‘ব্যর্থ ঢাবি প্রশাসনে’র পদত্যাগসহ ১১ দফা পেশ ঢাবি সাদা দলের

  • Update Time : ১০:৩২:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪
  • / 41

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৮ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করে বর্তমান সংকটের সমাধান করা, আন্দোলনের সমন্বয়কদের ডিবি হেফাজত থেকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর ও গ্রেপ্তার সব শিক্ষার্থীকে মুক্তি দেওয়াসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের এ সংগঠন সাদা দল।

মঙ্গলবার(৩০ জুলাই) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সাদা দলের শিক্ষকেরা এসব দাবি জানান। এসময় একই সঙ্গে বর্তমান সরকার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করেন তারা ।

শিক্ষকরা বলেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। দেশে কোনো অরাজকতা-বিশৃঙ্খলা চান না তাঁরা। সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রাণহানি ও উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে বক্তব্য জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান। এসময় ১১ দফা দাবি উল্লেখ করা হয়। এ দাবিগুলো নিন্মরূপ :

১.ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর ছাত্র নামধারী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলা এবং পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাসে সংঘটিত সব ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা
২.সন্ত্রাসীদের হামলা থেকে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদত্যাগ
৩. অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা
৪. কারফিউ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে জনজীবন স্বাভাবিক করা
৫. জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক তদন্তের ব্যবস্থা করে শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ হত্যায় জড়িত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ও সরকার সমর্থক সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনা এবং নিহতদের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ ও একই সঙ্গে এ হামলায় আহত সবার সুচিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা করা
৬. আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি সাধনের ঘটনা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নিরপেক্ষ ও নির্মোহ তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা
৭. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের ডিবি হেফাজত থেকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর এবং গ্রেফতা সব শিক্ষার্থীকে অবিলম্বে মুক্তি প্রদান
৮. শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের গ্রেফতার ও হয়ারনি না করা
৯. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সর্বশেষ ৮ দফা দাবি দ্রুত ব্যস্তবায়ন করে সংকটের সমাধান করা
১০. তদন্ত ছাড়াই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পেশাজীবীসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের গণগ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে বর্বোরচিত নির্যাতন বন্ধ করা এবং গ্রেফতারদের অবিলম্বে মুক্তি প্রদান করা এবং
১১. জনদাবি মেনে নিয়ে সরকারের পদত্যাগ এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা।

এ সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে ভয়ানক অবস্থা তৈরি হয়েছে, সেটিকে স্বাধীনতা–পরবর্তী বাংলাদেশে নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছে সাদা দল।

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান,আবদুস সালাম প্রমুখ ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


‘ব্যর্থ ঢাবি প্রশাসনে’র পদত্যাগসহ ১১ দফা পেশ ঢাবি সাদা দলের

Update Time : ১০:৩২:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৮ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করে বর্তমান সংকটের সমাধান করা, আন্দোলনের সমন্বয়কদের ডিবি হেফাজত থেকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর ও গ্রেপ্তার সব শিক্ষার্থীকে মুক্তি দেওয়াসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের এ সংগঠন সাদা দল।

মঙ্গলবার(৩০ জুলাই) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সাদা দলের শিক্ষকেরা এসব দাবি জানান। এসময় একই সঙ্গে বর্তমান সরকার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করেন তারা ।

শিক্ষকরা বলেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। দেশে কোনো অরাজকতা-বিশৃঙ্খলা চান না তাঁরা। সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রাণহানি ও উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে বক্তব্য জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান। এসময় ১১ দফা দাবি উল্লেখ করা হয়। এ দাবিগুলো নিন্মরূপ :

১.ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর ছাত্র নামধারী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলা এবং পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাসে সংঘটিত সব ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা
২.সন্ত্রাসীদের হামলা থেকে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদত্যাগ
৩. অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা
৪. কারফিউ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে জনজীবন স্বাভাবিক করা
৫. জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক তদন্তের ব্যবস্থা করে শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ হত্যায় জড়িত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ও সরকার সমর্থক সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনা এবং নিহতদের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ ও একই সঙ্গে এ হামলায় আহত সবার সুচিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা করা
৬. আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি সাধনের ঘটনা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নিরপেক্ষ ও নির্মোহ তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা
৭. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের ডিবি হেফাজত থেকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর এবং গ্রেফতা সব শিক্ষার্থীকে অবিলম্বে মুক্তি প্রদান
৮. শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের গ্রেফতার ও হয়ারনি না করা
৯. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সর্বশেষ ৮ দফা দাবি দ্রুত ব্যস্তবায়ন করে সংকটের সমাধান করা
১০. তদন্ত ছাড়াই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পেশাজীবীসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের গণগ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে বর্বোরচিত নির্যাতন বন্ধ করা এবং গ্রেফতারদের অবিলম্বে মুক্তি প্রদান করা এবং
১১. জনদাবি মেনে নিয়ে সরকারের পদত্যাগ এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা।

এ সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে ভয়ানক অবস্থা তৈরি হয়েছে, সেটিকে স্বাধীনতা–পরবর্তী বাংলাদেশে নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছে সাদা দল।

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান,আবদুস সালাম প্রমুখ ।