স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে ছাত্রলীগের বিশাল জনসমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৫:৫২:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ মে ২০২৪
  • / ৩৮ Time View

জাননাহ, ঢাবি প্রতিবেদক

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে
ও ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। 

সোমবার (৬ মে) সকালে মধুর ক্যানটিনের সামনে থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি পদযাত্রা শুরু করে ছাত্রলীগ । পদযাত্রাটি ভিসি চত্বর-ফুলার রোড-কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে দুপুর ১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে পৌঁছায়। সেখানে পতাকা উত্তোলন, পদযাত্রা ও বিক্ষোভ সমাবেশের শুরুতে বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, ঢাবির বিভিন্ন হল শাখা ও রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে নেতাকর্মীরা ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন, স্টপ জেনোসাইড, স্বৈরাচার নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তি পাক, উই ওয়ান্ট জাস্টিস, জয় জয় ফিলিস্তিন, ফ্রম দ্যা রিভার টু দ্যা সী, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা দেখেছি যারা গণতন্ত্রের মোড়ল, বাকস্বাধীনতার সার্টিফিকেট দেয়, যারা বলে দেয় কোন দেশটি গণতান্ত্রিক আর কোন দেশটি অগণতান্ত্রিক, তাদের মুখোশ কীভাবে উন্মোচিত হয়ে গেছে। আমরা দেখেছি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন আন্দোলন চলমান, সেখানে আড়াই হাজারের অধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আন্দোলন করার জন্য শিক্ষার্থীদের ওপর বহিষ্কারাদেশ নেমে এসেছে। শুধু স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলার কারণে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মায়মুনাকে বহিষ্কারের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে গিয়ে শিক্ষকের পাঁজরের হাড় ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর যারা নিপীড়ন চালায়, আমরা তাদের ধিক্কার জানাই।

সাদ্দাম হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবচেয়ে বেশি জানে গণহত্যার বেদনা কত বেশি। ছাত্রসংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি অন্যতম সংগঠন যেটি সবচেয় বেশি গণহত্যার শিকার হয়েছে। আমরা সেই অতীত অভিজ্ঞতা থেকে জানি এই যুদ্ধের বেদনা কত তীব্র। আমরা জানি, স্বাধীনতার জন্য মানুষের আকাঙ্ক্ষা কত বেশি শক্তিশালী। সে কারণে আমরা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দাবিতে দেশে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম।

সাদ্দাম আরও বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি। আমরা মনে করি, ফিলিস্তিনে যারা গণহত্যা চালাচ্ছে, নারী ও শিশুদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে তারাও একই যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত। তারাও মানবতাবিরোধী অপরাধে সম্পৃক্ত। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তাদের অভিযুক্ত করে এই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

এ সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, আজ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যে বাঁধভাঙা গণজোয়ার, তা সেই গাজা উপত্যকায় গিয়ে লাগবে এবং গাজা উপত্যকা থেকে সব অন্যায়, অবিচার, অপশাসন ভেসে যাবে। শেখ মুজিবুর রহমান দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছিলেন, বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত- শোষক আর শোষিত; আমি শোষিতের পক্ষে। তার হাতে গড়া সংগঠন আমরাও জানিয়ে দিতে চাই সারাবিশ্বের শোষিত, নিপীড়িত মানুষের পক্ষে থাকবো, অত্যাচারিত মানুষের পক্ষে থাকবো।

শেখ ইনান বলেন, শেখ হাসিনা অন্যায়-অবিচার, গণহত্যার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। বিশ্বের মোড়লদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, যা সত্যিই অনেক সাহসিকতার বিষয়। সারাবিশ্বে শান্তি ফেরাতে শেখ হাসিনার যে মডেল সেটিকে গ্রহণ করার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আমাদের আজকের এই বাঁধভাঙা জোয়ার থেকে আহ্বান জানাচ্ছি।

সমাবেশে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ইসহাক আহমেদ চলমান আন্দোলনে ছাত্রসমাজের সংহতি প্রকাশ এবং ফিলিস্তিনের পাশে থাকার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানান।

পরে ছাত্রলীগ সভাপতি শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে ‘শান্তির জন্য স্মারকলিপি’ শীর্ষক একটি লিখিত বার্তা পাঠ করেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে ছাত্রলীগের বিশাল জনসমাবেশ

