মামুলি ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারধরের শিকার ইবি শিক্ষার্থী

  • Update Time : ০৭:৫৯:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / 216

শাহিন রাজা, ইবি:

সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮ টায় কুষ্টিয়া থেকে আসা বাসের সিট ধরা নিয়ে বাকবিতন্ডার জেরে বাস থেকে নামার পর ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম রিয়াদ হোসেন। তিনি হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের এম.বি.এ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এ ঘটনার বিচার চেয়ে মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহাদৎ হেসেন আজাদ ও ছাত্র-উপদেষ্টা শেলীনা নাসরীনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো সন্ধ্যায় টিউশন থেকে ফিরে বাসের সিট ধরেন রিয়াদ। এ সময় তার সিটে বসতে চাইলে ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ বর্ষের শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম তাকে বাঁধা দিয়ে বাসের পিছনের দরজা দিয়ে নেমে সামনের সিটে যেতে বলে। কিন্তু রিয়াদ তাদের কথা উপেক্ষা করে সামনে যেতে চাইলে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন ছাত্রলীগ কর্মী সামিউল। পরে রাত সাড়ে আটটায় বাস ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ে থামলে বাস থেকে নেমেই চড়াও হয় তার উপর। এসময় সাথে থাকা ছাত্রলীগ কর্মী তরিকুল ইসলাম তরুন, সিয়াম, নাবিল ও মিন্টুসহ রিয়াদের জামার কলার ধরে ৮-১০ জন ছেলে মারধর শুরু করেন। পরে রিয়াদকে তার সহপাঠীরা মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী রিয়াদ জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে মার খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে হচ্ছে আমার। এর থেকে বড় আফসোস কি আর হতে পারে? সামান্য একটি বিষয় নিয়ে তারা আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করলো। আমি তাদের সকলের বিচার চাই। সকালে এ বিষয়ে প্রশাসন বরাবর আবেদন করবো।’

এবিষয়ে সামিউল ইসলাম জানান, ‘বাসের মধ্যে প্রচুর ভিড় থাকায় ওকে ভিতর দিয়ে যেতে মানা করেছিলাম। কিন্তু ও না শুনে আমাদের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়। পরে ক্যাম্পাসে নেমে ওকে ডেকে বোঝাতে গেলে আমার হাত ঝাড়ি মেরে আবারো তর্কে লিপ্ত হয়। এসময় ও ওর বন্ধুদের নিয়ে আমাদের ওপর চড়াও হলে তাৎক্ষণিক হাতাহাতি হয়। আমি ওকে হুমকি-ধমকি দেইনি।’

সামিউলের বন্ধু তারিকুল ইসলাম তরুণ বলেন, ‘বাসে শিক্ষার্থীদের গাদাগাদির মধ্যেই তাড়াহুড়ো করে সামনে যেতে চাইলে কিছুটা কথাকাটাকাটি হয়। পরে ক্যাম্পাসে নেমে তাকে ডেকে কথা বলতে গেলে উল্টো আমাদের উপরই চড়াও হয়। তখন ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আমরা কয়েকজন ছিলাম একসঙ্গে ওই ছেলের সাথেও তার বন্ধুরা ছিল।’

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ‘আমি যতটুকু শুনেছি বাসে কথা কাটাকাটির পর ক্যাম্পাসে রিয়াদ ও তার বন্ধুরা সামিউলদের উপর চড়াও হয়। এতে ধস্তাধস্তি হয়। এখন আবার দেখছি রিয়াদ প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।’

এ বিষয়ে ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আগামীকাল আমরা বিষয়টি নিয়ে বসবো।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি নিয়ে বসে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তের বক্তব্য শুনে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিবো।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


মামুলি ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারধরের শিকার ইবি শিক্ষার্থী

Update Time : ০৭:৫৯:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

শাহিন রাজা, ইবি:

সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮ টায় কুষ্টিয়া থেকে আসা বাসের সিট ধরা নিয়ে বাকবিতন্ডার জেরে বাস থেকে নামার পর ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম রিয়াদ হোসেন। তিনি হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের এম.বি.এ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এ ঘটনার বিচার চেয়ে মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহাদৎ হেসেন আজাদ ও ছাত্র-উপদেষ্টা শেলীনা নাসরীনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো সন্ধ্যায় টিউশন থেকে ফিরে বাসের সিট ধরেন রিয়াদ। এ সময় তার সিটে বসতে চাইলে ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ বর্ষের শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম তাকে বাঁধা দিয়ে বাসের পিছনের দরজা দিয়ে নেমে সামনের সিটে যেতে বলে। কিন্তু রিয়াদ তাদের কথা উপেক্ষা করে সামনে যেতে চাইলে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন ছাত্রলীগ কর্মী সামিউল। পরে রাত সাড়ে আটটায় বাস ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ে থামলে বাস থেকে নেমেই চড়াও হয় তার উপর। এসময় সাথে থাকা ছাত্রলীগ কর্মী তরিকুল ইসলাম তরুন, সিয়াম, নাবিল ও মিন্টুসহ রিয়াদের জামার কলার ধরে ৮-১০ জন ছেলে মারধর শুরু করেন। পরে রিয়াদকে তার সহপাঠীরা মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী রিয়াদ জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে মার খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে হচ্ছে আমার। এর থেকে বড় আফসোস কি আর হতে পারে? সামান্য একটি বিষয় নিয়ে তারা আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করলো। আমি তাদের সকলের বিচার চাই। সকালে এ বিষয়ে প্রশাসন বরাবর আবেদন করবো।’

এবিষয়ে সামিউল ইসলাম জানান, ‘বাসের মধ্যে প্রচুর ভিড় থাকায় ওকে ভিতর দিয়ে যেতে মানা করেছিলাম। কিন্তু ও না শুনে আমাদের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়। পরে ক্যাম্পাসে নেমে ওকে ডেকে বোঝাতে গেলে আমার হাত ঝাড়ি মেরে আবারো তর্কে লিপ্ত হয়। এসময় ও ওর বন্ধুদের নিয়ে আমাদের ওপর চড়াও হলে তাৎক্ষণিক হাতাহাতি হয়। আমি ওকে হুমকি-ধমকি দেইনি।’

সামিউলের বন্ধু তারিকুল ইসলাম তরুণ বলেন, ‘বাসে শিক্ষার্থীদের গাদাগাদির মধ্যেই তাড়াহুড়ো করে সামনে যেতে চাইলে কিছুটা কথাকাটাকাটি হয়। পরে ক্যাম্পাসে নেমে তাকে ডেকে কথা বলতে গেলে উল্টো আমাদের উপরই চড়াও হয়। তখন ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আমরা কয়েকজন ছিলাম একসঙ্গে ওই ছেলের সাথেও তার বন্ধুরা ছিল।’

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ‘আমি যতটুকু শুনেছি বাসে কথা কাটাকাটির পর ক্যাম্পাসে রিয়াদ ও তার বন্ধুরা সামিউলদের উপর চড়াও হয়। এতে ধস্তাধস্তি হয়। এখন আবার দেখছি রিয়াদ প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।’

এ বিষয়ে ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আগামীকাল আমরা বিষয়টি নিয়ে বসবো।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি নিয়ে বসে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তের বক্তব্য শুনে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিবো।’