স্কাউটিং হোক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:৪৬:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর ২০২০
  • / ২২২ Time View
রাহিমা আক্তার রিয়া:
.
মানুষ সামাজিক জীব।মানুষের জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা এবং ভালো থাকার সবচেয়ে নিরাপদ স্থান হলো সমাজ।কিন্তু সেই সমাজটা যদি হয় অজ্ঞতা,কুসংস্কারাচ্ছন্ন,কর্মবিমুখতাm ও জড়া-জীর্ণতায় পরিপূর্ণ তবে তা কখনোই মানুষকে ভালো রাখতে পারেনা বরং একটা সময় তা মানুষের জীবনকে বিষিয়ে তোলে।
.
এমতাবস্থায়,স্কাউটিং হোক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার।একজন স্কাউট সমাজ উন্নয়নের কাজে স্ব-শরীরে অংশগ্রহণ করার পূর্বে তাকে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক দ্বারা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত প্রশিক্ষণ নিতে হয় এবং প্রশিক্ষণ শেষে স্কাউটের সদস্য পদ লাভ করার জন্য একটি ভাব-গাম্ভীর্য পূর্ণ পরিবেশে আনুষ্ঠানিকভাবে বয়স্ক ও অভিজ্ঞ নেতাদের সাহায্যে স্কাউট পতাকা স্পর্শ করে প্রতিজ্ঞা পাঠ এবং দীক্ষা গ্রহণ করতে হয়।
.
স্কাউট প্রতিজ্ঞার তিনটি অংশ একজন স্কাউটকে তার সৃষ্টিকর্তার প্রতি,দেশের প্রতি এবং মানুষের প্রতি যে কর্তব্য তা পালনে সৎ ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।এছাড়াও স্কাউটিংয়ে রয়েছে সাতটি আইন,যা সংক্ষিপ্ত ভাবে :”বিশ্বাসী,বন্ধু,বিনয়ী,সদয়,প্রফুল্ল,মিতব্যয়ী, নির্মল রয়!” এই অনুসৃত আইনসমূহ একজন স্কাউটকে ভালো মানুষ হিসেবে তৈরি করতে এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে অসামান্য ভূমিকা রাখে।
.
স্কাউট প্রতিষ্ঠাতা স্যার রবার্ট স্টিফেনশন স্মীথ লর্ড ব্যাডেন পাওয়েল বলেছিলেন,”পৃথিবীকে যতোটা সুন্দর করে পেয়েছো,তার চেয়ে আরো বেশি সুন্দর করে রেখে যাওয়ার চেষ্টা করো”। তাঁর উক্তির যথার্থতা বিবেচনা করে স্কাউটিং হয়ে ওঠে বিশ্বব্যাপী একটি অরাজনৈতিক আন্দোলন,যার অন্তর্নিহিত লক্ষ্য হলো “একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলা”।এরই ধারাবাহিকতায় স্কাউটরা সমাজের তৃণমূল পর্যায় পৌছে গিয়ে মানুষের সমস্যার প্রধান অন্তরায় সমূহকে খুঁজে বের করে এবং সাধ্যেমতো মানুষকে সাহায্য করে।
.
সমাজ থেকে সামাজিক ব্যাধি,কুপ্রথা,কুসংস্কার ও অজ্ঞতার শেকড়কে উপড়ে ফেলতে স্কাউটরা বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক শোভাযাত্রা, সেমিনার এবং সভার আয়োজন করে থাকে।এছাড়াও সমাজ উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন বৃক্ষরোপন অভিযান,পরিবেশ সংরক্ষণমূলক কর্মসূচি,টীকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে থাকে।বিভিন্ন আকস্মিক দূর্ঘটনা ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় এবং দূর্যোগ পরবর্তীকালীন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে স্কাউটদের রয়েছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
.
তথাপি,সমাজের তরুণ প্রজন্মকে মাদকাসক্তির ভয়ানক গ্রাস থেকে রক্ষা করতে বিভিন্ন শিক্ষামূলক চিত্তবিনোদনের মাধ্যমে একটি সুস্থ,সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে স্কাউটিং হলো অন্যতম প্ল্যাটফর্ম! সর্বোপরি, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে আদর্শ ও নৈতিকতার ছাঁচে ফেলে তাদেরকে কর্মদ্যোমী,সৃজনশীল ও কর্তব্যপরায়ণ সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে সমাজের টেকসই উন্নয়নমুখী পরিবর্তনে স্কাউটিং হোক অন্যতম প্রধান হাতিয়ার!!! পৃথিবী হোক শান্তি ও সমৃদ্ধিময়!!!
.
