ঢাবিতে লাগাম ছাড়া খাবারের দাম : নাকাল হলের শিক্ষার্থীরা
- Update Time : ১১:০১:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩
- / 205
জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি
মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য পবিত্র মাহে রমজানকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ক্যানটিন, ডাইনিং ও দোকানগুলোতে খাবারের দাম অত্যাধিক হারে বাড়ানো হয়েছে।
ক্যানটিন-ক্যাফেটেরিয়ায় ঘুরে রেগুলার দামের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ দামে খাবার বিক্রি হতে দেখা গেছে । রমজানের প্রথম সাহ্রি থেকেই এই নতুন রেট চালু করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্যানটিনে খাবারের ধরনভেদে যে খাবার আগে ৪৫-৬০ টাকায় বিক্রি হতো সাহ্রিতে সেই একই মানের খাবার ৭০-৯০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
তবে হলের ডাইনিংয়ে বেশি দাম দিয়ে সাহ্রিতে কয়েক পদের তরকারিসহ কিছুটা ভালো মানের খাবার খেতে পারছেন শিক্ষার্থীরা। তবে এজন্য তাদের গড়ে (৮৫-১০০)টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে। যাকে লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি বলছেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, মাস্টারদা সূর্যসেন হল ও হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ঘুরে এ ধরনের চিত্র দেখা গেছে।
তবে ক্যানটিন ব্যবস্থাপকদের দাবি, সাহ্রির জন্য তুলনামূলক ভালো মানের খাবার রান্না করায় খরচ বেশি পড়ছে। কারও কারও অভিযোগ, ক্যানটিনগুলোতে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের কিছু নেতা-কর্মীর চাঁদাবাজি ও টাকা ছাড়াই খাওয়ার কারণে খাবারের দাম বাড়াতে হয়েছে।
বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ফাও খাওয়ার কারণে খাবারের দাম বাড়াতে হয় বলে জানিয়েছেন এক হলের ক্যানটিন ম্যানেজার। নাম না প্রকাশ করার শর্তে তিনি আরও বলেন, কতিপয় নেতাকে কিছুদিন পরপর চাঁদা দিতে হয়। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই দাম বাড়ানো হয়েছে।
মাস্টারদা সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের হলের ডাইনিংয়ে ৯২ টাকায় ভাতের সঙ্গে মাংস (গরু ও মুরগির মধ্যে যেকোনো একটি), মাছ ও ডিমের মধ্যে যেকোনো একটি এবং সবজি দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে বিনা মূল্যে থাকছে ডালও। তবে সেখানে খেতে হলে আগে একসঙ্গে টাকা জমা দিতে হয়।
অন্যদিকে ক্যানটিন-ক্যাফেটেরিয়ায় ভাতের সঙ্গে শুধু গরুর মাংস ৯০ টাকা, চিংড়ি মাছ ভুনা ৮০ টাকা এবং বিভিন্ন ধরনের মাছ ৭০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। সবজি খেতে চাইলে আরও ১০ টাকা এবং শাক খেতে চাইলে আরও ৫ টাকা দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ৭০ টাকার কমে সাহ্রিতে সেখানে কোনো খাবার নেই।
আর এই খাবারই রমজান আসার আগে তারা খেতেন ৪৫-৬০ টাকা দিয়ে ।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, জিয়াউর রহমান হল এবং বঙ্গবন্ধু হলের ক্যানটিনেও খাবারের অবস্থা সূর্যসেন হলের মতোই। ডাইনিংয়ে ৯০-১০০ টাকায় সাহ্রির খাবার দেওয়া হয়, আইটেম সূর্যসেন হলের মতোই।
রমজানে শিক্ষার্থীদের খাওয়ার খরচ অত্যাধিক পরিমাণে বেড়ে গেছে। এক দিনে এখন খাবারের পিছনেই ২০০-২৫০ টাকা ব্যয় হয়। রমজানের আগে যেখানে ১৫০-১৮০ টাকায় তিন বেলার খাবার পাওয়া যেত ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ক্যানটিনের খাবারের বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই হল প্রাধ্যক্ষদের একটি বৈঠক ডাকা হবে।
ক্যানটিনে খাবারের যে দাম রাখা হচ্ছে, তা কতটা যৌক্তিক, তা সেখানে পর্যালোচনা করা হবে বলে জানান তিনি।