শৃঙ্খলা কমিটির সভা: একদিনে বহিষ্কার ৮ শিক্ষার্থী

  • Update Time : ০৭:৪৭:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩
  • / 219

ইবি প্রতিনিধি:

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রী নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীকে এক বছরের বহিষ্কার ও চিকিৎসা কেন্দ্র ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত অভিযুক্ত তিন ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। শনিবার (১৫ জুলাই) বেলা ১১টায় উপাচার্যের কার্যালয়ে ২০২ নং কক্ষে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরীন আইন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনিচুর রহমান, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসানসহ শৃঙ্খলা কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধি অনুযায়ী তাদের এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ। তিনি বলেন ,‘মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, পরিক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে শৃঙ্খলা কমিটির সভায় চূড়ান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অন্তরাসহ অভিযুক্ত পাচজনের প্রত্যেককে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস কোড অব কন্ডাক্ট-১৯৮৭ এর পার্ট-২ এর ৮ ধারা মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি এক (১) বছরের জন্য ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে।

অন্যদিকে গত সোমবার (১০ জুলাই) মধ্যরাতে চিকিৎসা কেন্দ্র ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত ৩ ছাত্রকে জন্য সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনায় সাময়িক বহিষ্কার হয়েছেন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্যসহ তার দুই সহযোগী ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আতিক আরমান ও সালমান আজিজ।

ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় এক বছর বহিষ্কৃত অভিযুক্তরা হলেন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও চারুকলা বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মী।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেয়া চূড়ান্ত এ সিদ্ধান্তে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, তারা আমার উপর যে পরিমাণ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে তাতে তাদের এক বছরের শাস্তি কোনোভাবেই হতে পারেনা। এতে আমি সন্তুষ্ট না বরং আরো আতঙ্কিত। কারণ, তারাই থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হোক।

এ বিষয়ে বহিষ্কৃত সানজিদা চৌধুরী অন্তরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আমার আস্থা ছিল না। আমি ন্যায় বিচার পেলাম না। আমিও অভিযোগ করেছিলাম সেটার কোন সমাধান করেনি। তারা আমার সাথে অন্যায় করেছে।

এদিকে কাব্যের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় মধ্যরাতে চিকিৎসা কেন্দ্র ভাংচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্যসহ তার দুই সহযোগীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ সভায় উপাচার্যকে তদন্ত কমিটি গঠনের ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


শৃঙ্খলা কমিটির সভা: একদিনে বহিষ্কার ৮ শিক্ষার্থী

Update Time : ০৭:৪৭:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩

ইবি প্রতিনিধি:

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রী নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীকে এক বছরের বহিষ্কার ও চিকিৎসা কেন্দ্র ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত অভিযুক্ত তিন ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। শনিবার (১৫ জুলাই) বেলা ১১টায় উপাচার্যের কার্যালয়ে ২০২ নং কক্ষে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরীন আইন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনিচুর রহমান, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসানসহ শৃঙ্খলা কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধি অনুযায়ী তাদের এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ। তিনি বলেন ,‘মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, পরিক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে শৃঙ্খলা কমিটির সভায় চূড়ান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অন্তরাসহ অভিযুক্ত পাচজনের প্রত্যেককে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস কোড অব কন্ডাক্ট-১৯৮৭ এর পার্ট-২ এর ৮ ধারা মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি এক (১) বছরের জন্য ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে।

অন্যদিকে গত সোমবার (১০ জুলাই) মধ্যরাতে চিকিৎসা কেন্দ্র ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত ৩ ছাত্রকে জন্য সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনায় সাময়িক বহিষ্কার হয়েছেন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্যসহ তার দুই সহযোগী ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আতিক আরমান ও সালমান আজিজ।

ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় এক বছর বহিষ্কৃত অভিযুক্তরা হলেন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও চারুকলা বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মী।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেয়া চূড়ান্ত এ সিদ্ধান্তে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, তারা আমার উপর যে পরিমাণ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে তাতে তাদের এক বছরের শাস্তি কোনোভাবেই হতে পারেনা। এতে আমি সন্তুষ্ট না বরং আরো আতঙ্কিত। কারণ, তারাই থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হোক।

এ বিষয়ে বহিষ্কৃত সানজিদা চৌধুরী অন্তরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আমার আস্থা ছিল না। আমি ন্যায় বিচার পেলাম না। আমিও অভিযোগ করেছিলাম সেটার কোন সমাধান করেনি। তারা আমার সাথে অন্যায় করেছে।

এদিকে কাব্যের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় মধ্যরাতে চিকিৎসা কেন্দ্র ভাংচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্যসহ তার দুই সহযোগীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ সভায় উপাচার্যকে তদন্ত কমিটি গঠনের ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।