এই মুহূর্তে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য : মির্জা ফখরুল

  • Update Time : ০৮:২৩:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
  • / 8

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘চলমান সংকট নিরসনে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। আমাদের সমানে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা জন্য বিশেষ করে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তাদের প্রতিহত করার জন্য আমাদের অবশ্যই জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’

বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছি। বিশেষ করে কয়েক দিন ধরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীদের যে সংঘর্ষ আমরা আমাদের দলের পক্ষে উদ্বেগ জানিয়েছি। আমরা আশা করেছি যে প্রধান উপদেষ্টা তার পরিষদ নিয়ে দ্রুত এসব বিষয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধান করবেন। দেশে যেন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়। বিশেষ করে বিভাগের পরিস্থিতি।’

‘এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে জাতীয় ঐক্য।’ এমনটা জানিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবিলা করার জন্য, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, যারা এর স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে চায়, তাদের প্রতিরোধ বা প্রতিহত করার জন্য আমাদের অবশ্যই একটা জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জনগণের দুর্ভোগ হচ্ছে। আমরা বলেছি টিসিবির ট্রাক বৃদ্ধির কথা বলেছি। কৃষিতে সার বিতরণের যে সমস্যা আছে, সেগুলো নিরসনের কথা বলেছি। এখনও ফ্যাসিবাদের দোসররা নিয়ন্ত্রণ করছে। সে জন্য জনগণের পক্ষে যারা আছেন, তাদের নিয়ে আসার কথা বলেছি, যাতে বিষয়টি সহজ ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেছি।’

শিল্পে উৎপাদনের জন্য স্বাভাবিক অবস্থা যেন থাকে, বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘জন্য বলেছি। শ্রমিকরা যাতে বেতন পান, সেটা বলেছি। প্রয়োজনে ঋণ দেওয়ার কথা বলেছি। একই সঙ্গে এখনো যেসব ইউনিয়ন পরিষদ বহাল আছে, সেগুলো ভেঙে দেওয়ার কথা বলেছি। বেশির ভাগই ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে জবরদস্তির নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছে। যেহেতু সিটি করপোরেশন, উপজেলা ও পৌরসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সে জন্য ইউনিয়ন পরিষদও ভেঙে দিতে বলেছি। পরবর্তী নির্বাচনের মাধ্যমে গঠনের কথা বলেছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ট্রেড বডি ও ইউনিয়নগুলো পুনরায় নির্বাচনের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে গঠনের কথা বলেছি। সামগ্রিকভাবে সমস্ত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য তৈরির কথা বলেছি। পাশাপাশি সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার কথা বলেছি। তা ছাড়া বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমাদের বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো প্রত্যাহারের কথা বলেছি। প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা আমাদের কথা মনযোগ সহকারে শুনেছেন।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর হেয়ার রোডে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা যায় বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাউদ্দিন আহমেদ। তবে দলটির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সিরাজগঞ্জ থাকায় বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি।

বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হাসান আরিফ, আদিলুর রহমান খান ও মো. মাহফুজ আলম উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media


এই মুহূর্তে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য : মির্জা ফখরুল

Update Time : ০৮:২৩:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘চলমান সংকট নিরসনে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। আমাদের সমানে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা জন্য বিশেষ করে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তাদের প্রতিহত করার জন্য আমাদের অবশ্যই জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’

বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছি। বিশেষ করে কয়েক দিন ধরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীদের যে সংঘর্ষ আমরা আমাদের দলের পক্ষে উদ্বেগ জানিয়েছি। আমরা আশা করেছি যে প্রধান উপদেষ্টা তার পরিষদ নিয়ে দ্রুত এসব বিষয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধান করবেন। দেশে যেন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়। বিশেষ করে বিভাগের পরিস্থিতি।’

‘এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে জাতীয় ঐক্য।’ এমনটা জানিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবিলা করার জন্য, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, যারা এর স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে চায়, তাদের প্রতিরোধ বা প্রতিহত করার জন্য আমাদের অবশ্যই একটা জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জনগণের দুর্ভোগ হচ্ছে। আমরা বলেছি টিসিবির ট্রাক বৃদ্ধির কথা বলেছি। কৃষিতে সার বিতরণের যে সমস্যা আছে, সেগুলো নিরসনের কথা বলেছি। এখনও ফ্যাসিবাদের দোসররা নিয়ন্ত্রণ করছে। সে জন্য জনগণের পক্ষে যারা আছেন, তাদের নিয়ে আসার কথা বলেছি, যাতে বিষয়টি সহজ ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেছি।’

শিল্পে উৎপাদনের জন্য স্বাভাবিক অবস্থা যেন থাকে, বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘জন্য বলেছি। শ্রমিকরা যাতে বেতন পান, সেটা বলেছি। প্রয়োজনে ঋণ দেওয়ার কথা বলেছি। একই সঙ্গে এখনো যেসব ইউনিয়ন পরিষদ বহাল আছে, সেগুলো ভেঙে দেওয়ার কথা বলেছি। বেশির ভাগই ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে জবরদস্তির নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছে। যেহেতু সিটি করপোরেশন, উপজেলা ও পৌরসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সে জন্য ইউনিয়ন পরিষদও ভেঙে দিতে বলেছি। পরবর্তী নির্বাচনের মাধ্যমে গঠনের কথা বলেছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ট্রেড বডি ও ইউনিয়নগুলো পুনরায় নির্বাচনের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে গঠনের কথা বলেছি। সামগ্রিকভাবে সমস্ত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য তৈরির কথা বলেছি। পাশাপাশি সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার কথা বলেছি। তা ছাড়া বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমাদের বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো প্রত্যাহারের কথা বলেছি। প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা আমাদের কথা মনযোগ সহকারে শুনেছেন।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর হেয়ার রোডে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা যায় বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাউদ্দিন আহমেদ। তবে দলটির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সিরাজগঞ্জ থাকায় বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি।

বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হাসান আরিফ, আদিলুর রহমান খান ও মো. মাহফুজ আলম উপস্থিত ছিলেন।