হাঁপিয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীরা!

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৪:০৭:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুন ২০২১
  • / ২৩০ Time View

আবদুল হাই তুহিন:

করোনা ভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে (প্রায় ১৫ মাস) বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মন-মানসিকতায় এক ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সারাদিন-রাত বাসায় থেকে শিক্ষার্থীদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে পড়ছে। এলোমেলো চিন্তা ভর করছে তাদের মাথায়। একটুতেই মতের অমিল হলে তারা অস্বাভাবিক আচরণ করে বসছে। ভেঙ্গে পড়েছে শিক্ষাথীদের রুটিন ব্যবস্থাও।

সময় পার করতে শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট গেমসের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। স্মার্টফোনের প্রভাবে অনেক শিক্ষার্থী ব্লু ফিল্ম, টিকটক, লাইকিসহ নানা নিষিদ্ধ অ্যাপসের দিকে ঝুঁকছে। অনেক শিক্ষার্থী আবার জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাংয়ে, ইয়াবা, হেরোইন সহ নানা মরণ নেশায় জড়িয়ে পড়েছে কেউ কেউ।

কেবল তাই নয় লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইথ্যালামাইড (এলএসডি) মাদক ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সর্বত্র বিরাজ করছে উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ। এরই মধ্যে বাসায় বসেই কেটেছে শিক্ষার্থীদের ১টি শিক্ষাবর্ষ। আরেক শিক্ষাবর্ষের প্রায় অর্ধেক সময় অতিবাহিত হতে চলেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে তারও ইয়ত্তা নেই? কবে শেষ হবে এ মহামারি? এসব প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট কোন জবাব নেই কারোর কাছেই। যদিও শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চলতি মাসের ১৩ জুন খোলা হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আশার আলো দেখতে পারছে না।

এমতাবস্থায় হাপিয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে, সন্তানদের নিয়ে মহাটেনশনে দিনাতিপাত করছে অভিভাবকরাও।জানা যায়, দেশে প্রাথমিকে শিক্ষার্থী রয়েছে এক কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১০০ জন। আর মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী রয়েছে এক কোটি তিন লাখ ৪৯ হাজার ৩২৩ জন। এ ছাড়া প্রাক-প্রাথমিক ও ইবতেদায়িতে আরো প্রায় ৪৫ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীর সংখ্যা তিন কোটির ওপরে। অন্যদিকে সরকারি- বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আছে আট লাখের মতো শিক্ষার্থী। প্রায় ১৫ মাস ধরেই এসব শিক্ষার্থী আছেন পড়াশোনার বাইরে।শিক্ষা নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে দূরশিক্ষণে (সংসদ টিভি, অনলাইন, রেডিও ও মোবাইল ফোন) ৩১.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। অর্থাৎ ৬৯.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী কোনো ধরনের অনলাইন শিক্ষার আওতায় আসেনি। যেসব শিক্ষার্থী দূরশিক্ষণ প্রক্রিয়ার বাইরে রয়েছে তাদের মধ্যে ৫৭.৯ শতাংশ ডিভাইসের অভাবে অংশ নিতে পারছে না। আর গ্রামীণ এলাকায় এই হার ৬৮.৯ শতাংশ।


সংক্রমণ এড়াতে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এদিকে দফায় দফায় বাড়ানো হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সময়। অনলাইনে বা টেলিভিশনে বিকল্প শিক্ষাদানের চেষ্টা হলেও তাতে সাফল্য এসেছে খুব কমই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় কোনো ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি এ সময়ে। ফলে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত প্রতি ক্লাসে শিক্ষার্থীদের অটোপাস দিয়ে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ করা হয়। শুধু স্কুল-কলেজ নয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও একই দৃশ্যপট। সবকিছুকে ছাপিয়ে অন্ধকারের পর অন্ধকারে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। বড় আকারে লেগেছে সেশনজট। জীবন অনিশ্চয়তায় কয়েক লাখ চাকরিপ্রত্যাশী।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা, আড্ডা, গল্প সবই হতো রুটিন মাফিক অথচ করোনা তচনছ করে দিয়েছে তাদের একাডেমিক ক্যালেন্ডার। দীর্ঘ ১ বছর ৩ মাসেও হয়নি কোন ক্লাস ও পরীক্ষা।

