চাঁদপুরে বাপের বাড়ি এসে ৫ দিন পর প্রবাসীর স্ত্রী সন্তানসহ নিখোঁজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৯:১৬:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ১৫৮ Time View

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় প্রবাসীর স্ত্রী সুরবি (২৩) স্বামীর বাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে গিয়ে ৫ দিন পর নিখোঁজ। এ বিষয়ে মেয়ের বাবা নাজিম হোসেন কালু মিয়া থানায় নিখোঁজ জিডি করেন।

এলাকাতে গুঞ্জন শুনা যায়, মেয়ের পরিবারের লোকজনের যোগসাজসে প্রবাসীর স্ত্রী সুরবিকে পালাতে সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। ছেলের পক্ষের দাবি, ঘর থেকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায় সুরবি। দীর্ঘদিন ধরেই সুরবীর পরকিয়ায় ছিলো। এই নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

ঘটনার সূত্রে জানা যায়, গত ১২ আগষ্ট বৃহস্পতিবার উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদিরামপুর গ্রামের আমিন বেপারী স্ত্রী সুরবি সে তার ৬ বছরের মেয়ে সর্ণাকে নিয়ে বাপের বাড়ি উপজেলার ৮নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের মানিকরাজ গ্রামে যায়। সেখানে তার বাবা কালু মিয়াকে গিয়ে বলে, তার শাশুরী তাকে খারাপ কথা বলেছে তাই সে চলে আসছে। কালুমিয়া মেয়ের কথা শুনে সুরবির শুশুর বাড়ির গণ্যমান্য ব্যক্তি আঃ লতিফকে অবগত করলে তিনি কালুমিয়া কে তার মেয়ে সুরবিকে নিয়ে আসার কথা বলে। বিকালে কালুমিয়া, সুরবির ও আমিরের মার কথা শুনে তাদেরকে মিমাংসা করে দেয়। মেয়ের বাবা কালুমিয়া মেয়েকে কয়েকদিন পর দিয়ে দিবে বলে বাড়ি নিয়ে যায়। গত ১৭ আগষ্ট মঙ্গলবার বিকেলে সুরবি স্বামীর বাড়ি যাবে বলে তার ৬ বছরের শিশু কন্যা সর্নাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। সুরবির সাথে তার খালা রানী বেগম স্বামীর বাড়ি চাঁদপুর সদর ইউনিয়নের পাইকদি গ্রামের যাবে বলে এক সাথে বের হয়। পথে কালুমিয়া মেয়ের জন্য অটোরিক্সা ভাড়া করে দেয়। পতিপথে সুরবির খালা ওয়াবদার ব্রীজ এর কাছে রাস্তায় নেমে যায়। সুরবি অটোনিয়ে স্বামীর বাড়ির উদ্দ্যেশে রওনা দেয়। কিন্তু সুরবি তার স্বামীর বাড়িতে না গিয়ে কোথায় যেন চলে যায়। কালু মিয়া ১৯ আগষ্ট বৃহস্পতিবার বিকেলে ছেলের বাবা আঃ মান্নান বেপারীকে ফোন করে বলে সুরবিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। এ বিষয়ে সুরবির বাবা কালুমিয়া ১৮ই আগষ্ট থানায় নিখোঁজ একটি জিডি দায়ের করেন।

দুই এলাকার স্থানীয় লোকজন বলেন, সুরবি একজন রাগি মহিলা তাকে একাদিক বার তাদের উভয় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন কারনে তাকে ডাক দিয়েছে। তার চলাফেরা ভালো ছিলোনা। সে ১০ রুমের দুই তালা বিল্ডিংয়ে একাই থাকতো। তার শুশুর ও শাশুরী আমিনের বড় ভাইয়ে সাথে থাকতো অন্য বাড়ীতে।

