ডম্বুর বাঁধ অভিমুখে ছাত্র-জনতার লংমার্চের ঘোষণা
- Update Time : ১১:৪৮:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪
- / 29
জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আন্তর্জাতিক নদীতে অন্যায়ভাবে বাঁধ নির্মাণ করে ভারত কর্তৃক পানি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বাংলাদেশে বন্যা ও নদীর নাব্য কমিয়ে ফেলার প্রতিবাদে ‘গণধিক্কার ও ভাঙার গান’ শীর্ষক সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় আগামী শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা থেকে ত্রিপুরার ডম্বুর বাঁধ অভিমুখে ছাত্র-জনতার লংমার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘ইনকিলাব মঞ্চে’র উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আগ্রাসন বিরোধী গান, কবিতাসহ বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পরিবেশিত হয়। জনপ্রিয় র্যাপ গানের শিল্পী মাহমুদ হাসান তাবীবসহ জনপ্রিয় অনেক ব্যান্ড ও শিল্পীরা অনুষ্ঠানে গান, কবিতা পরিবেশন করেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা- ‘বন্যায় মারে, খরায় পোড়ায়, সীমান্তে রক্ত ঝরায়’, ‘পদ্মা-তিস্তা-আবরার, যুদ্ধে ডাকে বারবার’, ‘তিস্তা-টিপাই-ফারাক্কা, তোল রে আওয়াজ দে ধাক্কা’, ‘ফেলানির ভাই ফিচ্ছে ডাক, নদীর খুনি নিপাত যাক’, ‘সোনিয়া আর গেরুয়া মোদী, গুম করেছে আমার নদী’, ‘খুনি ভারতে নদীর বাঁধ, বাংলাদেশের মরণ ফাঁদ’ ইত্যাদি স্লোগান সম্বলিত ফেস্টুন প্রদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ইনকিলাব মঞ্চের অন্যতম মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদী বলেন, এখনো একজন আমেরিকা এবং আরেকজন ভারত থেকে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেই চলেছে। এ দেশের ছাত্র-জনতা কোনো ষড়যন্ত্রের কাছে কখনো মাথা নত করে না। আন্তর্জাতিক নদীতে বাঁধ দিয়ে আবার সেগুলো ইচ্ছেমতো নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে অন্যদেশে সংকট সৃষ্টির অধিকার কারো নেই।
লংমার্চের ঘোষণা দিয়ে ওসমান বিন হাদী বলেন, আগামী শুক্রবার(৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় ঢাকার শাহবাগ থেকে ১০টি ট্রাক নিয়ে আমরা ভারতের ডম্বুর বাঁধ অভিমুখে লংমার্চ করব।
ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা বলেন, আমরা ১৯৫২, ৬৯, ৭১ এবং সর্বশেষ ২৪ এর জুলাই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিজয় ছিনিয়ে এনেছি ছাত্র-জনতা। আমাদের বিজয় ছিনিয়ে আনতে যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, শাহাদাতবরণ করেছেন তাদের কখনো ভুলবো না। ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বাংলাদেশের প্রথম শহীদ আবরার ফাহাদের চেতনাকে ধারণ করেই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। আমরা কারও দাসত্ব মেনে নেবো না। অনেক একাডেমিশিয়ান বলতে চান এ বন্যা প্রাকৃতিক। আমরা খুব শিগগির প্রেস ক্লাবে একটা সেমিনার করে একাডেমিকভাবেও তাদের প্রমাণ করে দেবো এটি রাজনৈতিক বন্যা।
উপস্থিত বক্তারা বলেন, শক্তির জোরে একের পর এক বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ৫৪টি নদীর প্রায় সব প্রবাহ পথে বাঁধ দিয়ে বাধার সৃষ্টি করে এর বিশাল পানিপ্রবাহ কৃত্রিম খালের সাহায্যে উঁচু অঞ্চলে প্রবাহিত করে কৃষিক্ষেত্রসহ ইচ্ছেমতো সব ক্ষেত্রে পানি ব্যবহার করছে। ভারতের এসব আগ্রাসী তৎপরতা রুখে দাঁড়ানোর এখনই সময়।
বক্তারা বাঁধের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে আরও বলেন, উজানে ভারত গঙ্গার ওপর ফারাক্কা বাঁধ ও অন্যান্য নদীতে বাঁধের কারণে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের মতন অমূল্য সম্পদ আজ ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। বনটি বেঁচে থাকার জন্য যে পরিমাণ স্বাদু পানির প্রয়োজন, তা পাচ্ছে না। কৃষির অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। পানির স্তর অনেক নেমে যাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের জি-কে সেচ প্রকল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেচযন্ত্রগুলোর অনেকগুলোই বন্ধ হয়ে আছে অথবা সেগুলোর ওপর তার ক্ষমতার চাইতে বেশি চাপ পড়ছে। শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশের ৩২০ কিলোমিটারের বেশি নৌপথ নৌ-চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে, বেকার হয়ে পড়ে কয়েক হাজার মানুষ ।