জানতে চাইলে বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নেহাল করিম বিডি সমাচারকে বলেন, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়ালেখায় একটা অনীহা চলে এসেছে। তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ক্লাস ও পরীক্ষা না থাকায় তারা তাদের সহপাঠীদের সঙ্গে মিশতে পারছে না। ফলে তাদের মধ্যে একঘেয়েমি একটা ভাব চলে এসেছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত খেলার মাঠও নেই যেখানে তারা সময় কাটাবে। এমতাবস্থায় তারা মানসিক রোগী হয়ে যাচ্ছে দিনদিন। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের এ ভঙ্গুর অবস্থা থেকে ফিরিয়ে আনতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিকল্প নেই বলে মনে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের এই অধ্যাপক।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বিডি সমাচারকে বলেন, ‘চলমান সমস্যা বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বের। প্রত্যেক জাতিই নিজস্ব সুবিধা ও পদ্ধতি অনুযায়ী উত্তরণের কার্যক্রম চালাচ্ছে। আমরাও করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। দূরশিক্ষণ ও অনলাইন পদ্ধতিতে পাঠদান চলছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী ইফরাত জামান বিডি সমাচারকে বলেন, ‘মহামারি করোনা ভাইরাসের এই কঠিন সময়ে আবদ্ধ অবস্থায় দিন পার করছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। ফলে এলোমেলো চিন্তা ভর করছে তাদের মাথায়। সময় পার করতে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আসক্তি হয়ে যাচ্ছে এবং অনলাইনে গেমসে আটকে যাচ্ছে। একটুতে একটু হলেই তারা অস্বাভাবিক আচারণ করে বসছে।

তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বন্ধ এমনটা মানতে নারাজ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের উচিত তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া। কারণ তাদের সামনে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। কেবল পাস করার জন্যই লেখাপড়া নয়। তাদের অবশ্যই জ্ঞানার্জন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট ও নিষিদ্ধ অনেক গেমসে ঢু মারছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষার এ কর্তাব্যক্তি বলেন, অবশ্যই সন্তান কি করে না করে সেদিকে অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। নজরদারি বাড়াতে হবে। অন্যথায় সন্তান বিপথগামী হওয়ার শঙ্কা থাকবে।

গত ১৫ মাসে প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী মারামারি, খুন, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে বিগো লাইভ, টিকটক ও লাইকি নামের অ্যাপ বন্ধ বা নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সচিব, তথ্য মন্ত্রণালয় সচিব এবং বিটিআরসি’র চেয়ারম্যানকে এ নোটিশ পাঠানো হয়।

বিগো-লাইভ অ্যাপের মাধ্যমে তরুণ ও যুবকদের টার্গেট করে লাইভে এসে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব দিয়ে এবং যৌনতার ফাঁদে ফেলে কৌশলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। এই অ্যাপের ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে ভারত ও পাকিস্তান এই অ্যাপটি নিষিদ্ধ করেছে।

টিকটকের মাধ্যমে অনেক কিশোর-তরুণ উদ্ভট রঙে চুল রাঙিয়ে এবং ভিনদেশি অপসংস্কৃতি অনুসরণ করে ভিডিও তৈরি করছে, যাতে সহিংস ও কুরুচিপূর্ণ কনটেন্ট থাকে। উদ্বেগজনক যে এ টিকটক ভিডিওগুলোতে নেই কোনও শিক্ষণীয় বার্তা। উল্টো এসব ভিডিওর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তা চলে যাচ্ছে। বিব্রতকর, অনৈতিক ও পর্নোগ্রাফিকে উৎসাহিত করায় ইতোমধ্যে ভারত, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ায় এগুলোর ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।

দি আইডিয়াল একাডেমির ক্ষুদে শিক্ষার্থী ফারদিন শাহরিয়ার অর্ক বলেন, হাপিয়ে উঠেছি। অধৈর্য্য হয়ে যাচ্ছি। আর কতোদিন স্কুল বন্ধ থাকবো। আমরা স্কুলে যেতে চাই।

মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারহান শাহরিয়ার অপি বিডি সমাচারকে বলেন, বাসায় থাকতে আর কতো ভাল লাগে। গেমস খেলে সময় পার করি। বাইরে বেরুতে পারিনা। দীর্ঘদিন বন্ধু বান্ধবদের সাথে দেখা ও কথা হয়না। মনটা বিষাদে ভরে গেছে। আমরা অবিলম্বে ক্লাসে ফিরতে চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশীবিডি সমাচারকে বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয় লাইফের সেমিস্টারই শুরু হয়েছে অনলাইনে। ক্যাম্পাসের আমেজ কি তা এখনো আমার অজানা। তাই আমি চাই যতদ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয় খুলুক। সে তার ক্লাসের কার্যক্রম স্বশরীরে উপভোগ করতে চান।

ইডেন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জেরিন হাছান কান্তা বলেন, দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে যেতে পারিনা। বন্ধুবান্ধবদের সাথে দেখা হয়না। ভাল লাগে না। আমরা ক্যাম্পাসে যেতে চাই।

