সূর্যমুখি ফুলের হাসিতে হাসছে কৃষকরা

  • Update Time : ০১:১৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 278

আব্দুল মালেক,রাণীনগর:

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় সূর্যমুখি ফুলের চাষ করা হয়েছে। সূর্যমুখি ফুলের হাসিতে ফুটে উঠেছে মাঠগুলো। আর সূর্যমুখি ফুলের হাসিতে অধিক লাভের আশায় হাসছে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগীতায় এবার চাষীরা জমিতে সূর্যমুখি ফুলের চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা সূর্যমুখী ফুলের বাম্পার ফলনের আশা করছেন। বর্তমানে সূর্যমুখির অধিকাংশ গাছেই ফুল ফুটেছে। এদিকে সূর্যমুখি ফুলের জমিতে এসে বিনোদনও উপভোগ করেছেন অনেকই।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার সদরের মধ্যরাজাপুরসহ বিভিন্ন মাঠে প্রায় ৩৪ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখি ফুলের চাষ করা হয়েছে। কৃষকদের উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সার ও বীজ প্রণোদনা দিয়ে সূর্যমুখি ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

প্রদর্শনী প্রকল্পের আওতায় ধানসহ অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এই সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন কৃষকরা। সূর্যমুখী ফুলের চাষ করলে ফুল থেকে তেল, খৈল ও জ্বালানি পাওয়া যায়। ৪ কেজি বীজ থেকে কমপক্ষে ১ লিটার তৈল উৎপাদন সম্ভব। প্রতি বিঘা জমিতে ১৫ মণ থেকে ১৬ মণ বীজ উৎপাদন হয়ে থাকে। তেল উৎপাদন হবে প্রতি বিঘায় ১৫০ লিটার থেকে ২০০ লিটার পর্যন্ত। প্রতি লিটার তেলের বাজার সর্বনিম্ন মূল্য ২৫০ টাকা। সূর্যমুখি ফুল চাষে প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। বর্তমানে বাজারে ভোজ্য তেলের আকাশ ছোঁয়া দাম হওয়ার কারণে চাহিদা বেড়েছে সরিষা ও সূর্যমুখি তেলের। এছাড়া সূর্যমুখি ফুলের তেল অধিক পুষ্টিগুন সম্পন্ন। তাই ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের জন্য এই তেল অন্যান্য তেলের চেয়ে অনেক উপকারী ও স্বাস্থ্য সম্মত।

No description available.

সূর্যমুখি ফুল চাষী উপজেলার সদরের মধ্যরাজাপুর গ্রামের নুরুল হক নয়ন বলেন, কৃষি অফিস থেকে বীজ পেয়ে ও তাদের সহযোগীতায় প্রায় ১ একর জমিতে সূর্যমুখি ফুলের চাষ করেছি। খরচ পড়েছে বিঘা প্রতি ৫ হাজার টাকা করে। বর্তমানে অধিকাংশ গাছেই ফুল ফুটেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকালে সুর্যমুখির বাম্পার ফলনের আশা করছি। তিনি বলেন, এটি একটি খুবই লাভজনক ফসল। আশা করছি সূর্যমুখি থেকে অধিক লাভবান হবো। আমাকে দেখে এলাকার অনেক কৃষকরা সূর্যমূখী ফুল চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

একই গ্রামের কৃষক মাসুদ বলেন, নয়নের দেখাদেখি আমিও কিছু জমিতে সূর্যমুখি ফুলের চাষ করেছি। গাছে ভালোই ফুল ফুটেছে। তিনি বলেন, এটি শুধু একটি ফসলই নয় জমিতে এসে অনেক মানুষ বিনোদনও নিচ্ছে। আবার অনেকে পরিবার সদস্যদের নিয়ে সূর্যমুখি ফুলের জমিতে গিয়ে ছবি তুলে আনন্দ উপভোগ করছেন।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন, সূর্যমুখীর বীজ থেকে যে তেল উৎপন্ন হয় তা স্বাস্থ্যসম্মত ও মানসম্পন্ন। উপজেলায় এবার ৩৪ হেক্টর জমিতে সুর্যমুখি ফুলের চাষ করা হয়েছে। আমরা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের বীজ ও সার প্রণোদনা দিয়ে সূর্যমুখি ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ করছি ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এটি একটি অধিক লাভজনক ফসল। কৃষকরা ধানসহ অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এই সূর্যমুখি ফুলের চাষ করলে অধিক লাভবান হবেন বলে মনে করছেন তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media


