শতবর্ষে প্রথমবারের মতো ‘গবেষণা-প্রকাশনা মেলা’ আয়োজন করলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- Update Time : ০৯:৫৬:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ অক্টোবর ২০২২
- / 224
ঢাবি প্রতিনিধি:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হলো ‘গবেষণা-প্রকাশনা মেলা’ । প্রতিষ্ঠার শততম বর্ষে এসে এ মেলা আয়োজন করা হলো।
আজ শনিবার(২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের পরিবেশনায় জাতীয় সঙ্গীত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থিম সং পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সূচনা করা হয়।
দুইদিন ব্যাপী আয়োজিত গবেষণা -প্রকাশনা মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় বক্তারা অ্যালাইমনাইদের উদ্যোগে বিশেষ গবেষণা ফান্ড গঠন, প্রাইভেট সেক্টর ও অ্যালাইমনাইদের একাডেমিয়ায় যুক্ত করা, কমিউনিটি ও ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা অনুযায়ী কারিকুলাম প্রণয়ন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি ইত্যাদি বিষয়ে জোর দিয়েছেন।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন। তার বক্তব্যে তিনি বলেন, আজকে আমরা রপ্তানি বহুমুখী করার কথা বলছি। কিন্তু রপ্তানির বড় সেক্টর গার্মেন্টসের তুলা আমরা উৎপাদন করতে পারি না, আমদানি করতে হয়। চামড়ার একটি বিশাল বাজার রয়েছে। গবেষণার জন্য নতুন আখ হচ্ছে না। বিশালাকায় ১৭ টি সুগারমিল থাকা সত্ত্বেও নতুনত্ব না আনায় প্রাইভেট উদ্যোক্তাগুলো বাজার নিয়ে যাচ্ছে, আমরা তাদের হাতে জিম্মি হয়ে গেছি। সেখানেও গবেষণা দরকার। এ ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, আজকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আসন্ন। সেখানে আমাদের যে কর্মী বাহিনী আছে, তারা কর্মহীন হয়ে পড়ে কিনা সেটা ভাবতে হচ্ছে। আমাদের সুদক্ষ কর্মীবাহিনী তৈরি করতে হবে।
শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন বলেন, একাডেমিক লক্ষ্য অর্জনে একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যানকে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। তার সঙ্গে অবকাঠামো সংযুক্ত থাকবে। গবেষণার সর্বোচ্চ বরাদ্দ হওয়ার ব্যাপারে আমরা একমত। তবে শুধুমাত্র সরকারি বরাদ্দে সম্ভব নয়। বিদেশে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ রয়েছে। আমাদের দেশে শিল্প, বাণিজ্য, প্রযুক্তিতে প্রাইভেট সেক্টরের বিরাট প্রভাব রয়েছে।
অ্যালাইমনাইরা এখানে পড়ে অনেকে সমৃদ্ধ, অর্থশালী হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন,বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের একটি স্পেশাল সমন্বিত গবেষণা ফান্ড থাকা উচিত।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আমাদের দেশে শিক্ষা ও সংস্কৃতি নীতিতে ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সম্পর্ক, কমিউনিটি অ্যাঙ্গেজমেন্ট, এলায়েন্স, কোলাবোরেশন মারাত্মকভাবে অনুপস্থিত। আমরা বিষয়টিতে জোর দিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন জ্ঞান সৃষ্টির পাশাপাশি বিতরণেরও উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের বিপুল সংখ্যক মৌলিক গ্রন্থ, জার্নাল, গবেষণা প্রকাশনা রয়েছে এবং চলমান রয়েছে। সেখানে কমিউনিটির সম্পৃক্ততা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ের জন্য বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি খুব জরুরি। আমাদের দেশে ভর্তির দীর্ঘসূত্রিতা ও জটিলতায় বিদেশি শিক্ষার্থীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বিদ্যমান নীতি পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ জানানো হবে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানে প্রভাব পড়বে।
মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট, গবেষণাকেন্দ্র ও বিভিন্ন শিল্প-প্রতিষ্ঠান শতাধিক স্টল ও প্যাভিলিয়নে তাদের উদ্ভাবন, গবেষণা ও প্রকাশনা তুলে ধরছে। দু’দিনব্যাপী এই মেলা সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বক্তব্য দেন।