৪র্থ শ্রেণীতে পড়–য়া এক শিক্ষার্থীর মা বিডি সমাচারকে বলেন, এক বছর ধরে স্কুলে যেতে পারছে না তার মেয়ে। ফলে এই শিক্ষাবর্ষের অনেক কিছুর সাথে পরিচিত না হয়েই তাকে পরবর্তী ক্লাসে উঠতে হচ্ছে। স্কুলের যে একটা সার্বিক পরিবেশ। অনেকগুলো বাচ্চার সঙ্গে মেশা ও শেখা। এখন বাসায় পড়ানোর চেষ্টা করলেও দেখা যায় তার আগ্রহ নেই। পরীক্ষা হচ্ছে না অনেক দিন ধরে। পরীক্ষা কিভাবে হয় সেটাই আসলে তার মনে নেই। পড়ার যে আগ্রহ সেটা অনেকটাই কমে গেছে। এমনকি তার আচরণেও পরিবর্তন এসেছে। আমরা অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি জানাচ্ছি।

সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা বিডি সমাচারকে বলেন, সবকিছুই চলছে। কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে শিক্ষার্থীরা অনেক যোজন যোজন পিছিয়ে পড়বে। যা ভবিষ্যৎ জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে খুলে দিতে চাই। আমরা ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে আসতে হবে। অনুকূলে এলে আগামী ১৩ জুন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে না নামলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খুলে দেয়া উচিত হবে না। ঈদ যাত্রার কারণে সংক্রমণের হার আবারও কিছুটা ঊর্ধ্বগামী। প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে না এলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘সরকার যখনই স্কুলগুলো খোলার বিষয়ে চিন্তা শুরু করল, তখনই করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ এল। কাজেই আমাদের ছেলেমেয়েদের কথা চিন্তা করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খোলার সিদ্ধান্ত নেই।

বিশ্লেকরা বলছেন, করোনায় শিক্ষার ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এর প্রভাব দীর্ঘ মেয়াদি এবং সুদূরপ্রসারি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকরাও নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন। তাই সার্বিক শিক্ষা পুনরুদ্ধারে সুচিন্তিত পরিকল্পনা নেয়া দরকার বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

Please Share This Post in Your Social Media

হাঁপিয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীরা!

Update Time : ০৪:০৭:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুন ২০২১

আবদুল হাই তুহিন:

করোনা ভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে (প্রায় ১৫ মাস) বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মন-মানসিকতায় এক ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সারাদিন-রাত বাসায় থেকে শিক্ষার্থীদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে পড়ছে। এলোমেলো চিন্তা ভর করছে তাদের মাথায়। একটুতেই মতের অমিল হলে তারা অস্বাভাবিক আচরণ করে বসছে। ভেঙ্গে পড়েছে শিক্ষাথীদের রুটিন ব্যবস্থাও।

সময় পার করতে শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট গেমসের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। স্মার্টফোনের প্রভাবে অনেক শিক্ষার্থী ব্লু ফিল্ম, টিকটক, লাইকিসহ নানা নিষিদ্ধ অ্যাপসের দিকে ঝুঁকছে। অনেক শিক্ষার্থী আবার জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাংয়ে, ইয়াবা, হেরোইন সহ নানা মরণ নেশায় জড়িয়ে পড়েছে কেউ কেউ।

কেবল তাই নয় লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইথ্যালামাইড (এলএসডি) মাদক ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সর্বত্র বিরাজ করছে উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ। এরই মধ্যে বাসায় বসেই কেটেছে শিক্ষার্থীদের ১টি শিক্ষাবর্ষ। আরেক শিক্ষাবর্ষের প্রায় অর্ধেক সময় অতিবাহিত হতে চলেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে তারও ইয়ত্তা নেই? কবে শেষ হবে এ মহামারি? এসব প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট কোন জবাব নেই কারোর কাছেই। যদিও শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চলতি মাসের ১৩ জুন খোলা হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আশার আলো দেখতে পারছে না।

