ছাত্রলীগের সমাবেশ : ঢাবির হলে খাবার সংকট, ভোগান্তিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা
- Update Time : ০৬:৩৩:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / 211
জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলগুলোর ক্যান্টিন থেকে ছাত্রসমাবেশ উপলক্ষে কর্মীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছে ছাত্রলীগ। আর এর ফলে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরাই পান নি খাবার ।বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ হলে গিয়ে এ ধরনের চিত্র দেখা গেছে।
ছাত্রলীগের ছাত্রসমাবেশ উপলক্ষে শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর ক্যান্টিন থেকে ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা করে ছাত্রলীগ। এছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বহিরাগতদের চাপ ছিল অনেক বেশি। তাই বেশির ভাগ হলেই খাবার পান নি সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রুটি কলা চিড়া মুড়ি দিয়েই দুপুরের খাবারের পর্ব সারতে হয়েছে তাদের।
হলপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, বেলা ১১-১২টা পার না হতেই খাবার শেষ হয়ে যায় অধিকাংশ হলেই। অনেকে খাবার খেতে না পেরে বিভিন্ন হলে ঘুরাঘুরি করে খাওয়ার চেষ্টা করছেন।
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে গিয়ে দেখা যায়, হলের দুইটি ক্যান্টিনের কোনটিতেই খাবার নেই। এলাকা ভিত্তিক ছাত্রলীগের নেতারা খাবারের অর্ডার নেওয়ায় হলের শিক্ষার্থীদের জন্য রান্না করা হয়নি। এ হলের দোকানে ১২টার দিকেই দুপুরের খাবার শেষ হয়ে যায় ।
বিজয় একাত্তর হলে গিয়ে দেখা গেছে ক্যান্টিনের দরজায় ‘আজ নাস্তা ও দুপুরের খাবার বন্ধ রয়েছে’ বলে লেখা রয়েছে। তবে কে বা কারা লিখেছে সেটা জানা যায়নি।
জহুরুল হক হলের এক শিক্ষার্থী জানান, সাধারণত ২ থেকে ২.৩০ টা পর্যন্ত খাবার পাওয়া গেলেও আজকে শেষ হয়েছে ১২টায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ভাত পাওয়া গেলেও তরকারি শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই।
দেখা গেছে, হলের মেইন ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা খাবার নেওয়ার স্থানে দাঁড়িয়ে তদারকি করছেন এবং বক্সে করে কর্মীদের উদ্দেশ্যে খাবার সরবরাহ করছে ।
হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলেও ছিল দুপুরের খাবারের প্রচণ্ড সংকট । দুপুর ১২টা পার না হতেই শেষ হয়ে যায় খাবার। ফলে অনেক শিক্ষার্থীকেই ক্ষুধা নিবারণ করতে বাধ্য হয়ে দোকান থেকে রুটি, কলা, বিস্কুট খেতে হয়েছে ।
জানতে চাইলে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান বলেন, আমার হলের কোন শিক্ষার্থী আমাকে এ বিষয়ে কোন অভিযোগ করেনি, তাই আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি ।
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, আমি ব্যাপারটা জানতাম না, কিছুক্ষণ আগেই সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমার দুঃখ এখানেই যে কোন শিক্ষার্থী আমাকে হলের পরিস্থিতি জানালো না। আমি সবসময়ই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করছি কিন্তু তারা যদি আমাকে সমস্যার কথা না জানায় তাহলে আমাকে গিয়ে সব বিষয় সমাধান করা সম্ভব না।
আজকের ক্যান্টিনের খাবার না পাওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, মালিকদের সাথে আমার চুক্তি শিক্ষার্থীদের খাবার নিশ্চিত করা। শিক্ষার্থীদের খাওয়ানোর পরে তারা হাজার মানুষকে খাওয়ালে আমার সমস্যা নেই। আমি মাঝেমধ্যেই তাদের জরিমানা করে থাকি এবার আমি তাদের বিরুদ্ধে বড় পদক্ষেপ নিবো।
জহুরুল হক হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহিম বলেন, আজকে ছাত্রলীগের সমাবেশ থাকায় বাইরের শিক্ষার্থীদের একটা চাপ রয়েছে সেজন্য খাবারের সাময়িক সংকট দেখা দিয়েছে। তবে আমি মনে করি হলের শিক্ষার্থীরা যথেষ্ট আন্তরিক এবং সবার স্বার্থে এই সাময়িক সমস্যা মানিয়ে নিয়েছেন।