নিতে পারে না, তারা দেশের ভালো চায়, দেশের মানুষের মঙ্গল চায়, এটা আমি কী করে ভাববো? আমরা আজকের এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।

দেশে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেখবেন কেউ ফটোকপি পড়ে, মূল বই খোলে না। এর কারণ হলো, শিক্ষকরা ব্যস্ত লেখাপড়া বাদে বাকি সব কাজে। কর্তৃপক্ষ কম বেতন দেওয়ার কারণে আমাদের দেশের স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়ায়, কোচিং করায়। পৃথিবীর কোনো একটা দেশ আপনি পাবেন না যে দেশের কারিকুলাম একবারেই শতভাগ পরিবর্তন করে ফেলে। কারণ, লাখ লাখ ছেলে-মেয়ের উপর এর ইম্প্যাক্ট পড়ে। এজন্য লাখ লাখ মানুষের ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনি এরকম ঝুঁকি নিতে পারেন না। এ কারণেই সব দেশেই একটু একটু করে পরিবর্তনের মাধ্যমে এর প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা হয়, কিন্তু আপনারা তা করছেন না।

অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন বলেন, দেশের এই শিক্ষা ব্যবস্থা কিন্তু আমাদের জন্যই। এর মাধ্যমে আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উভয়ই প্রভাবিত হবে। এজন্য সেই চিন্তা-ভাবনা আমাদেরই করতে হবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই জাতীয় শিক্ষাক্রম – ২০২১ নিয়ে আজকে আমাদের যে আলোচনা অনুষ্ঠান ছিল, সেটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ করতে দেয়নি। কিন্তু আমাদের আলোচনা অনুষ্ঠান করতেই হবে। অন্য কোন ফোরামে বা জায়গায় আমরা কখন-কীভাবে আলোচনাটা করবো, সেটা সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি সরকার নতুন শিক্ষাক্রমের নামে যে একটি ব্যবস্থা চাপিয়ে দিচ্ছে, সেটি পর্যালোচনা করাই ছিল আমাদের আলোচনা সভার মূল উদ্দেশ্য। বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে এ শিক্ষাক্রমের সফলতা বা ব্যর্থতার দিক, ভালো বা মন্দ উভয় দিকেরই পর্যালোচনা বা মতামত গ্রহণ ছিল আমাদের আলোচনা সবার উদ্দেশ্য। দুঃখজনক হলেও সত্য, সেই পর্যালোচনাটি আমাদের করতে দেওয়া হলো না।

আরসি মজুমদার অডিটোরিয়ামের দায়িত্বে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির এ বিষয়ে বলেন, আলোচনার জন্য তারা আমার কাছে দরখাস্ত দিলে আমি সেটা মঞ্জুরও করেছি। কিন্তু আজ বিভিন্ন মাধ্যমে আমি দুপুর ২টা নাগাদ অবহিত হয়েছি যে তারা যে ধরণের আলোচনা করবে বা বক্তব্য রাখবে সেটা কোনো না কোনোভাবে আমাদের দেশ, সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে আহত করবে। যেহেতু আমরা একটি নীতিমালার উপর ভিত্তি করে অডিটোরিয়ামটি বরাদ্দ দেই, নীতিমালায় বলা আছে যে রাষ্ট্র, সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়কে আঘাত করে এমন কোনো গ্রুপকে এটি বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। ফলে আমি আয়োজককে যথারীতি কল দেই এবং এখানে আলোচনাসভা না করে অন্য কোথাও করার জন্য বলি।

কিন্তু কে বা কাদের থেকে ফোন আসার কারণে আলোচনা সভা শুরুর ৩০ মিনিট আগে তাদেরকে সভা করতে নিষেধ করা হলো জানতে চাইলে, রাষ্ট্রের অনেক বিষয় আমরা বলতে পারি না বলে উল্লেখ করেন তিনি ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে আলোচনায় বাধা, প্রতিবাদে মানববন্ধন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের

Update Time : ০৩:২৪:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ‘আমরা কেন উদ্বিগ্ন’ শীর্ষক আলোচনা সভা আয়োজনের কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষের বাধায় তা করতে পারেনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’। 

বুধবার(১৩ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার অডিটোরিয়ামে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১: আমরা কেন উদ্বিগ্ন?’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু অনুষ্ঠান শুরুর ৩০ মিনিট আগে সেটির বরাদ্দ বাতিল করেন মিলনায়তনের দায়িত্বে থাকা কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবদুল বাছির। এ ঘটনার পর সেখানেই কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান উপস্থিত শিক্ষকরা। এরপর বেলা ৩টার দিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে একটি প্রতিবাদী সমাবেশ করেন তারা।

জানা যায়, আলোচনা সভা শুরুর ৩০ মিনিট আগে যখন সবাই অডিটোরিয়ামের সামনে জড়ো হচ্ছিলেন তখন (দুপুর ১টা ৪৮ মিনিট নাগাদ) কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুল বাছির ফোন দিয়ে আলোচনা সভা না করার কথা জানান। ফলে অডিটোরিয়ামের দরজাটি বন্ধ রাখা হয়। 

জানা গেছে, মিলনায়তনটি আয়োজকদের অন্যতম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. তানজিম উদ্দিন খানের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।

