নওগাঁর রাণীনগরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি-শিক্ষকের মধ্যে মারামারি
- Update Time : ০৬:৫৬:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৩
- / 243
মোঃ আব্দুল মালেক, রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার শিয়ালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যনেজিং কমিটি গঠন করা নিয়ে সভাপতি এবং শিক্ষকের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দুপুরে শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এ মারামারির ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, শিয়ালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যনেজিং কমিটির মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। এ জন্য নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছিলেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। ম্যনেজিং কমিটিতে শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে একজন শিক্ষককে রাখতে হয়। এই কারণে শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে তার বিদ্যালয় থেকে একজন শিক্ষক প্রতিনিধি দিতে বলা হয়। এতে চলিত মাসের ৩ আগস্ট স্বজনপ্রতির মাধ্যমে উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিকের বর্তমান ম্যনেজিং কমিটির সভাপতি সহকারি শিক্ষক উত্তম কুমারের নাম দেন শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ওই সভাপতি উত্তম কুমারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকরা প্রতিনিধি হিসাবে উত্তমের নাম পাওয়ায় দ্বিমত পোষণ করেন।
এরই মধ্যে বুধবার দুপুরে প্রাথমিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুকুমার চন্দ্র বরমন ও সহকারি শিক্ষক আল-আমিন এবং যগেন্দ্র সরকার শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ে যান সভাপতি উত্তমের নাম শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধি থেকে বাদ দেয়ানোর জন্য। এ সময় প্রাথমিকের শিক্ষকরা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অন্য একজন শিক্ষকের নাম চুড়ান্ত করে দিতে বললে বিষয়টি উত্তমকে ডেকে জানায় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্রনাথ। ওই সময় প্রাথমিকের বর্তমান সভাপতি উত্তম এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুকুমারের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এতে সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আহত হয়েছেন।
শিয়ালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুকুমার চন্দ্র বরমন বলেন, বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি উত্তম সঠিকভাবে তার দায়িত্ব পালন করেন না। এ জন্য শিক্ষকদের নানা হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়। এই কারণে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন কমিটিতে তাকে আর সভাপতি পদে রাখবেন না। এই কথা সভাপতি উত্তম জানার পর থেকে আমার উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে উত্তমের নাম পাঠানো হয়। বুধবার সেই নাম পরিবর্তনের জন্য আমরা তিনজন শিক্ষক উচ্চ বিদ্যালয়ে গেলে সভাপতি উত্তম ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারপিট করেন। এ সময় আমার সহকর্মীরা এগোতে গেলে তাদের সাথেও মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আমি সুষ্ঠ বিচার চেয়ে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
জানতে চাইলে প্রাথমিকের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শিক্ষক উত্তম কুমার বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুকুমারকে মারপিট করিনি। প্রধান শিক্ষকের অনুসারী সহকারি শিক্ষক আল-আমিন আমাকে মারপিট করে আহত করেছে। আর দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
প্রাথমিকের সহকারি শিক্ষক আল-আমিন বলেন, আমার সামনে প্রধান শিক্ষককে সভাপতি মারপিট করছিল। এ সময় আমি তাদের মারামারি ভাঙতে গেলে আমার সঙ্গেও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাদিরউজ্জামান বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।