লেখক: স্কাউট ইউনিট লিডার, সামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজ স্কাউট গ্রুপ, ডেমরা,ঢাকা।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

স্কাউটিং হোক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার

Update Time : ১১:৪৬:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর ২০২০
রাহিমা আক্তার রিয়া:
.
মানুষ সামাজিক জীব।মানুষের জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা এবং ভালো থাকার সবচেয়ে নিরাপদ স্থান হলো সমাজ।কিন্তু সেই সমাজটা যদি হয় অজ্ঞতা,কুসংস্কারাচ্ছন্ন,কর্মবিমুখতাm ও জড়া-জীর্ণতায় পরিপূর্ণ তবে তা কখনোই মানুষকে ভালো রাখতে পারেনা বরং একটা সময় তা মানুষের জীবনকে বিষিয়ে তোলে।
.
এমতাবস্থায়,স্কাউটিং হোক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার।একজন স্কাউট সমাজ উন্নয়নের কাজে স্ব-শরীরে অংশগ্রহণ করার পূর্বে তাকে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক দ্বারা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত প্রশিক্ষণ নিতে হয় এবং প্রশিক্ষণ শেষে স্কাউটের সদস্য পদ লাভ করার জন্য একটি ভাব-গাম্ভীর্য পূর্ণ পরিবেশে আনুষ্ঠানিকভাবে বয়স্ক ও অভিজ্ঞ নেতাদের সাহায্যে স্কাউট পতাকা স্পর্শ করে প্রতিজ্ঞা পাঠ এবং দীক্ষা গ্রহণ করতে হয়।
.
স্কাউট প্রতিজ্ঞার তিনটি অংশ একজন স্কাউটকে তার সৃষ্টিকর্তার প্রতি,দেশের প্রতি এবং মানুষের প্রতি যে কর্তব্য তা পালনে সৎ ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।এছাড়াও স্কাউটিংয়ে রয়েছে সাতটি আইন,যা সংক্ষিপ্ত ভাবে :”বিশ্বাসী,বন্ধু,বিনয়ী,সদয়,প্রফুল্ল,মিতব্যয়ী, নির্মল রয়!” এই অনুসৃত আইনসমূহ একজন স্কাউটকে ভালো মানুষ হিসেবে তৈরি করতে এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে অসামান্য ভূমিকা রাখে।
.
স্কাউট প্রতিষ্ঠাতা স্যার রবার্ট স্টিফেনশন স্মীথ লর্ড ব্যাডেন পাওয়েল বলেছিলেন,”পৃথিবীকে যতোটা সুন্দর করে পেয়েছো,তার চেয়ে আরো বেশি সুন্দর করে রেখে যাওয়ার চেষ্টা করো”। তাঁর উক্তির যথার্থতা বিবেচনা করে স্কাউটিং হয়ে ওঠে বিশ্বব্যাপী একটি অরাজনৈতিক আন্দোলন,যার অন্তর্নিহিত লক্ষ্য হলো “একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলা”।এরই ধারাবাহিকতায় স্কাউটরা সমাজের তৃণমূল পর্যায় পৌছে গিয়ে মানুষের সমস্যার প্রধান অন্তরায় সমূহকে খুঁজে বের করে এবং সাধ্যেমতো মানুষকে সাহায্য করে।
.
সমাজ থেকে সামাজিক ব্যাধি,কুপ্রথা,কুসংস্কার ও অজ্ঞতার শেকড়কে উপড়ে ফেলতে স্কাউটরা বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক শোভাযাত্রা, সেমিনার এবং সভার আয়োজন করে থাকে।এছাড়াও সমাজ উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন বৃক্ষরোপন অভিযান,পরিবেশ সংরক্ষণমূলক কর্মসূচি,টীকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে থাকে।বিভিন্ন আকস্মিক দূর্ঘটনা ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় এবং দূর্যোগ পরবর্তীকালীন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে স্কাউটদের রয়েছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
.
তথাপি,সমাজের তরুণ প্রজন্মকে মাদকাসক্তির ভয়ানক গ্রাস থেকে রক্ষা করতে বিভিন্ন শিক্ষামূলক চিত্তবিনোদনের মাধ্যমে একটি সুস্থ,সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে স্কাউটিং হলো অন্যতম প্ল্যাটফর্ম! সর্বোপরি, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে আদর্শ ও নৈতিকতার ছাঁচে ফেলে তাদেরকে কর্মদ্যোমী,সৃজনশীল ও কর্তব্যপরায়ণ সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে সমাজের টেকসই উন্নয়নমুখী পরিবর্তনে স্কাউটিং হোক অন্যতম প্রধান হাতিয়ার!!! পৃথিবী হোক শান্তি ও সমৃদ্ধিময়!!!
.
লেখক: স্কাউট ইউনিট লিডার, সামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজ স্কাউট গ্রুপ, ডেমরা,ঢাকা।