মেয়ের বাবা কালু মিয়া বলেন, আমার মেয়ে সুরবিকে বাড়ি থেকে তার স্বামীর বাড়িতে যাবে বলে তাকে আমি অটোরিক্সা ঠিক করে দেই। পরে তার সাথে যোগাযোগ করা চেষ্টা করি কিন্তু কোন যোগাযোগ করতে না পেরে থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রি করি।

ছেলের বাড়ির আঃ লতিফ বলেন, বাড়িতে ছোট কোন ঘটনা হলে সবাই আমার কাছে আসে আমি চেষ্টা করি মিমাংসা করে দেওয়ার। সুরবির বাবা কালু মিয়া আমাকে ফোন করেছিলো। তার মেয়ের বিষয়ে আমি উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম। আমিনের মা নামাজ ও কোরাআন তেলোয়াত করবে বলে এক রুম চাই ছিলো কিন্তু সুরবি রাজি ছিলোনা। এই নিয়ে উভয়ের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়েছে। আমি বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছি। পরে মেয়ের বাবা কালু মিয়া মেয়েকে কয়েক দিনের জন্য তার বাড়িতে রাখবে বলে নিয়ে যায়। পরে শুনি মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে।

ছেলের বাবা আঃ মান্নান বলেন, সুরবি এই বাড়িতে একা থাকে, আমরা বড় ছেলের সাথে থাকি। প্রতি মাসে ১৫দিন এই বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করে আমরা বড় ছেলের বাড়িতে ঘুমাই। বাকি ১৫দিন বড় ছেলের ঘরে থাকি এবং খাওয়া দাওয়া করি। আমার স্ত্রী নিরিবিলি নামাজ ও কোরআন তেলোয়াত করার জন্য একটি রুম চাইলো সে দিলোনা। পরে সে বাপের বাড়ি চলে গেছে আর তো আসলো না।

ফরিদগঞ্জ থানা অফিসার ইনর্চাজ শহিদ হোসেন বলেন, নিখোঁজ ডায়রি করা হয়েছে। তদন্তকারী অফিসার তদন্ত করছে উদ্ধার হওয়ার পরে বুজা যাবে কি হয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

চাঁদপুরে বাপের বাড়ি এসে ৫ দিন পর প্রবাসীর স্ত্রী সন্তানসহ নিখোঁজ

Update Time : ০৯:১৬:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় প্রবাসীর স্ত্রী সুরবি (২৩) স্বামীর বাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে গিয়ে ৫ দিন পর নিখোঁজ। এ বিষয়ে মেয়ের বাবা নাজিম হোসেন কালু মিয়া থানায় নিখোঁজ জিডি করেন।

এলাকাতে গুঞ্জন শুনা যায়, মেয়ের পরিবারের লোকজনের যোগসাজসে প্রবাসীর স্ত্রী সুরবিকে পালাতে সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। ছেলের পক্ষের দাবি, ঘর থেকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায় সুরবি। দীর্ঘদিন ধরেই সুরবীর পরকিয়ায় ছিলো। এই নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

