পিএইচডি চালু করলো নোবিপ্রবির ফিমস বিভাগ

  • Update Time : ০৮:৪৪:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪
  • / 83

এস আহমেদ ফাহিম, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ১ম বিভাগ হিসেবে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করেছে মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগ।একুয়াটিক ফুড নিয়ে পিএইচডি প্রোগ্রামের অধীন গবেষণা কার্যক্রম ৫ বছর চলমান থাকবে।

আজ(৫ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি থেকে এই বিষয়ে জানা যায়। এই পিএইচডি প্রোগ্রামে ২ জন শিক্ষার্থী যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,পিএইচডি প্রোগ্রামটিতে কোপেনহেগেন ইউনিভার্সিটি, ডেনমার্ক; স্টারলিং ইউনিভার্সিটি, ইউকে; এভাডিন ইউনিভার্সিটি, ইউকে; আইসিডিডিআরবি ও নোবিপ্রবিসহ মোট ৬ টি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করে ৫ বছরের জন্য চলমান থাকবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, দুইটি থিমেটিক এরিয়ার জন্য ২ জন নির্বাচিত প্রার্থীকে পিএইচডি প্রোগ্রামের আওতায় মাসিক বৃত্তির পাশাপাশি ইউকে এবং ডেনমার্কে ৬ মাসের পড়ালেখার পাশাপাশি গবেষণামূলক কাজের জন্য ২ টি যাতায়াতের খরচ বহন করা হবে।

পিএইচডি প্রোগ্রামের কো-সুপারভাইজর হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন।তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করার বিষয়টি আমাদের জন্য একটা নতুন মাইলফলক। এখানে শিক্ষার্থীরা নিজের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে গবেষণা করবে যা পরবর্তীতে দেশের আর্থ-সামাজিকসহ বিভিন্ন সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

পিএইচডি প্রোগ্রাম নিয়ে তিনি বলেন, চালু হতে যাওয়া পিএইচডির বিষয়টি হচ্ছে একুয়াটিক সিস্টেম। এটি প্রতীয়মান যে, জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বাড়ছে এবং সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ছে যা জীববৈচিত্র্যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তবে এমন প্রতিকূল অবস্থায় মাছ চাষ বন্ধ না করে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য আমরা এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এর ফলে খাদ্য ও পুষ্টির যোগান দেওয়ার বিষয়টি চলমান রাখতে সক্ষম হব। প্রায় সময় দেখা যায়, মানুষ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাব, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রনসহ বিভিন্ন ধরনের অপুষ্টিতে ভুগছে। এ ক্ষেত্রে একুয়াটিক ফুড এধরনের ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রনসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের জোগান দিতে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরো বলেন, এখানে একটি ক্রস সেকশনাল গবেষণা হবে যাতে আমরা একুয়াটিক ফুডে কোন কোন উপাদান কি পরিমাণে আছে তা দেখতে পাব। যারা খাচ্ছে তাদের হেলথ ডায়েট কেমন? পরবর্তীতে ফলাফল কেমন? এবং তা হ্রাস করার জন্য কোন কোন উপাদানগুলো তার খাবারে যোগ করতে হবে তা বলে দিতে সক্ষম হব। আমরা যদি প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে এটির সমাধান করতে পারি তাহলে আমাদের সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ঔষধ নেওয়ার প্রয়োজন হবেনা ।  

