শেষ মৌসুমে গৌড়মতি জাতের আম চাষে মামা-ভাগ্নের ভাগ্যের দ্বার উন্মুক্ত

  • Update Time : ০৩:১৫:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৩
  • / 150

হুমায়ুন কবির,
রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধিঃ

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায়
শেষ মৌসুমে গৌড়মতি জাতের আম চাষে মামা-ভাগ্নের ব্যতিক্রমী চমকে আবাক এলাকাবাসী। তারা আশা করছে এ মৌসুমে প্রায় ৪০ লাখ টাকার আম বিক্রি করতে পারবে।
বিভিন্ন জাতের আমের জোগান যখন শেষ হয়, ঠিক তখনই নতুন এক আমের আগমন ঘটে ফলের মৌসুমে। আর সেই ফল হল সুস্বাদু রসালো গৌড়মতি আম। সাধারণ আমসহ উন্নত জাতের বিভিন্ন আম যখন শেষ হয় ঠিক তখনই পাকতে শুরু করে এই গৌড়মতি।
রসালো আর সুস্বাদু নাবি জাতের এই আম চাষ করে স্বাবলম্বী হওযার স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার দক্ষিণ বনগাঁও এলাকার মহব্বত আলী ও বুলবুল নামে দুই চাষি। শুধু স্বাবলম্বী হওযার স্বপ্নই দেখছেন না,এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন এই দুই মামা- ভাগ্নে।
জানা গেছে, চার বছর আগে ১৪ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে মামা মহব্বত আলী ভাগিনা বুলবুল কে সাথে নিয়ে ১ হাজারটি চারা রোপণ করে পরিচর্যা শুরু করেন।
শুক্রবার ১৮ আগস্ট সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অসময়ে থোকায় থোকায় গাছে ঝুলছে শতভাগ বিষমুক্ত রসালো ও সুস্বাদু গৌড়মতি আম। শতভাগ নিরাপদ রাখতে প্রতিটি আমে করা হয়েছে ফ্রুট ব্যাগিং। মামা-ভাগনের নিবিড় হাতের ছোঁয়ায় দৃষ্টি কাড়ছে এলাকাবাসীসহ বাগান দেখতে আসা অনেক দর্শনার্থীদের।
বাগান ঘুরে অনুমান করে দেখা গেছে ১ হাজার গাছে আম এসেছে প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৪শ মণের কাছাকাছি।
নাবি জাতের এই আম উপজেলায় ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার। সম্ভাবনাময় এই আমের প্রতিটির ওজন ৬৫০ থেকে ৮০০ গ্রাম। বর্তমানে এ গৌড়মতি আম দশ থেকে ১২ হাজার টাকা মণ দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে গৌড়মতি আমের সাফল্য দেখে অনেকেই এ বাগান তৈরিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, বাংলার প্রাচীন চাঁপাইনবাবগঞ্জের জনপদের নাম থেকে ‘গৌড়’ আর মূল্য বিবেচনায় রত্নের সঙ্গে তুলনা করে ‘মতি’ শব্দের সমন্বয়ে নতুন জাতের এই আমটির ২০১৩ সালে নামকরণ করা হয়েছিল ‘গৌড়মতি’।
এ আমটি রসালো ও সুস্বাদু, আকারে বড় হলেও এর আঁটি ছোট এবং আঁশ পাতলা।
কৃষক মহাব্বত আলী বলেন, চার বছর আগে ১৪ বিঘা জমিতে এক হাজার গৌড়মতি আমের গাছ লাগিয়েছি। গতবছর থেকেই গাছে আম আসতে শুরু করেছে। গত বছর গাছের পরিপক্বতার কথা ভেবে গাছে আম নেয়া হয়নি।
তবে এ বছর ব্যাপক ফলন হয়েছে। আশা করছি প্রায় ৪০ লাখ টাকার বেশি আম বিক্রি করতে পারব। যতদিন যাবে গাছ আরও বড় হবে আমের ফলনও বাড়বে।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, এটি একটি নাবি জাতের আম। সারাদেশের আমের জোগান যখন শেষ হয়, তখনই পাকতে শুরু করে এই গৌড়মতি। এই আম অত্যন্ত সুস্বাদু। আর যেহেতু সব আমের শেষে পাকে এই আম তাই দামও বেশ ভালো পান চাষিরা। কোন কৃষক যদি যদি গৌড়মতি আমের বাগান করতে চায় তাহলে কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার হবে বলে তিনি জানান।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