এ বিষয়ে ড. তানজিম উদ্দিন খান বলেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম নিয়ে আলোচনা সভার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার ভবনের অডিটোরিয়ামটি আমাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শুরুর আধা ঘণ্টা আগে আমাকে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির ফোন দেন। তিনি বলেন, এ ভেন্যুতে আমাদের দেওয়া বুকিং বাতিল করা হয়েছে। আমরা যেন প্রোগ্রামটি না করি। সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ তিনি আমাকে বলেননি। তবে বলেছেন, এক জায়গা থেকে তিনি ফোন পেয়েছেন। ওই জায়গার পক্ষ থেকে নাকি বলা হয়েছে, আমাদের যেন স্পেসটি ব্যবহার করতে না দেন। এরপর তিনি আমাকে বলেন, যেহেতু ফোন এসেছে সেহেতু ঝামেলা হতে পারে। আপনাদের অনুরোধ করবো আপনারা যেন প্রোগ্রাম না করেন।

অধ্যাপক ড. তানজিম বলেন, আমরা ভেন্যু বরাদ্দের আবেদনেই প্রোগ্রামের বিষয়বস্তু উল্লেখ করেছিলাম। যখন তিনি অনুমোদন দিয়েছিলেন তখন তিনি দেখেই অনুমোদন দিয়েছেন। এখন বলছেন অন্য বক্তব্যের কথা। আর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে যে কোনো বিষয়ে আমরা প্রশ্ন তুলতে পারি, সমালোচনা করতে পারি। শিক্ষক হিসেবে এ শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে কথা বলা আমাদের অধিকার, দায়িত্ব।

পরে নির্ধারিত অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে ঢাবির অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন করেন তারা।

মানববন্ধনে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন বলেন, রাষ্ট্র নতুন একটা শিক্ষাক্রম চালু করছে। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করবো, নিজেদের মত প্রকাশ করবো, এরকম একটা নিরীহ প্রোগ্রামকে যে সরকার, যে প্রশাসন বা যারা সহ্য করতে পারে না, যারা মেনে নিতে পারে না, তারা দেশের ভালো চায়, দেশের মানুষের মঙ্গল চায়, এটা আমি কী করে ভাববো? আমরা আজকের এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।

দেশে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেখবেন কেউ ফটোকপি পড়ে, মূল বই খোলে না। এর কারণ হলো, শিক্ষকরা ব্যস্ত লেখাপড়া বাদে বাকি সব কাজে। কর্তৃপক্ষ কম বেতন দেওয়ার কারণে আমাদের দেশের স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়ায়, কোচিং করায়। পৃথিবীর কোনো একটা দেশ আপনি পাবেন না যে দেশের কারিকুলাম একবারেই শতভাগ পরিবর্তন করে ফেলে। কারণ, লাখ লাখ ছেলে-মেয়ের উপর এর ইম্প্যাক্ট পড়ে। এজন্য লাখ লাখ মানুষের ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনি এরকম ঝুঁকি নিতে পারেন না। এ কারণেই সব দেশেই একটু একটু করে পরিবর্তনের মাধ্যমে এর প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা হয়, কিন্তু আপনারা তা করছেন না।

অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন বলেন, দেশের এই শিক্ষা ব্যবস্থা কিন্তু আমাদের জন্যই। এর মাধ্যমে আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উভয়ই প্রভাবিত হবে। এজন্য সেই চিন্তা-ভাবনা আমাদেরই করতে হবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই জাতীয় শিক্ষাক্রম – ২০২১ নিয়ে আজকে আমাদের যে আলোচনা অনুষ্ঠান ছিল, সেটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ করতে দেয়নি। কিন্তু আমাদের আলোচনা অনুষ্ঠান করতেই হবে। অন্য কোন ফোরামে বা জায়গায় আমরা কখন-কীভাবে আলোচনাটা করবো, সেটা সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি সরকার নতুন শিক্ষাক্রমের নামে যে একটি ব্যবস্থা চাপিয়ে দিচ্ছে, সেটি পর্যালোচনা করাই ছিল আমাদের আলোচনা সভার মূল উদ্দেশ্য। বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে এ শিক্ষাক্রমের সফলতা বা ব্যর্থতার দিক, ভালো বা মন্দ উভয় দিকেরই পর্যালোচনা বা মতামত গ্রহণ ছিল আমাদের আলোচনা সবার উদ্দেশ্য। দুঃখজনক হলেও সত্য, সেই পর্যালোচনাটি আমাদের করতে দেওয়া হলো না।

আরসি মজুমদার অডিটোরিয়ামের দায়িত্বে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির এ বিষয়ে বলেন, আলোচনার জন্য তারা আমার কাছে দরখাস্ত দিলে আমি সেটা মঞ্জুরও করেছি। কিন্তু আজ বিভিন্ন মাধ্যমে আমি দুপুর ২টা নাগাদ অবহিত হয়েছি যে তারা যে ধরণের আলোচনা করবে বা বক্তব্য রাখবে সেটা কোনো না কোনোভাবে আমাদের দেশ, সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে আহত করবে। যেহেতু আমরা একটি নীতিমালার উপর ভিত্তি করে অডিটোরিয়ামটি বরাদ্দ দেই, নীতিমালায় বলা আছে যে রাষ্ট্র, সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়কে আঘাত করে এমন কোনো গ্রুপকে এটি বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। ফলে আমি আয়োজককে যথারীতি কল দেই এবং এখানে আলোচনাসভা না করে অন্য কোথাও করার জন্য বলি।

কিন্তু কে বা কাদের থেকে ফোন আসার কারণে আলোচনা সভা শুরুর ৩০ মিনিট আগে তাদেরকে সভা করতে নিষেধ করা হলো জানতে চাইলে, রাষ্ট্রের অনেক বিষয় আমরা বলতে পারি না বলে উল্লেখ করেন তিনি ।