প্রবাসী হাফেজ উল্ল্যাহ’র আলোয় আলোকিত কুমিল্লার মথুরাপুর গ্রাম
- Update Time : ০২:৫৯:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৩
- / 192
সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ:
ছোট খাটো লোক। লিকলিকে শ্যামলা বর্ণ। প্রথম দেখায় তাকে কেউ খুব একটা গুরুত্ব দিবে না। তবে তার সংগ্রামী জীবনের কথা শুনলে বিস্মিত হবে।
তিনি হাফেজ উল্ল্যাহ খোকন। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামের কৃতি সন্তান।
তার এই গ্রামের সড়কগুলো ছিল যেন ধানক্ষেত। গ্রামের মানুষরা চলাচলে, শিক্ষা-দিক্ষায় অনেক কষ্ট করত। তাই তিনি মথুরাপুর আক্তার আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও পাশের গ্রামে একটি নূরানী ও হাফিজিয়া মাদরাসা গড়ে তুলেন। এই স্কুল ও মাদরাসায় ছাত্র সংখ্যা কম ছিল, তাদের বাড়িতে গিয়ে বুঝিয়ে আনতে হতো।
সেই এলাকা এখন বদলে গেছে। পিচঢালা সড়ক হয়েছে। হয়েছে স্কুলে বহুতল ভবন। স্কুল ও মাদরাসায় শিক্ষার্থী বেড়েছে। প্রতি বছর সদর দক্ষিণ উপজেলায় ওনার এই প্রতিষ্ঠান গুলো সাফল্যের শীর্ষে থাকে।
জানা যায়, হাফিজ উল্লাহ খোকন সদর দক্ষিণ উপজেলার মথুরাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম আক্তার আলী। তিনি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে লেখাপড়া শেষ করলেও লেখাপড়া চলাকালীন সময় তিনি মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতেন। একসময় তিনি দেশ ছেড়ে প্রবাসে চলে যান। তখন তিনি প্রবাস থেকে এই মথুরাপুর গ্রামের উন্নয়নে কাজ করে গেলেও তিনি জনপ্রতিনিধি ও সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য এসব করেননা বলে ঘোষণা দেন।
হাফিজ উল্লাহ খোকন জানান, প্রবাসে চলে যাওয়ার পর চাকরির সুবাদে যে বেতন পেতেন, তা দিয়ে কোনোমতে সংসার খরচ চলতো। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। সন্তানদের বুঝতে দেননি বাবার অভাব। তিনি চেয়েছিলেন নিজের এলাকাকে বদলে দেওয়ার। তার সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তিনি মথুরাপুর এলাকা নয় আশপাশের এলাকার ও চিত্র বদলে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন।
নিজ খরচ ও উদ্যোগে এলাকার চিত্র পাল্টে দেওয়ার বিষয়ে বলেন, এলাকায় ছাত্র জোগাড়, স্কুল ভবন করা ও সড়কের বিষয়ে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করতে হয়েছে। আমাদের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার ও সবার সহযোগিতায় কাজগুলো করতে পেরেছি।
জীবনের আনন্দের স্মৃতির বিষয়ে তিনি বলেন, তার হাজারো শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তারা সমাজকে আলোকিত করেছে। পথে দেখা হলে তারা পা ছুঁয়ে সালাম করে।
মথুরাপুর এলাকার মানুষ বলেন, খোকনের ত্যাগ ও আত্মবিশ্বাসের কারণেই আমাদে ছেলে-মেয়ে গুলো মাদক থেকে দূরে সরে শিক্ষার আলো পেয়েছে। তিনি একজন গোছানো মানুষ। তার থেকে অনেক মানুষের শিক্ষা নেওয়া দরকার।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার বলেন, আমি দীর্ঘদিন ওই এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ গুলোর সাথে জড়িত। এই হাফেজ উল্ল্যাহ খোকন খুবই পরিশ্রমী। তিনি প্রবাসে থেকেও দেশের মানুষের জন্য এভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তা সত্যিই অকল্পনীয়। তার সকল কাজে আমরাও সকল ধরনের সহযোগিতা করব।