‘গুম’ হওয়া রবীন্দ্রনাথকে আবারও টিএসসিতে ফিরিয়ে আনলেন শিক্ষার্থীরা
- Update Time : ১০:১৮:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
- / 148
জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি
আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ফিরিয়ে এনেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে এবার বাঁশ দিয়ে রবীন্দ্রনাথের দেহাবয়ব বানিয়ে সেই অবয়বের ওপর পূর্বে কবির ভেঙে ফেলা ভাস্কর্যের মাথা বসিয়ে রাজু ভাস্কর্যে স্থাপন করা হয়েছে।
এটির দুই পাশে দুটি ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একটিতে লেখা ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং সব ধরনের সেন্সরশিপ বন্ধ কর’, আরেক পাশের ব্যানারে লেখা ‘তোমার পূজার ছলে তোমায় ভুলেই থাকি।’
এর আগে ‘অপসংস্কৃতি’ আখ্যা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাশে বসানো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মুখবাঁধা ভাস্কর্য সরিয়ে ভেঙে ফেলেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আজ শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সেন্সরশিপ ও নিপীড়নের ঘটনার প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথের মুখবাঁধা ভাস্কর্যটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের যেসব শিক্ষার্থী বানিয়েছিলেন তারাই এই ‘প্রতিবাদী’ রবীন্দ্রনাথকে ফিরিয়ে এনেছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, প্রথম ব্যানারে দাবিগুলো লেখা হয়েছে। আর দ্বিতীয় ব্যানারে লেখা কথাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীর উদ্দেশে লেখা হয়েছে।
এ ভাস্কর্য বানানোর অন্যতম কারিগর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি শিমুল কুম্ভকার বলেন, ‘তোমার পূজার ছলে তোমায় ভুলেই থাকি’ লাইনটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। এটা প্রক্টরের উদ্দেশে লিখেছি। আমরা যখন প্রথম ভাস্কর্যটি বসাই তখন বলেছেন এটা অপসংস্কৃতি আর রবীন্দ্রনাথকে বিকৃত করা। অথচ তিনিই আবার সেই ভাস্কর্য ভেঙে ফেলেছেন। আমরা মনে করি ভেঙে ফেলার মাধ্যমে তিনিই রবীন্দ্রনাথকে অবমাননা করেছেন।’
শিমুল কুম্ভকার আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নেওয়া হয়নি দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথমে ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলেছেন।’
এবার অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে শিমুল কুম্ভকার বলেন, ‘এটা একটা প্রতিবাদ। পৃথিবীর কোথাও কোনো প্রতিবাদের জন্য কখনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। প্রক্টরের কাছে যদি অনুমতি চাইতাম তিনি যদি আমাদের অনুমতি না দিতেন তাহলে কি আমরা প্রতিবাদ করবো না? তাই অনুমতি নিয়ে ভাস্কর্য বসাতে হবে, এটা কুযুক্তি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্র ইউনিয়ন রাজু ভাস্কর্যে সবসময় তদারকি করছে। আমরা জানি ওখানে কোন জায়গায় কোন জিনিস কখন লাগানো যাবে। প্রক্টর আগে ওখানে ছাত্র ইউনিয়নকে না জানিয়ে কাউন্টডাউনের ক্লক লাগিয়েছেন। তখন তিনি ভয়াবহ অন্যায় করেছেন। সেই ব্যাপারে প্রক্টর কেন কথা বলেন না?’ জানতে চান শিমুল কুম্ভকার।
কোনো গোষ্ঠীর স্বার্থ-উদ্দেশ্য নিয়ে এই কাজ করা হচ্ছে উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘এটি অবৈধ পন্থায় আবারও স্থাপন করেছে। বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। আমরা আপনাদের মাধ্যমে (গণমাধ্যম) বলতে চাই, তারা যেন নিজ দায়িত্বে ভার্স্কযটি সরিয়ে নিয়ে যায়। অন্যথায় এটিকে কেন্দ্র করে কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনার সৃষ্টি হলে এর দায় তাদেরই নিতে হবে।’