একান্নতে দীপ্ত একাত্তরের বাংলা

  • Update Time : ০২:০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ মার্চ ২০২১
  • / 211

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর অর্জিত লাল সবুজের স্বাধীন বাংলাদেশ পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে একান্নতে পা দিল। একদা তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা পাওয়া বাংলাদেশ আজ গোটা বিশ্বে এক বিস্ময়ের নাম। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের পথে হাঁটছে ছোট্ট দেশটি। নানা চড়াই-উতরাই পার হয়ে স্বাধীনতার এই সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ বহু ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি নিয়ে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের তুলনায় দেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে যাওয়ার পরও মৌলিক খাদ্যচাহিদা পূরণ হয়েছে। শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে আছে দেশের অর্থনীতি। বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগ। ব্যাপক প্রসার ঘটেছে প্রাথমিকসহ গোটা শিক্ষা খাতের। স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নতি, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসার পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বেড়েছে নারীর অংশগ্রহণ। মহামারি করোনাকালেও প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়েছেন। সর্বোপরি গত ৫০ বছরে মানবসম্পদ উন্নয়নের অনেক সূচকে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে বিশ্বের জনসংখ্যায় সপ্তম বৃহৎ দেশটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. আতিউর রহমান বলেন, অর্থনীতির এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে এবং আরও সামনে এগিয়ে যেতে দেশের মেগা প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের নীতি সহজ করতে হবে। সহজেই কীভাবে একজন উদ্যোক্তা ব্যবসা শুরু করতে পারেন, সেদিকে নজর দিতে হবে। ঋণ পাওয়া সহজ করতে হবে। তবেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।

যেভাবে বদলেছে অর্থনীতি

সার্বিক অর্থনীতিতে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিস্ময়কর পরিবর্তন ঘটেছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হতে যাচ্ছে। স্বল্পোন্নত থেকে দেশটি এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠে এসেছে।

তথ্যমতে, যুদ্ধপরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনীতির আকার ছিল ৬.৩ বিলিয়ন। বর্তমানে সেটি দাঁড়িয়েছে ৩৩০ বিলিয়নের বেশি। ১৯৭২ সালে দেশে মাথাপিছু আয় ছিল ৯৩ ডলার। ১৯৭৫ সালে ছিল ২৭৩ ডলার। এরপর বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশে অর্থনীতি নিচের দিকে নামতে শুরু করে। ১৯৭৬ সালে মাথাপিছু আয় দাঁড়ায় ১৩৮ ডলার। ১৯৭৭ সালে মাথা পিছু আয় ছিল ১২৮ ডলার। বর্তমানে দেশের মাথাপিছু আয় ২০৬৪ ডলার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া যায়।

১৯৭৫ এর পর থেকে আজ পর্যন্ত যে পরিমাণ অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি ঘটেছে তার ৭৩ শতাংশ গত ১২ বছরে ঘটেছে।

তথ্যমতে, ১৯৭৩-১৯৭৪ অর্থবছরের তুলনায় জিডিপি আকার ২০১৯-২০ অর্থবছরে এসে বেড়েছে ৩৬৯ গুণ। পরিমাণে যা প্রায় ২৭ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১৬ গুণ। অর্থাৎ ২,০৬৪ ডলার। দারিদ্র্যের হার কমে হয়েছে ২০.৫ শতাংশ। উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর

বাংলাদেশ জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকাভুক্ত হয় ১৯৭৫ সালে। স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের অন্তর্ভুক্ত হতে ৩টি শর্ত রয়েছে। ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ৩টি শর্তই পূরণ করে। পরে ২০২১ সালেও ৩টি শর্ত পূরণে প্রয়োজনীয়তা দক্ষতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী, কোন দেশ পরপর দুটি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পায়। বাংলাদেশ সেই সুপারিশ পেয়েছে। জাতিসংঘের ৩টি শর্তের প্রথমটি হচ্ছে, মাথাপিছু আয়। এরপর অর্থনৈতিক ঝুঁকি এবং সবশেষে মানবসম্পদ উন্নয়ন।

মাথাপিছু আয়ে জাতিসংঘের শর্ত পূরণে ন্যনতম দরকার এক হাজার ২৩০ ডলার। বাংলাদেশে সেখানে ২০২০ সালে মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৬৪ ডলার। অর্থনৈতিক ঝুঁকি কতটা আছে, সেটা নিরূপণে ১০০ স্কোরের মধ্যে ৩২ এর নিচে স্কোর হতে হয়। বাংলাদেশ সেখানে নির্ধারিত মানের চেয়েও ভালো করেছে। অর্থাৎ ২৫.২ স্কোর করেছে। এছাড়া মানবসম্পদ উন্নয়ন যোগ্যতায় দরকার ৬৬-র উপরে স্কোর। বাংলাদেশ সেখানে পেয়েছে আরো বেশি ৭৩.২ স্কোর।