এমতাবস্থায় হাপিয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে, সন্তানদের নিয়ে মহাটেনশনে দিনাতিপাত করছে অভিভাবকরাও।জানা যায়, দেশে প্রাথমিকে শিক্ষার্থী রয়েছে এক কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১০০ জন। আর মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী রয়েছে এক কোটি তিন লাখ ৪৯ হাজার ৩২৩ জন। এ ছাড়া প্রাক-প্রাথমিক ও ইবতেদায়িতে আরো প্রায় ৪৫ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীর সংখ্যা তিন কোটির ওপরে। অন্যদিকে সরকারি- বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আছে আট লাখের মতো শিক্ষার্থী। প্রায় ১৫ মাস ধরেই এসব শিক্ষার্থী আছেন পড়াশোনার বাইরে।শিক্ষা নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে দূরশিক্ষণে (সংসদ টিভি, অনলাইন, রেডিও ও মোবাইল ফোন) ৩১.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। অর্থাৎ ৬৯.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী কোনো ধরনের অনলাইন শিক্ষার আওতায় আসেনি। যেসব শিক্ষার্থী দূরশিক্ষণ প্রক্রিয়ার বাইরে রয়েছে তাদের মধ্যে ৫৭.৯ শতাংশ ডিভাইসের অভাবে অংশ নিতে পারছে না। আর গ্রামীণ এলাকায় এই হার ৬৮.৯ শতাংশ।


সংক্রমণ এড়াতে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এদিকে দফায় দফায় বাড়ানো হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সময়। অনলাইনে বা টেলিভিশনে বিকল্প শিক্ষাদানের চেষ্টা হলেও তাতে সাফল্য এসেছে খুব কমই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় কোনো ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি এ সময়ে। ফলে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত প্রতি ক্লাসে শিক্ষার্থীদের অটোপাস দিয়ে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ করা হয়। শুধু স্কুল-কলেজ নয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও একই দৃশ্যপট। সবকিছুকে ছাপিয়ে অন্ধকারের পর অন্ধকারে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। বড় আকারে লেগেছে সেশনজট। জীবন অনিশ্চয়তায় কয়েক লাখ চাকরিপ্রত্যাশী।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা, আড্ডা, গল্প সবই হতো রুটিন মাফিক অথচ করোনা তচনছ করে দিয়েছে তাদের একাডেমিক ক্যালেন্ডার। দীর্ঘ ১ বছর ৩ মাসেও হয়নি কোন ক্লাস ও পরীক্ষা।

জানতে চাইলে বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নেহাল করিম বিডি সমাচারকে বলেন, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়ালেখায় একটা অনীহা চলে এসেছে। তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ক্লাস ও পরীক্ষা না থাকায় তারা তাদের সহপাঠীদের সঙ্গে মিশতে পারছে না। ফলে তাদের মধ্যে একঘেয়েমি একটা ভাব চলে এসেছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত খেলার মাঠও নেই যেখানে তারা সময় কাটাবে। এমতাবস্থায় তারা মানসিক রোগী হয়ে যাচ্ছে দিনদিন। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের এ ভঙ্গুর অবস্থা থেকে ফিরিয়ে আনতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিকল্প নেই বলে মনে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের এই অধ্যাপক।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বিডি সমাচারকে বলেন, ‘চলমান সমস্যা বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বের। প্রত্যেক জাতিই নিজস্ব সুবিধা ও পদ্ধতি অনুযায়ী উত্তরণের কার্যক্রম চালাচ্ছে। আমরাও করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। দূরশিক্ষণ ও অনলাইন পদ্ধতিতে পাঠদান চলছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী ইফরাত জামান বিডি সমাচারকে বলেন, ‘মহামারি করোনা ভাইরাসের এই কঠিন সময়ে আবদ্ধ অবস্থায় দিন পার করছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। ফলে এলোমেলো চিন্তা ভর করছে তাদের মাথায়। সময় পার করতে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আসক্তি হয়ে যাচ্ছে এবং অনলাইনে গেমসে আটকে যাচ্ছে। একটুতে একটু হলেই তারা অস্বাভাবিক আচারণ করে বসছে।

তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বন্ধ এমনটা মানতে নারাজ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের উচিত তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া। কারণ তাদের সামনে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। কেবল পাস করার জন্যই লেখাপড়া নয়। তাদের অবশ্যই জ্ঞানার্জন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট ও নিষিদ্ধ অনেক গেমসে ঢু মারছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষার এ কর্তাব্যক্তি বলেন, অবশ্যই সন্তান কি করে না করে সেদিকে অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। নজরদারি বাড়াতে হবে। অন্যথায় সন্তান বিপথগামী হওয়ার শঙ্কা থাকবে।

গত ১৫ মাসে প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী মারামারি, খুন, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে বিগো লাইভ, টিকটক ও লাইকি নামের অ্যাপ বন্ধ বা নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সচিব, তথ্য মন্ত্রণালয় সচিব এবং বিটিআরসি’র চেয়ারম্যানকে এ নোটিশ পাঠানো হয়।