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ১৮ বছরে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করতে পেরেছি। আমি  বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সর্বাত্নক সহযোগিতার ধন্যবাদ জানাতে চাই। সবাই মিলে কাজ করলে নোবিপ্রবি বিশ্বের মধ্যে অন্যতম একটা প্রতিষ্ঠান হবে বলে আশা করি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেল এর পরিচালক ও কোষাধ্যক্ষ নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম শুরু হতে যাচ্ছে এটা অবশ্যই আমাদের জন্য একটা সুখবর। আমরা একটা নীতিমালা করেছি এবং একটি ভর্তি নীতিমালা করেছি। এখন যারা যারা ভর্তি নিতে চায় নীতিমালা অনুযায়ী ভর্তি নিতে পারবে। তবে এখানে একটি বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে পিএইচডি যেন শুধুমাত্র সার্টিফিকেট এর জন্য না হয়। পিএইচডির কোয়ালিটি অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। যেহেতু এটা আমাদের প্রথম আমরা এটা ধীর গতিতে নিখুঁতভাবে শুরু করতে চাই।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ দিদার-উল-আলম বলেন, পিএইচডি না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যায়ন হয় না। পিএইচডির মাধ্যমেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচক বেড়ে যায়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগের ফার্মাসি, এপ্লায়েড কেমিস্ট্রি, মাইক্রোবায়োলজি, ইএসডিম এর পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করার মতো সক্ষমতা আছে। এসব বিভাগের শিক্ষকদের বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের সাথে কোলাবোরেশানের মাধ্যমে অনেক গবেষণা হয়। এদের মধ্যে যে বিভাগ পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করতে চায় তাদের নিয়মকানুন মেনে শুরু করতে হবে, তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে অধ্যাপক এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাপত্র থাকতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকার ক্ষেত্রে অনেকগুলো সূচক বিবেচনা করা হয় যেমনঃ কয়টা মাস্টার্স, পিএইচডি আছে, আন্তর্জাতিক জার্নালগুলোতে প্রকাশিত গবেষণাপত্র ইত্যাদি। যদি আমরা পিএইচডি শুরু করতে পারি তাহলে র‍্যাংকিংয়েও আমরা এগিয়ে থাকতে পারব। বাকি বিভাগগুলোকে ও আমরা নীতিমালা মেনে পিএইচডি প্রোগ্রাম শুরু করার জন্য বলেছি। যেহেতু তারা এডভান্স পড়ালেখা করবে তাই তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা করবো।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


পিএইচডি চালু করলো নোবিপ্রবির ফিমস বিভাগ

Update Time : ০৮:৪৪:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪

এস আহমেদ ফাহিম, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ১ম বিভাগ হিসেবে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করেছে মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগ।একুয়াটিক ফুড নিয়ে পিএইচডি প্রোগ্রামের অধীন গবেষণা কার্যক্রম ৫ বছর চলমান থাকবে।

আজ(৫ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি থেকে এই বিষয়ে জানা যায়। এই পিএইচডি প্রোগ্রামে ২ জন শিক্ষার্থী যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,পিএইচডি প্রোগ্রামটিতে কোপেনহেগেন ইউনিভার্সিটি, ডেনমার্ক; স্টারলিং ইউনিভার্সিটি, ইউকে; এভাডিন ইউনিভার্সিটি, ইউকে; আইসিডিডিআরবি ও নোবিপ্রবিসহ মোট ৬ টি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করে ৫ বছরের জন্য চলমান থাকবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, দুইটি থিমেটিক এরিয়ার জন্য ২ জন নির্বাচিত প্রার্থীকে পিএইচডি প্রোগ্রামের আওতায় মাসিক বৃত্তির পাশাপাশি ইউকে এবং ডেনমার্কে ৬ মাসের পড়ালেখার পাশাপাশি গবেষণামূলক কাজের জন্য ২ টি যাতায়াতের খরচ বহন করা হবে।

পিএইচডি প্রোগ্রামের কো-সুপারভাইজর হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন।তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করার বিষয়টি আমাদের জন্য একটা নতুন মাইলফলক। এখানে শিক্ষার্থীরা নিজের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে গবেষণা করবে যা পরবর্তীতে দেশের আর্থ-সামাজিকসহ বিভিন্ন সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