মানবসম্পদ সূচকে অগ্রগতি

শুধু অর্থনৈতিক সূচক নয়, বাংলাদেশ গত পঞ্চাশ বছরে মানবসম্পদ সূচকেও গুরুত্বপূর্ণ উন্নতি করেছে। জাতিসংঘের সূচকে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্কোর ৭৩.২ শতাংশ। এই সূচকের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে মূলত শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নতি।

বিবিএসের হিসেবে দেখা যায়, বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালে প্রতি হাজারে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৫৩ জন। যেটি ২০১৮ সালে এসে প্রতি হাজারে মাত্র ২২ জনে নেমে আসে।

এছাড়ও ১৯৮১ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ছিল প্রতি হাজারে ২১২ জন। যেটি ২০১৮ সালে হয়েছে প্রতি হাজারে ২৯। ১৯৯১ সালে মাতৃ মৃত্যুর হার ছিল ৪.৭৮ শতাংশ। সেটি এখন ১.৬৯ শতাংশে নেমে এসেছে।

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের মানবসম্পদ সূচকে অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ায় বিদেশি ঋণ সহায়তা নির্ভরতা কমেছে। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে ত্রিশ হাজার কোটি টাকার মেগা প্রজেক্ট পদ্মা সেতু।

স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থার মূল্যায়ন করতে গিয়ে ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। অর্থনীতি ক্ষেত্রে, সামাজিক ক্ষেত্রে, মেট্রোরেলসহ সব ক্ষেত্রেই উন্নয়ন হচ্ছে। যারা আমাদের সঙ্গে শত্রæতা করেছে, যাদের আমরা তাড়িয়ে দিয়েছি, তারা আমাদের কাছে আসছে, অনুসরণ করছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এবং বঙ্গবন্ধুর কারণেই আজকে আমরা স্বাধীন হতে পেরেছি। তার যে অবদান সেটাতো কখনো ভোলা যাবে না।’

উন্নয়ন ধরে রাখতে সামাজিক, রাজনৈতিক স্থিতিশলীতা ধরে রাখার পরামর্শ দিয়ে এই ইতিহাসবীদ বলেন, পলিটিক্যাল স্ট্যাবিলিটি সবচেয়ে বড় জিনিস। এটা ধরে রাখতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media


একান্নতে দীপ্ত একাত্তরের বাংলা

Update Time : ০২:০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ মার্চ ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর অর্জিত লাল সবুজের স্বাধীন বাংলাদেশ পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে একান্নতে পা দিল। একদা তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা পাওয়া বাংলাদেশ আজ গোটা বিশ্বে এক বিস্ময়ের নাম। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের পথে হাঁটছে ছোট্ট দেশটি। নানা চড়াই-উতরাই পার হয়ে স্বাধীনতার এই সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ বহু ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি নিয়ে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের তুলনায় দেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে যাওয়ার পরও মৌলিক খাদ্যচাহিদা পূরণ হয়েছে। শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে আছে দেশের অর্থনীতি। বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগ। ব্যাপক প্রসার ঘটেছে প্রাথমিকসহ গোটা শিক্ষা খাতের। স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নতি, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসার পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বেড়েছে নারীর অংশগ্রহণ। মহামারি করোনাকালেও প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়েছেন। সর্বোপরি গত ৫০ বছরে মানবসম্পদ উন্নয়নের অনেক সূচকে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে বিশ্বের জনসংখ্যায় সপ্তম বৃহৎ দেশটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. আতিউর রহমান বলেন, অর্থনীতির এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে এবং আরও সামনে এগিয়ে যেতে দেশের মেগা প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের নীতি সহজ করতে হবে। সহজেই কীভাবে একজন উদ্যোক্তা ব্যবসা শুরু করতে পারেন, সেদিকে নজর দিতে হবে। ঋণ পাওয়া সহজ করতে হবে। তবেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।

যেভাবে বদলেছে অর্থনীতি

সার্বিক অর্থনীতিতে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিস্ময়কর পরিবর্তন ঘটেছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হতে যাচ্ছে। স্বল্পোন্নত থেকে দেশটি এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠে এসেছে।

তথ্যমতে, যুদ্ধপরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনীতির আকার ছিল ৬.৩ বিলিয়ন। বর্তমানে সেটি দাঁড়িয়েছে ৩৩০ বিলিয়নের বেশি। ১৯৭২ সালে দেশে মাথাপিছু আয় ছিল ৯৩ ডলার। ১৯৭৫ সালে ছিল ২৭৩ ডলার। এরপর বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশে অর্থনীতি নিচের দিকে নামতে শুরু করে। ১৯৭৬ সালে মাথাপিছু আয় দাঁড়ায় ১৩৮ ডলার। ১৯৭৭ সালে মাথা পিছু আয় ছিল ১২৮ ডলার। বর্তমানে দেশের মাথাপিছু আয় ২০৬৪ ডলার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া যায়।