ঘটনার সূত্রে জানা যায়, গত ১২ আগষ্ট বৃহস্পতিবার উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদিরামপুর গ্রামের আমিন বেপারী স্ত্রী সুরবি সে তার ৬ বছরের মেয়ে সর্ণাকে নিয়ে বাপের বাড়ি উপজেলার ৮নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের মানিকরাজ গ্রামে যায়। সেখানে তার বাবা কালু মিয়াকে গিয়ে বলে, তার শাশুরী তাকে খারাপ কথা বলেছে তাই সে চলে আসছে। কালুমিয়া মেয়ের কথা শুনে সুরবির শুশুর বাড়ির গণ্যমান্য ব্যক্তি আঃ লতিফকে অবগত করলে তিনি কালুমিয়া কে তার মেয়ে সুরবিকে নিয়ে আসার কথা বলে। বিকালে কালুমিয়া, সুরবির ও আমিরের মার কথা শুনে তাদেরকে মিমাংসা করে দেয়। মেয়ের বাবা কালুমিয়া মেয়েকে কয়েকদিন পর দিয়ে দিবে বলে বাড়ি নিয়ে যায়। গত ১৭ আগষ্ট মঙ্গলবার বিকেলে সুরবি স্বামীর বাড়ি যাবে বলে তার ৬ বছরের শিশু কন্যা সর্নাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। সুরবির সাথে তার খালা রানী বেগম স্বামীর বাড়ি চাঁদপুর সদর ইউনিয়নের পাইকদি গ্রামের যাবে বলে এক সাথে বের হয়। পথে কালুমিয়া মেয়ের জন্য অটোরিক্সা ভাড়া করে দেয়। পতিপথে সুরবির খালা ওয়াবদার ব্রীজ এর কাছে রাস্তায় নেমে যায়। সুরবি অটোনিয়ে স্বামীর বাড়ির উদ্দ্যেশে রওনা দেয়। কিন্তু সুরবি তার স্বামীর বাড়িতে না গিয়ে কোথায় যেন চলে যায়। কালু মিয়া ১৯ আগষ্ট বৃহস্পতিবার বিকেলে ছেলের বাবা আঃ মান্নান বেপারীকে ফোন করে বলে সুরবিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। এ বিষয়ে সুরবির বাবা কালুমিয়া ১৮ই আগষ্ট থানায় নিখোঁজ একটি জিডি দায়ের করেন।

দুই এলাকার স্থানীয় লোকজন বলেন, সুরবি একজন রাগি মহিলা তাকে একাদিক বার তাদের উভয় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন কারনে তাকে ডাক দিয়েছে। তার চলাফেরা ভালো ছিলোনা। সে ১০ রুমের দুই তালা বিল্ডিংয়ে একাই থাকতো। তার শুশুর ও শাশুরী আমিনের বড় ভাইয়ে সাথে থাকতো অন্য বাড়ীতে।

মেয়ের বাবা কালু মিয়া বলেন, আমার মেয়ে সুরবিকে বাড়ি থেকে তার স্বামীর বাড়িতে যাবে বলে তাকে আমি অটোরিক্সা ঠিক করে দেই। পরে তার সাথে যোগাযোগ করা চেষ্টা করি কিন্তু কোন যোগাযোগ করতে না পেরে থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রি করি।

ছেলের বাড়ির আঃ লতিফ বলেন, বাড়িতে ছোট কোন ঘটনা হলে সবাই আমার কাছে আসে আমি চেষ্টা করি মিমাংসা করে দেওয়ার। সুরবির বাবা কালু মিয়া আমাকে ফোন করেছিলো। তার মেয়ের বিষয়ে আমি উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম। আমিনের মা নামাজ ও কোরাআন তেলোয়াত করবে বলে এক রুম চাই ছিলো কিন্তু সুরবি রাজি ছিলোনা। এই নিয়ে উভয়ের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়েছে। আমি বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছি। পরে মেয়ের বাবা কালু মিয়া মেয়েকে কয়েক দিনের জন্য তার বাড়িতে রাখবে বলে নিয়ে যায়। পরে শুনি মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে।

ছেলের বাবা আঃ মান্নান বলেন, সুরবি এই বাড়িতে একা থাকে, আমরা বড় ছেলের সাথে থাকি। প্রতি মাসে ১৫দিন এই বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করে আমরা বড় ছেলের বাড়িতে ঘুমাই। বাকি ১৫দিন বড় ছেলের ঘরে থাকি এবং খাওয়া দাওয়া করি। আমার স্ত্রী নিরিবিলি নামাজ ও কোরআন তেলোয়াত করার জন্য একটি রুম চাইলো সে দিলোনা। পরে সে বাপের বাড়ি চলে গেছে আর তো আসলো না।

ফরিদগঞ্জ থানা অফিসার ইনর্চাজ শহিদ হোসেন বলেন, নিখোঁজ ডায়রি করা হয়েছে। তদন্তকারী অফিসার তদন্ত করছে উদ্ধার হওয়ার পরে বুজা যাবে কি হয়েছে।