কুমিল্লায় পেট্রোল বোমা হামলার মামলায় খালেদা জিয়া অনুপস্থিত, চার্জ গঠনের তারিখ পেছালো
- Update Time : ০৬:২৫:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / 127
সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ,কুমিল্লা-
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পেট্রোল বোমা হামলার মামলায় খালেদা জিয়ার অনুপস্থিত থাকার কারণে চার্জ গঠনের তারিখ পেছানো হয়েছে। বুধবার আসামি পক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তারিখ পেছান কুমিল্লা আদালতের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল উদ্দিন। বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টায় মামলায় হাজিরা দিতে আসেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী। এসময় চার্জ গঠনের তারিখ পেছানো হয়। বেলা ১১ টায় সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান আসামি পক্ষের আইনজীবী কাজী নাজমুস সাদাত, কাইমুল হক রিংকু ও মোহাম্মদ আক্তার হোসাইন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে হরতাল-অবরোধ চলাকালে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের একটি নৈশ কোচ (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৪০৮০) ৩ ফেব্রুয়ারি ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজারসংলগ্ন জগমোহনপুর এলাকায় পৌঁছালে বাসটিকে লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা ছোড়ে নাশকতাকারীরা। এ সময় বাসে ঘুমিয়ে থাকা যাত্রীরা আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলে সাতজন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরও একজন মারা যান।
এ ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান হাওলাদার ৩ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪ টায় ৫৬ জনকে নামীয় ও অজ্ঞাত ৭০/৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ৭৮ জনকে আসামি করে ২০১৭ সালের ২ মার্চ আদালতে চার্জশিট দেয় চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইব্রাহিম। তখন ৭৮ নম্বর আসামি হিসেবে যুক্ত করা হয় বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী।
ওই মামলার প্রধান আসামি জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। এই মামলার ৫১ নম্বর আসামি বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। মামলায় কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের মধ্যে আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মরহুম এম কে আনোয়ার, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও সালাউদ্দিন আহমেদ, শওকত মাহমুদ, মনিরুল হক চৌধুরীসহ অনেকে।
মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবীকাজী নাজমুস সাদাত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে আদালতের নির্দেশে সরকারের হেফাজতে আছে। তাই তাকে উপস্থিত করার দায়িত্ব সরকারের। আমরা আদালতে আবেদন করেছি যেহেতু খালেদা জিয়া অসুস্থতাসহ নানান কারণে অনুপস্থিত তাই যেন চার্জ গঠনের তারিখ পেছানো হয়। এছাড়াও বিএনপির অনেক নেতাকর্মী অনুপস্থিত ছিলেন। যেকারণে আমরা আবেদন করেছি। আমাদের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। চার্জ গঠনের তারিখ কবে তা পরে জানানো যাবে।
এসময় বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, শেখ হাসিনা তার অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করে যাচ্ছে। বিএনপির প্রায় ৪৫ থেকে ৪৯ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবার আরেকটা নির্বাচন করে তার অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে এসব মামলা করা হয়েছে। এসব মামলার একটি এই বোমা হামলার মামলা। এবার আর কোন সুযোগ নেই। জনগন জেগে উঠেছে। সারাদেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। আর উনি ( প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) দেখাচ্ছেন ফ্লাইওভার। এবার আর অবৈধ ক্ষমতা দখলের সুযোগ দেয়া হবে না। এক দফার আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আলহাজ্ব মনিরুল হক চৌধুরী সাবেক এমপি বলেন , আওয়ামীলীগের এই মুহুর্তে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে একটি অবাদ সুষ্ঠু নির্বাচন ফিরিয়ে দেওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় দেখছি না। দেশের নিবন্ধিত অধিকাংশ রাজনৈতিক দল দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় না। সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে বিগত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতোই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায়। তবে এবার সেই সুযোগ দেয়া হবে না। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে ।বিনা ভোটে জোর করে ক্ষমতায় আছে এই সরকার। অত্যাচার ও নির্যাতন করে দেশ শাসন করছে। এই সরকারের আমলে মানুষ নির্যাতিত। তাই দেশের সব বিরোধী দল সরকার পতনে একদফা আন্দোলন শুরু করেছে। মামলা হামলা করে আন্দোলন থামনো যাবেনা ।