মতলবে মেঘনা-ধনাগোদা নদীর উপর হচ্ছে ঝুলন্ত সেতু

  • Update Time : ১০:৩৫:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / 153

আল-আমিন ভূঁইয়া( মতলব প্রতিনিধি):

বাংলাদেশে চার লেন বিশিষ্ট প্রথমবারের মতো ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ হতে যাচ্ছে চাঁদপুরের মতলবে। এতে করে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়কপথে চাঁদপুরের সঙ্গে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে। মেঘনা ও ধনাগোদা নদীর ওপর এই সেতু নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে গত ৭ সেপ্টেম্বর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে আলোচ্য প্রকল্পটির প্রস্তাব তুলে ধরেন সেতু বিভাগের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) রহিমা আক্তার। জানা যায়, ভারতের রাজিব গান্ধী সমুদ্র সেতু, চীনের সুটং ইয়াংজি নদী সেতু, ফ্রান্সের মিলাউ ভায়াডাক্ট, কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো-ওকল্যান্ড বে ব্রিজের মতো বাংলাদেশেও কেবল স্টেড বা ঝুলন্ত (তারের) সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা অনুযায়ী মতলব -গজারিয়া ভবেরচর সংযোগ সেতু এটি। সেতুটি ‘কেবল স্টেড সেতু’- যা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ৩ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা। এর বেশির ভাগ ৩ হাজার ১০২ কোটি টাকা দেবে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশের এক্সিম ব্যাংক এবং ইকনোমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড থেকে প্রকল্প ঋণ হিসেবে এ অর্থ নেওয়া হবে। বাকি ৬৬০ কোটি টাকা সরকারি অনুদান হিসেবে নেওয়া হবে। সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলা ও মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার মধ্যে নৌপথে ইঞ্জিন বোট ব্যতীত বিকল্প কোনো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। যাতায়াতের জন্য এ ব্যবস্থা খুবই অপর্যাপ্ত, সময়সাপেক্ষ এবং ঝুঁকিপূর্ণ। উপরন্তু চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর এবং ভোলার উপকূলীয় এলাকা হতে কাজের সন্ধানে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ রাজধানী ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জ এবং পার্শ্ববর্তী অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং শিল্পনগরীতে যাতায়াত করেন। এদিকে সেতুটি নির্মাণ হলে ওই তিন জেলার মানুষ সহজে এবং স্বল্প সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় যাওয়া-আসা করতে পারবেন। এ ছাড়া সেতুটির মাধ্যমে গজারিয়া ও ভবেরচর হয়ে চাঁদপুর ও ঢাকার মধ্যে ভারী যানবাহন চলাচলের বিকল্প পথ তৈরি হবে। বর্তমানে চাঁদপুর থেকে ভবেরচর পর্যন্ত বিদ্যমান সরু এবং আঁকাবাঁকা পথের দূরত্ব ৫২ কি.মি.। প্রস্তাবিত সেতুটি নির্মিত হলে বর্ণিত পথের দূরত্ব হবে ৩৫.৬ কি.মি.। এতে ১৬.৪ কি.মি. ভ্রমণ দূরত্ব হ্রাস পাবে। এর ফলে প্রতিদিন চাঁদপুর থেকে ঢাকায় যাতায়াতের মাধ্যমে যাত্রীরা বিভিন্ন অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ অন্যান্য কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। ফলে আবাসন এর ক্ষেত্রে ঢাকা শহরের ওপর জনসংখ্যার চাপ কমবে। অন্যদিকে সেতুটি দূরত্ব নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, বিদেশি পরামর্শক, সচিব, সেতু কর্তৃপক্ষ নির্মাণের স্থান এলাকায় গত একবছরে কয়েকবার পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, মতলব-গজারিয়া ভবেরচর সংযোগ সেতু হবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ তারের ঝুলন্ত একটি দৃষ্টিনন্দন সেতু। সেতু নির্মাণ বাস্তবায়নের জন্য জোরালো কার্যক্রম চলছে। আর সেতুটি নির্মাণের ফলে পাল্টে যাবে চাঁদপুর সহ কয়েকটি জেলার উন্নয়ন চিত্র।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