Update Time : ০৫:৫২:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ মে ২০২৪

জাননাহ, ঢাবি প্রতিবেদক

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে
ও ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। 

সোমবার (৬ মে) সকালে মধুর ক্যানটিনের সামনে থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি পদযাত্রা শুরু করে ছাত্রলীগ । পদযাত্রাটি ভিসি চত্বর-ফুলার রোড-কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে দুপুর ১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে পৌঁছায়। সেখানে পতাকা উত্তোলন, পদযাত্রা ও বিক্ষোভ সমাবেশের শুরুতে বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, ঢাবির বিভিন্ন হল শাখা ও রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে নেতাকর্মীরা ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন, স্টপ জেনোসাইড, স্বৈরাচার নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তি পাক, উই ওয়ান্ট জাস্টিস, জয় জয় ফিলিস্তিন, ফ্রম দ্যা রিভার টু দ্যা সী, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা দেখেছি যারা গণতন্ত্রের মোড়ল, বাকস্বাধীনতার সার্টিফিকেট দেয়, যারা বলে দেয় কোন দেশটি গণতান্ত্রিক আর কোন দেশটি অগণতান্ত্রিক, তাদের মুখোশ কীভাবে উন্মোচিত হয়ে গেছে। আমরা দেখেছি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন আন্দোলন চলমান, সেখানে আড়াই হাজারের অধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আন্দোলন করার জন্য শিক্ষার্থীদের ওপর বহিষ্কারাদেশ নেমে এসেছে। শুধু স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলার কারণে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মায়মুনাকে বহিষ্কারের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে গিয়ে শিক্ষকের পাঁজরের হাড় ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর যারা নিপীড়ন চালায়, আমরা তাদের ধিক্কার জানাই।

সাদ্দাম হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবচেয়ে বেশি জানে গণহত্যার বেদনা কত বেশি। ছাত্রসংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি অন্যতম সংগঠন যেটি সবচেয় বেশি গণহত্যার শিকার হয়েছে। আমরা সেই অতীত অভিজ্ঞতা থেকে জানি এই যুদ্ধের বেদনা কত তীব্র। আমরা জানি, স্বাধীনতার জন্য মানুষের আকাঙ্ক্ষা কত বেশি শক্তিশালী। সে কারণে আমরা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দাবিতে দেশে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম।

সাদ্দাম আরও বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি। আমরা মনে করি, ফিলিস্তিনে যারা গণহত্যা চালাচ্ছে, নারী ও শিশুদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে তারাও একই যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত। তারাও মানবতাবিরোধী অপরাধে সম্পৃক্ত। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তাদের অভিযুক্ত করে এই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

এ সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, আজ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যে বাঁধভাঙা গণজোয়ার, তা সেই গাজা উপত্যকায় গিয়ে লাগবে এবং গাজা উপত্যকা থেকে সব অন্যায়, অবিচার, অপশাসন ভেসে যাবে। শেখ মুজিবুর রহমান দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছিলেন, বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত- শোষক আর শোষিত; আমি শোষিতের পক্ষে। তার হাতে গড়া সংগঠন আমরাও জানিয়ে দিতে চাই সারাবিশ্বের শোষিত, নিপীড়িত মানুষের পক্ষে থাকবো, অত্যাচারিত মানুষের পক্ষে থাকবো।

শেখ ইনান বলেন, শেখ হাসিনা অন্যায়-অবিচার, গণহত্যার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। বিশ্বের মোড়লদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, যা সত্যিই অনেক সাহসিকতার বিষয়। সারাবিশ্বে শান্তি ফেরাতে শেখ হাসিনার যে মডেল সেটিকে গ্রহণ করার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আমাদের আজকের এই বাঁধভাঙা জোয়ার থেকে আহ্বান জানাচ্ছি।

সমাবেশে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ইসহাক আহমেদ চলমান আন্দোলনে ছাত্রসমাজের সংহতি প্রকাশ এবং ফিলিস্তিনের পাশে থাকার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানান।

পরে ছাত্রলীগ সভাপতি শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে ‘শান্তির জন্য স্মারকলিপি’ শীর্ষক একটি লিখিত বার্তা পাঠ করেন।