ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির আশা দেখালেও থামছে না ইসরায়েল, গাজায় নিহত আরও ৭৮

  • Update Time : ১০:৩৬:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
  • / 61

গাজা উপত্যকায় মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪ জন নিহত হন ত্রাণ সহায়তার জন্য অপেক্ষারত অবস্থায়। এসব জানিয়েছে গাজার আল-আকসা শহীদ হাসপাতাল ও আল-আওদা হাসপাতালের চিকিৎসা সূত্র।

একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, গাজা যুদ্ধ বন্ধে ‘বড় অগ্রগতি’ হচ্ছে এবং যুদ্ধবিরতির চুক্তি ‘খুব কাছাকাছি’।

ত্রাণকেন্দ্রেই মৃত্যু ফাঁদ

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার কেন্দ্রে নেতসারিম জংশনের কাছে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর একটি বিতরণকেন্দ্রের সামনে অপেক্ষমাণদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালায়। সমালোচকরা এই বিতরণকেন্দ্রগুলোকে আখ্যা দিয়েছেন ‘মৃত্যুকূপ’ ও ‘মানব বধ্যভূমি’ হিসেবে।

জিএএইচএফের বিতরণকেন্দ্রগুলোর অবস্থান ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ট্যাংক ও স্নাইপার ঘেরা এলাকায় হওয়ায় জনসমাগমের সময় বেসামরিক মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়ে বলে জানিয়েছেন আল-জাজিরার গাজা প্রতিনিধি হানি মাহমুদ। তার কথায়, ‘মাত্র ২০ মিনিট সময় দেওয়া হয় খাবার সংগ্রহের জন্য। এরপরই গুলিবর্ষণ শুরু হয়।’

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত অন্তত ৫৬ হাজার ১৫৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৩২ হাজার ২৩৯ জন আহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও কয়েক হাজার মানুষ, যাদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই বলেই ধরে নেওয়া হয়।

ট্রাম্পের কূটনীতি ও সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি

নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অনুষ্ঠিত ন্যাটো সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, আমার মনে হয় গাজা নিয়ে ভালো কিছু হচ্ছে, বিশেষ করে ইরানে আমরা যে হামলা চালিয়েছি, সেটা এ অঞ্চলে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

ট্রাম্প জানান, তার মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ তাকে জানিয়েছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি এখন ‘খুব কাছাকাছি’। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনা এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সূত্র।

সূত্র: আল-জাজিরা

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির আশা দেখালেও থামছে না ইসরায়েল, গাজায় নিহত আরও ৭৮

Update Time : ১০:৩৬:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

গাজা উপত্যকায় মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪ জন নিহত হন ত্রাণ সহায়তার জন্য অপেক্ষারত অবস্থায়। এসব জানিয়েছে গাজার আল-আকসা শহীদ হাসপাতাল ও আল-আওদা হাসপাতালের চিকিৎসা সূত্র।

একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, গাজা যুদ্ধ বন্ধে ‘বড় অগ্রগতি’ হচ্ছে এবং যুদ্ধবিরতির চুক্তি ‘খুব কাছাকাছি’।

ত্রাণকেন্দ্রেই মৃত্যু ফাঁদ

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার কেন্দ্রে নেতসারিম জংশনের কাছে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর একটি বিতরণকেন্দ্রের সামনে অপেক্ষমাণদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালায়। সমালোচকরা এই বিতরণকেন্দ্রগুলোকে আখ্যা দিয়েছেন ‘মৃত্যুকূপ’ ও ‘মানব বধ্যভূমি’ হিসেবে।

জিএএইচএফের বিতরণকেন্দ্রগুলোর অবস্থান ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ট্যাংক ও স্নাইপার ঘেরা এলাকায় হওয়ায় জনসমাগমের সময় বেসামরিক মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়ে বলে জানিয়েছেন আল-জাজিরার গাজা প্রতিনিধি হানি মাহমুদ। তার কথায়, ‘মাত্র ২০ মিনিট সময় দেওয়া হয় খাবার সংগ্রহের জন্য। এরপরই গুলিবর্ষণ শুরু হয়।’

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত অন্তত ৫৬ হাজার ১৫৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৩২ হাজার ২৩৯ জন আহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও কয়েক হাজার মানুষ, যাদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই বলেই ধরে নেওয়া হয়।

ট্রাম্পের কূটনীতি ও সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি

নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অনুষ্ঠিত ন্যাটো সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, আমার মনে হয় গাজা নিয়ে ভালো কিছু হচ্ছে, বিশেষ করে ইরানে আমরা যে হামলা চালিয়েছি, সেটা এ অঞ্চলে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

ট্রাম্প জানান, তার মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ তাকে জানিয়েছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি এখন ‘খুব কাছাকাছি’। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনা এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সূত্র।

সূত্র: আল-জাজিরা