পিএইচডি প্রোগ্রাম নিয়ে তিনি বলেন, চালু হতে যাওয়া পিএইচডির বিষয়টি হচ্ছে একুয়াটিক সিস্টেম। এটি প্রতীয়মান যে, জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বাড়ছে এবং সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ছে যা জীববৈচিত্র্যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তবে এমন প্রতিকূল অবস্থায় মাছ চাষ বন্ধ না করে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য আমরা এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এর ফলে খাদ্য ও পুষ্টির যোগান দেওয়ার বিষয়টি চলমান রাখতে সক্ষম হব। প্রায় সময় দেখা যায়, মানুষ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাব, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রনসহ বিভিন্ন ধরনের অপুষ্টিতে ভুগছে। এ ক্ষেত্রে একুয়াটিক ফুড এধরনের ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রনসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের জোগান দিতে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরো বলেন, এখানে একটি ক্রস সেকশনাল গবেষণা হবে যাতে আমরা একুয়াটিক ফুডে কোন কোন উপাদান কি পরিমাণে আছে তা দেখতে পাব। যারা খাচ্ছে তাদের হেলথ ডায়েট কেমন? পরবর্তীতে ফলাফল কেমন? এবং তা হ্রাস করার জন্য কোন কোন উপাদানগুলো তার খাবারে যোগ করতে হবে তা বলে দিতে সক্ষম হব। আমরা যদি প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে এটির সমাধান করতে পারি তাহলে আমাদের সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ঔষধ নেওয়ার প্রয়োজন হবেনা ।  

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ১৮ বছরে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করতে পেরেছি। আমি  বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সর্বাত্নক সহযোগিতার ধন্যবাদ জানাতে চাই। সবাই মিলে কাজ করলে নোবিপ্রবি বিশ্বের মধ্যে অন্যতম একটা প্রতিষ্ঠান হবে বলে আশা করি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেল এর পরিচালক ও কোষাধ্যক্ষ নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম শুরু হতে যাচ্ছে এটা অবশ্যই আমাদের জন্য একটা সুখবর। আমরা একটা নীতিমালা করেছি এবং একটি ভর্তি নীতিমালা করেছি। এখন যারা যারা ভর্তি নিতে চায় নীতিমালা অনুযায়ী ভর্তি নিতে পারবে। তবে এখানে একটি বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে পিএইচডি যেন শুধুমাত্র সার্টিফিকেট এর জন্য না হয়। পিএইচডির কোয়ালিটি অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। যেহেতু এটা আমাদের প্রথম আমরা এটা ধীর গতিতে নিখুঁতভাবে শুরু করতে চাই।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ দিদার-উল-আলম বলেন, পিএইচডি না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যায়ন হয় না। পিএইচডির মাধ্যমেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচক বেড়ে যায়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগের ফার্মাসি, এপ্লায়েড কেমিস্ট্রি, মাইক্রোবায়োলজি, ইএসডিম এর পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করার মতো সক্ষমতা আছে। এসব বিভাগের শিক্ষকদের বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের সাথে কোলাবোরেশানের মাধ্যমে অনেক গবেষণা হয়। এদের মধ্যে যে বিভাগ পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করতে চায় তাদের নিয়মকানুন মেনে শুরু করতে হবে, তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে অধ্যাপক এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাপত্র থাকতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকার ক্ষেত্রে অনেকগুলো সূচক বিবেচনা করা হয় যেমনঃ কয়টা মাস্টার্স, পিএইচডি আছে, আন্তর্জাতিক জার্নালগুলোতে প্রকাশিত গবেষণাপত্র ইত্যাদি। যদি আমরা পিএইচডি শুরু করতে পারি তাহলে র‍্যাংকিংয়েও আমরা এগিয়ে থাকতে পারব। বাকি বিভাগগুলোকে ও আমরা নীতিমালা মেনে পিএইচডি প্রোগ্রাম শুরু করার জন্য বলেছি। যেহেতু তারা এডভান্স পড়ালেখা করবে তাই তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা করবো।