১৯৭৫ এর পর থেকে আজ পর্যন্ত যে পরিমাণ অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি ঘটেছে তার ৭৩ শতাংশ গত ১২ বছরে ঘটেছে।

তথ্যমতে, ১৯৭৩-১৯৭৪ অর্থবছরের তুলনায় জিডিপি আকার ২০১৯-২০ অর্থবছরে এসে বেড়েছে ৩৬৯ গুণ। পরিমাণে যা প্রায় ২৭ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১৬ গুণ। অর্থাৎ ২,০৬৪ ডলার। দারিদ্র্যের হার কমে হয়েছে ২০.৫ শতাংশ। উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর

বাংলাদেশ জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকাভুক্ত হয় ১৯৭৫ সালে। স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের অন্তর্ভুক্ত হতে ৩টি শর্ত রয়েছে। ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ৩টি শর্তই পূরণ করে। পরে ২০২১ সালেও ৩টি শর্ত পূরণে প্রয়োজনীয়তা দক্ষতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী, কোন দেশ পরপর দুটি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পায়। বাংলাদেশ সেই সুপারিশ পেয়েছে। জাতিসংঘের ৩টি শর্তের প্রথমটি হচ্ছে, মাথাপিছু আয়। এরপর অর্থনৈতিক ঝুঁকি এবং সবশেষে মানবসম্পদ উন্নয়ন।

মাথাপিছু আয়ে জাতিসংঘের শর্ত পূরণে ন্যনতম দরকার এক হাজার ২৩০ ডলার। বাংলাদেশে সেখানে ২০২০ সালে মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৬৪ ডলার। অর্থনৈতিক ঝুঁকি কতটা আছে, সেটা নিরূপণে ১০০ স্কোরের মধ্যে ৩২ এর নিচে স্কোর হতে হয়। বাংলাদেশ সেখানে নির্ধারিত মানের চেয়েও ভালো করেছে। অর্থাৎ ২৫.২ স্কোর করেছে। এছাড়া মানবসম্পদ উন্নয়ন যোগ্যতায় দরকার ৬৬-র উপরে স্কোর। বাংলাদেশ সেখানে পেয়েছে আরো বেশি ৭৩.২ স্কোর।

মানবসম্পদ সূচকে অগ্রগতি

শুধু অর্থনৈতিক সূচক নয়, বাংলাদেশ গত পঞ্চাশ বছরে মানবসম্পদ সূচকেও গুরুত্বপূর্ণ উন্নতি করেছে। জাতিসংঘের সূচকে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্কোর ৭৩.২ শতাংশ। এই সূচকের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে মূলত শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নতি।

বিবিএসের হিসেবে দেখা যায়, বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালে প্রতি হাজারে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৫৩ জন। যেটি ২০১৮ সালে এসে প্রতি হাজারে মাত্র ২২ জনে নেমে আসে।

এছাড়ও ১৯৮১ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ছিল প্রতি হাজারে ২১২ জন। যেটি ২০১৮ সালে হয়েছে প্রতি হাজারে ২৯। ১৯৯১ সালে মাতৃ মৃত্যুর হার ছিল ৪.৭৮ শতাংশ। সেটি এখন ১.৬৯ শতাংশে নেমে এসেছে।

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের মানবসম্পদ সূচকে অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ায় বিদেশি ঋণ সহায়তা নির্ভরতা কমেছে। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে ত্রিশ হাজার কোটি টাকার মেগা প্রজেক্ট পদ্মা সেতু।

স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থার মূল্যায়ন করতে গিয়ে ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। অর্থনীতি ক্ষেত্রে, সামাজিক ক্ষেত্রে, মেট্রোরেলসহ সব ক্ষেত্রেই উন্নয়ন হচ্ছে। যারা আমাদের সঙ্গে শত্রæতা করেছে, যাদের আমরা তাড়িয়ে দিয়েছি, তারা আমাদের কাছে আসছে, অনুসরণ করছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এবং বঙ্গবন্ধুর কারণেই আজকে আমরা স্বাধীন হতে পেরেছি। তার যে অবদান সেটাতো কখনো ভোলা যাবে না।’

উন্নয়ন ধরে রাখতে সামাজিক, রাজনৈতিক স্থিতিশলীতা ধরে রাখার পরামর্শ দিয়ে এই ইতিহাসবীদ বলেন, পলিটিক্যাল স্ট্যাবিলিটি সবচেয়ে বড় জিনিস। এটা ধরে রাখতে হবে।