ঢাবিতে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরিতে পড়তে ও হলে থাকতে পারবেনা

  • Update Time : ০২:৫৪:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪
  • / 46

জাননাহ, ঢাবি প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে এবং আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে হলে ভ্যালিড স্টুডেন্ট কার্ড পাঞ্চ করতে হবে। আগামী বছর থেকে এই নিয়ম চালু হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তাই এ নিয়ম চালু হলে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীরা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে পড়তে ও আবাসিক হলে থাকতে পারবেন না।

শুক্রবার (১০ মে) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ‘নবীনবরণ ও অগ্রায়ন’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য এসব কথা বলেন।

বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য, চলচ্চিত্র অভিনেতা ও বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফেরদৌস আহমেদ এবং সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক রাশেদা ইরশাদ নাসির বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ছাত্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ সাইফুল আলম চৌধুরী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, লাইব্রেরিতে কার্ড পাঞ্চ করে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করানোর প্রক্রিয়া চালু হচ্ছে। যারা কেবল বিসিএস পড়তে যায়, তারা আগামী বছর থেকে লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতে পারবে না। এখন লাইব্রেরিতে সবাই বিসিএস পড়তে যায়। দু-একজন হয়তো একাডেমিক বই পড়ার জন্য যায়। এর অর্থ, যে বিষয়ে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে, সে বিষয়ে তারা আনন্দ পায় না। আনন্দ পেলে পাঠ্যসূচিনির্ভর পড়াশোনা তাদের ধ্যান-জ্ঞান হওয়ার কথা।

উপাচার্য বলেন, আমাদের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের স্মার্ট কার্ড দেওয়া হয়েছে। এই কার্ডে ১৫ রকমের অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। আমাদের শিক্ষকদের হাতেও আগামী এক মাসের মধ্যে কার্ড পৌঁছে যাবে। আগামী এক মাসের মধ্যেই লাইব্রেরিতেও কার্ড পাঞ্চ করে ঢুকতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ যেসব শিক্ষার্থী লাইব্রেরিতে গিয়ে বিসিএস পড়ে, তারা আর সেখানে ঢুকতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি। আগামী বছর থেকে হলে প্রবেশের সময় শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত কার্ড পাঞ্চ করে প্রবেশ করতে হবে। যার ফলে, মেয়াদোত্তীর্ণ ও বহিরাগতরা হলে প্রবেশ করতে পারবে না।

এসময় উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার উৎকৃষ্ট প্রতিষ্ঠান। এখানকার উন্মুক্ত ও গণতান্ত্রিক পরিবেশে জ্ঞান চর্চা ও সকল সুযোগ-সুবিধার সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। সঠিক তথ্য পরিবেশন, স্বচ্ছতা, নিষ্ঠা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা রাখতে গণমাধ্যমকর্মী ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি উপাচার্য আহ্বান জানান।

সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ বলেন, জ্ঞান, বিবেক ও বুদ্ধি দিয়ে সাংবাদিকরা দেশ ও সমাজকে একটি ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা হলুদ সাংবাদিকতা রোধ ও সঠিক সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ফেরদৌস আহমেদ বলেন, জ্ঞান, বিবেক ও বুদ্ধি দিয়ে সাংবাদিকরা দেশ ও সমাজকে একটি ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা হলুদ সাংবাদিকতা রোধ ও সঠিক সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিভাগের ৯ম, ১০ম ও ১১তম ব্যাচকে বিদায় এবং ১৪তম, ১৫তম, ১৬তম ও ১৭তম ব্যাচকে একত্রে বরণ করে নেওয়া হয়।

এছাড়া সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বিকেলে দ্বিতীয় পর্বে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ঢাবিতে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরিতে পড়তে ও হলে থাকতে পারবেনা

Update Time : ০২:৫৪:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪

জাননাহ, ঢাবি প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে এবং আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে হলে ভ্যালিড স্টুডেন্ট কার্ড পাঞ্চ করতে হবে। আগামী বছর থেকে এই নিয়ম চালু হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তাই এ নিয়ম চালু হলে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীরা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে পড়তে ও আবাসিক হলে থাকতে পারবেন না।

শুক্রবার (১০ মে) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ‘নবীনবরণ ও অগ্রায়ন’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য এসব কথা বলেন।

বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য, চলচ্চিত্র অভিনেতা ও বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফেরদৌস আহমেদ এবং সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক রাশেদা ইরশাদ নাসির বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ছাত্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ সাইফুল আলম চৌধুরী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, লাইব্রেরিতে কার্ড পাঞ্চ করে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করানোর প্রক্রিয়া চালু হচ্ছে। যারা কেবল বিসিএস পড়তে যায়, তারা আগামী বছর থেকে লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতে পারবে না। এখন লাইব্রেরিতে সবাই বিসিএস পড়তে যায়। দু-একজন হয়তো একাডেমিক বই পড়ার জন্য যায়। এর অর্থ, যে বিষয়ে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে, সে বিষয়ে তারা আনন্দ পায় না। আনন্দ পেলে পাঠ্যসূচিনির্ভর পড়াশোনা তাদের ধ্যান-জ্ঞান হওয়ার কথা।

উপাচার্য বলেন, আমাদের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের স্মার্ট কার্ড দেওয়া হয়েছে। এই কার্ডে ১৫ রকমের অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। আমাদের শিক্ষকদের হাতেও আগামী এক মাসের মধ্যে কার্ড পৌঁছে যাবে। আগামী এক মাসের মধ্যেই লাইব্রেরিতেও কার্ড পাঞ্চ করে ঢুকতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ যেসব শিক্ষার্থী লাইব্রেরিতে গিয়ে বিসিএস পড়ে, তারা আর সেখানে ঢুকতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি। আগামী বছর থেকে হলে প্রবেশের সময় শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত কার্ড পাঞ্চ করে প্রবেশ করতে হবে। যার ফলে, মেয়াদোত্তীর্ণ ও বহিরাগতরা হলে প্রবেশ করতে পারবে না।

এসময় উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার উৎকৃষ্ট প্রতিষ্ঠান। এখানকার উন্মুক্ত ও গণতান্ত্রিক পরিবেশে জ্ঞান চর্চা ও সকল সুযোগ-সুবিধার সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। সঠিক তথ্য পরিবেশন, স্বচ্ছতা, নিষ্ঠা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা রাখতে গণমাধ্যমকর্মী ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি উপাচার্য আহ্বান জানান।

সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ বলেন, জ্ঞান, বিবেক ও বুদ্ধি দিয়ে সাংবাদিকরা দেশ ও সমাজকে একটি ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা হলুদ সাংবাদিকতা রোধ ও সঠিক সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ফেরদৌস আহমেদ বলেন, জ্ঞান, বিবেক ও বুদ্ধি দিয়ে সাংবাদিকরা দেশ ও সমাজকে একটি ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা হলুদ সাংবাদিকতা রোধ ও সঠিক সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিভাগের ৯ম, ১০ম ও ১১তম ব্যাচকে বিদায় এবং ১৪তম, ১৫তম, ১৬তম ও ১৭তম ব্যাচকে একত্রে বরণ করে নেওয়া হয়।

এছাড়া সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বিকেলে দ্বিতীয় পর্বে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।