বিগো-লাইভ অ্যাপের মাধ্যমে তরুণ ও যুবকদের টার্গেট করে লাইভে এসে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব দিয়ে এবং যৌনতার ফাঁদে ফেলে কৌশলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। এই অ্যাপের ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে ভারত ও পাকিস্তান এই অ্যাপটি নিষিদ্ধ করেছে।

টিকটকের মাধ্যমে অনেক কিশোর-তরুণ উদ্ভট রঙে চুল রাঙিয়ে এবং ভিনদেশি অপসংস্কৃতি অনুসরণ করে ভিডিও তৈরি করছে, যাতে সহিংস ও কুরুচিপূর্ণ কনটেন্ট থাকে। উদ্বেগজনক যে এ টিকটক ভিডিওগুলোতে নেই কোনও শিক্ষণীয় বার্তা। উল্টো এসব ভিডিওর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তা চলে যাচ্ছে। বিব্রতকর, অনৈতিক ও পর্নোগ্রাফিকে উৎসাহিত করায় ইতোমধ্যে ভারত, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ায় এগুলোর ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।

দি আইডিয়াল একাডেমির ক্ষুদে শিক্ষার্থী ফারদিন শাহরিয়ার অর্ক বলেন, হাপিয়ে উঠেছি। অধৈর্য্য হয়ে যাচ্ছি। আর কতোদিন স্কুল বন্ধ থাকবো। আমরা স্কুলে যেতে চাই।

মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারহান শাহরিয়ার অপি বিডি সমাচারকে বলেন, বাসায় থাকতে আর কতো ভাল লাগে। গেমস খেলে সময় পার করি। বাইরে বেরুতে পারিনা। দীর্ঘদিন বন্ধু বান্ধবদের সাথে দেখা ও কথা হয়না। মনটা বিষাদে ভরে গেছে। আমরা অবিলম্বে ক্লাসে ফিরতে চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশীবিডি সমাচারকে বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয় লাইফের সেমিস্টারই শুরু হয়েছে অনলাইনে। ক্যাম্পাসের আমেজ কি তা এখনো আমার অজানা। তাই আমি চাই যতদ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয় খুলুক। সে তার ক্লাসের কার্যক্রম স্বশরীরে উপভোগ করতে চান।

ইডেন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জেরিন হাছান কান্তা বলেন, দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে যেতে পারিনা। বন্ধুবান্ধবদের সাথে দেখা হয়না। ভাল লাগে না। আমরা ক্যাম্পাসে যেতে চাই।

৪র্থ শ্রেণীতে পড়–য়া এক শিক্ষার্থীর মা বিডি সমাচারকে বলেন, এক বছর ধরে স্কুলে যেতে পারছে না তার মেয়ে। ফলে এই শিক্ষাবর্ষের অনেক কিছুর সাথে পরিচিত না হয়েই তাকে পরবর্তী ক্লাসে উঠতে হচ্ছে। স্কুলের যে একটা সার্বিক পরিবেশ। অনেকগুলো বাচ্চার সঙ্গে মেশা ও শেখা। এখন বাসায় পড়ানোর চেষ্টা করলেও দেখা যায় তার আগ্রহ নেই। পরীক্ষা হচ্ছে না অনেক দিন ধরে। পরীক্ষা কিভাবে হয় সেটাই আসলে তার মনে নেই। পড়ার যে আগ্রহ সেটা অনেকটাই কমে গেছে। এমনকি তার আচরণেও পরিবর্তন এসেছে। আমরা অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি জানাচ্ছি।

সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা বিডি সমাচারকে বলেন, সবকিছুই চলছে। কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে শিক্ষার্থীরা অনেক যোজন যোজন পিছিয়ে পড়বে। যা ভবিষ্যৎ জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে খুলে দিতে চাই। আমরা ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে আসতে হবে। অনুকূলে এলে আগামী ১৩ জুন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে না নামলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খুলে দেয়া উচিত হবে না। ঈদ যাত্রার কারণে সংক্রমণের হার আবারও কিছুটা ঊর্ধ্বগামী। প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে না এলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘সরকার যখনই স্কুলগুলো খোলার বিষয়ে চিন্তা শুরু করল, তখনই করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ এল। কাজেই আমাদের ছেলেমেয়েদের কথা চিন্তা করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খোলার সিদ্ধান্ত নেই।

বিশ্লেকরা বলছেন, করোনায় শিক্ষার ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এর প্রভাব দীর্ঘ মেয়াদি এবং সুদূরপ্রসারি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকরাও নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন। তাই সার্বিক শিক্ষা পুনরুদ্ধারে সুচিন্তিত পরিকল্পনা নেয়া দরকার বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।