মতলবে মেঘনা-ধনাগোদা নদীর উপর হচ্ছে ঝুলন্ত সেতু

Update Time : ১০:৩৫:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আল-আমিন ভূঁইয়া( মতলব প্রতিনিধি):

বাংলাদেশে চার লেন বিশিষ্ট প্রথমবারের মতো ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ হতে যাচ্ছে চাঁদপুরের মতলবে। এতে করে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়কপথে চাঁদপুরের সঙ্গে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে। মেঘনা ও ধনাগোদা নদীর ওপর এই সেতু নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে গত ৭ সেপ্টেম্বর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে আলোচ্য প্রকল্পটির প্রস্তাব তুলে ধরেন সেতু বিভাগের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) রহিমা আক্তার। জানা যায়, ভারতের রাজিব গান্ধী সমুদ্র সেতু, চীনের সুটং ইয়াংজি নদী সেতু, ফ্রান্সের মিলাউ ভায়াডাক্ট, কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো-ওকল্যান্ড বে ব্রিজের মতো বাংলাদেশেও কেবল স্টেড বা ঝুলন্ত (তারের) সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা অনুযায়ী মতলব -গজারিয়া ভবেরচর সংযোগ সেতু এটি। সেতুটি ‘কেবল স্টেড সেতু’- যা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ৩ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা। এর বেশির ভাগ ৩ হাজার ১০২ কোটি টাকা দেবে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশের এক্সিম ব্যাংক এবং ইকনোমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড থেকে প্রকল্প ঋণ হিসেবে এ অর্থ নেওয়া হবে। বাকি ৬৬০ কোটি টাকা সরকারি অনুদান হিসেবে নেওয়া হবে। সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলা ও মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার মধ্যে নৌপথে ইঞ্জিন বোট ব্যতীত বিকল্প কোনো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। যাতায়াতের জন্য এ ব্যবস্থা খুবই অপর্যাপ্ত, সময়সাপেক্ষ এবং ঝুঁকিপূর্ণ। উপরন্তু চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর এবং ভোলার উপকূলীয় এলাকা হতে কাজের সন্ধানে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ রাজধানী ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জ এবং পার্শ্ববর্তী অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং শিল্পনগরীতে যাতায়াত করেন। এদিকে সেতুটি নির্মাণ হলে ওই তিন জেলার মানুষ সহজে এবং স্বল্প সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় যাওয়া-আসা করতে পারবেন। এ ছাড়া সেতুটির মাধ্যমে গজারিয়া ও ভবেরচর হয়ে চাঁদপুর ও ঢাকার মধ্যে ভারী যানবাহন চলাচলের বিকল্প পথ তৈরি হবে। বর্তমানে চাঁদপুর থেকে ভবেরচর পর্যন্ত বিদ্যমান সরু এবং আঁকাবাঁকা পথের দূরত্ব ৫২ কি.মি.। প্রস্তাবিত সেতুটি নির্মিত হলে বর্ণিত পথের দূরত্ব হবে ৩৫.৬ কি.মি.। এতে ১৬.৪ কি.মি. ভ্রমণ দূরত্ব হ্রাস পাবে। এর ফলে প্রতিদিন চাঁদপুর থেকে ঢাকায় যাতায়াতের মাধ্যমে যাত্রীরা বিভিন্ন অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ অন্যান্য কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। ফলে আবাসন এর ক্ষেত্রে ঢাকা শহরের ওপর জনসংখ্যার চাপ কমবে। অন্যদিকে সেতুটি দূরত্ব নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, বিদেশি পরামর্শক, সচিব, সেতু কর্তৃপক্ষ নির্মাণের স্থান এলাকায় গত একবছরে কয়েকবার পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, মতলব-গজারিয়া ভবেরচর সংযোগ সেতু হবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ তারের ঝুলন্ত একটি দৃষ্টিনন্দন সেতু। সেতু নির্মাণ বাস্তবায়নের জন্য জোরালো কার্যক্রম চলছে। আর সেতুটি নির্মাণের ফলে পাল্টে যাবে চাঁদপুর সহ কয়েকটি জেলার উন্নয়ন চিত্র।