শেষ মৌসুমে গৌড়মতি জাতের আম চাষে মামা-ভাগ্নের ভাগ্যের দ্বার উন্মুক্ত

Update Time : ০৩:১৫:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৩

হুমায়ুন কবির,
রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধিঃ

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায়
শেষ মৌসুমে গৌড়মতি জাতের আম চাষে মামা-ভাগ্নের ব্যতিক্রমী চমকে আবাক এলাকাবাসী। তারা আশা করছে এ মৌসুমে প্রায় ৪০ লাখ টাকার আম বিক্রি করতে পারবে।
বিভিন্ন জাতের আমের জোগান যখন শেষ হয়, ঠিক তখনই নতুন এক আমের আগমন ঘটে ফলের মৌসুমে। আর সেই ফল হল সুস্বাদু রসালো গৌড়মতি আম। সাধারণ আমসহ উন্নত জাতের বিভিন্ন আম যখন শেষ হয় ঠিক তখনই পাকতে শুরু করে এই গৌড়মতি।
রসালো আর সুস্বাদু নাবি জাতের এই আম চাষ করে স্বাবলম্বী হওযার স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার দক্ষিণ বনগাঁও এলাকার মহব্বত আলী ও বুলবুল নামে দুই চাষি। শুধু স্বাবলম্বী হওযার স্বপ্নই দেখছেন না,এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন এই দুই মামা- ভাগ্নে।
জানা গেছে, চার বছর আগে ১৪ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে মামা মহব্বত আলী ভাগিনা বুলবুল কে সাথে নিয়ে ১ হাজারটি চারা রোপণ করে পরিচর্যা শুরু করেন।
শুক্রবার ১৮ আগস্ট সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অসময়ে থোকায় থোকায় গাছে ঝুলছে শতভাগ বিষমুক্ত রসালো ও সুস্বাদু গৌড়মতি আম। শতভাগ নিরাপদ রাখতে প্রতিটি আমে করা হয়েছে ফ্রুট ব্যাগিং। মামা-ভাগনের নিবিড় হাতের ছোঁয়ায় দৃষ্টি কাড়ছে এলাকাবাসীসহ বাগান দেখতে আসা অনেক দর্শনার্থীদের।
বাগান ঘুরে অনুমান করে দেখা গেছে ১ হাজার গাছে আম এসেছে প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৪শ মণের কাছাকাছি।
নাবি জাতের এই আম উপজেলায় ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার। সম্ভাবনাময় এই আমের প্রতিটির ওজন ৬৫০ থেকে ৮০০ গ্রাম। বর্তমানে এ গৌড়মতি আম দশ থেকে ১২ হাজার টাকা মণ দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে গৌড়মতি আমের সাফল্য দেখে অনেকেই এ বাগান তৈরিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, বাংলার প্রাচীন চাঁপাইনবাবগঞ্জের জনপদের নাম থেকে ‘গৌড়’ আর মূল্য বিবেচনায় রত্নের সঙ্গে তুলনা করে ‘মতি’ শব্দের সমন্বয়ে নতুন জাতের এই আমটির ২০১৩ সালে নামকরণ করা হয়েছিল ‘গৌড়মতি’।
এ আমটি রসালো ও সুস্বাদু, আকারে বড় হলেও এর আঁটি ছোট এবং আঁশ পাতলা।
কৃষক মহাব্বত আলী বলেন, চার বছর আগে ১৪ বিঘা জমিতে এক হাজার গৌড়মতি আমের গাছ লাগিয়েছি। গতবছর থেকেই গাছে আম আসতে শুরু করেছে। গত বছর গাছের পরিপক্বতার কথা ভেবে গাছে আম নেয়া হয়নি।
তবে এ বছর ব্যাপক ফলন হয়েছে। আশা করছি প্রায় ৪০ লাখ টাকার বেশি আম বিক্রি করতে পারব। যতদিন যাবে গাছ আরও বড় হবে আমের ফলনও বাড়বে।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, এটি একটি নাবি জাতের আম। সারাদেশের আমের জোগান যখন শেষ হয়, তখনই পাকতে শুরু করে এই গৌড়মতি। এই আম অত্যন্ত সুস্বাদু। আর যেহেতু সব আমের শেষে পাকে এই আম তাই দামও বেশ ভালো পান চাষিরা। কোন কৃষক যদি যদি গৌড়মতি আমের বাগান করতে চায় তাহলে কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার হবে বলে তিনি জানান।