সূর্যমুখি ফুলের হাসিতে হাসছে কৃষকরা

Update Time : ০১:১৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২

আব্দুল মালেক,রাণীনগর:

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় সূর্যমুখি ফুলের চাষ করা হয়েছে। সূর্যমুখি ফুলের হাসিতে ফুটে উঠেছে মাঠগুলো। আর সূর্যমুখি ফুলের হাসিতে অধিক লাভের আশায় হাসছে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগীতায় এবার চাষীরা জমিতে সূর্যমুখি ফুলের চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা সূর্যমুখী ফুলের বাম্পার ফলনের আশা করছেন। বর্তমানে সূর্যমুখির অধিকাংশ গাছেই ফুল ফুটেছে। এদিকে সূর্যমুখি ফুলের জমিতে এসে বিনোদনও উপভোগ করেছেন অনেকই।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার সদরের মধ্যরাজাপুরসহ বিভিন্ন মাঠে প্রায় ৩৪ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখি ফুলের চাষ করা হয়েছে। কৃষকদের উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সার ও বীজ প্রণোদনা দিয়ে সূর্যমুখি ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

প্রদর্শনী প্রকল্পের আওতায় ধানসহ অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এই সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন কৃষকরা। সূর্যমুখী ফুলের চাষ করলে ফুল থেকে তেল, খৈল ও জ্বালানি পাওয়া যায়। ৪ কেজি বীজ থেকে কমপক্ষে ১ লিটার তৈল উৎপাদন সম্ভব। প্রতি বিঘা জমিতে ১৫ মণ থেকে ১৬ মণ বীজ উৎপাদন হয়ে থাকে। তেল উৎপাদন হবে প্রতি বিঘায় ১৫০ লিটার থেকে ২০০ লিটার পর্যন্ত। প্রতি লিটার তেলের বাজার সর্বনিম্ন মূল্য ২৫০ টাকা। সূর্যমুখি ফুল চাষে প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। বর্তমানে বাজারে ভোজ্য তেলের আকাশ ছোঁয়া দাম হওয়ার কারণে চাহিদা বেড়েছে সরিষা ও সূর্যমুখি তেলের। এছাড়া সূর্যমুখি ফুলের তেল অধিক পুষ্টিগুন সম্পন্ন। তাই ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের জন্য এই তেল অন্যান্য তেলের চেয়ে অনেক উপকারী ও স্বাস্থ্য সম্মত।

No description available.

সূর্যমুখি ফুল চাষী উপজেলার সদরের মধ্যরাজাপুর গ্রামের নুরুল হক নয়ন বলেন, কৃষি অফিস থেকে বীজ পেয়ে ও তাদের সহযোগীতায় প্রায় ১ একর জমিতে সূর্যমুখি ফুলের চাষ করেছি। খরচ পড়েছে বিঘা প্রতি ৫ হাজার টাকা করে। বর্তমানে অধিকাংশ গাছেই ফুল ফুটেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকালে সুর্যমুখির বাম্পার ফলনের আশা করছি। তিনি বলেন, এটি একটি খুবই লাভজনক ফসল। আশা করছি সূর্যমুখি থেকে অধিক লাভবান হবো। আমাকে দেখে এলাকার অনেক কৃষকরা সূর্যমূখী ফুল চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

একই গ্রামের কৃষক মাসুদ বলেন, নয়নের দেখাদেখি আমিও কিছু জমিতে সূর্যমুখি ফুলের চাষ করেছি। গাছে ভালোই ফুল ফুটেছে। তিনি বলেন, এটি শুধু একটি ফসলই নয় জমিতে এসে অনেক মানুষ বিনোদনও নিচ্ছে। আবার অনেকে পরিবার সদস্যদের নিয়ে সূর্যমুখি ফুলের জমিতে গিয়ে ছবি তুলে আনন্দ উপভোগ করছেন।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন, সূর্যমুখীর বীজ থেকে যে তেল উৎপন্ন হয় তা স্বাস্থ্যসম্মত ও মানসম্পন্ন। উপজেলায় এবার ৩৪ হেক্টর জমিতে সুর্যমুখি ফুলের চাষ করা হয়েছে। আমরা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের বীজ ও সার প্রণোদনা দিয়ে সূর্যমুখি ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ করছি ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এটি একটি অধিক লাভজনক ফসল। কৃষকরা ধানসহ অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এই সূর্যমুখি ফুলের চাষ করলে অধিক লাভবান হবেন বলে মনে করছেন তিনি।