ঢাবিতে প্রাধ্যক্ষকে মৃত ঘোষণা করে ব্যাঙ্গাত্মক প্রতিবাদ ; বিরোধিতা করে ছাত্রলীগের সংবাদ সম্মেলন
- Update Time : ০৯:৫৩:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২
- / 211
জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধিঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মকবুল হোসেন ভূঁইয়াকে মৃত ঘোষণা করে হলের দেয়ালে সাঁটানো ‘শোক সংবাদ’ এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে হল শাখা ছাত্রলীগ ।
সংবাদ সম্মেলনে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মারিয়াম জাহান খান এবং সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমান বক্তব্য দেন। এসময় হল প্রাধ্যক্ষ্য মকবুল হোসেন ভূঁইয়ার মৃত্যুর সংবাদ সংবলিত পোস্টার হলের বিভিন্ন স্থানে সাঁটানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করা হয়। প্রমাণ পেলে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানানো হয়। এছাড়াও ছাত্রলীগেরও কেউ ঘটনার সাথে জড়িত থাকলে সাংগঠিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান নেতারা।
এসময় সিয়াম রহমান বলেন, রাতের আঁধারে গুজব রটিয়ে সম্মানিত শিক্ষকদের হেয় প্রতিপন্ন করে সাধারণ শিক্ষার্থী ও হল প্রশাসনের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা কখনও সাধারণ ও সচেতন শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না।
একটি কুচক্রী মহল এই কাজটি করেছে উল্লেখ করে মাস্টারদা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মারিয়াম জাহান খান বলেন, মহলটি দীর্ঘদিন থেকে হল প্রশাসনকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত। মাস্টারদা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগ মনে করে গুটিকয়েক স্বার্থান্বেষী শিক্ষার্থী ও কতিপয় বহিরাগত এইরূপ ধৃষ্টতাপূর্ণ কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। এরকম ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মাস্টারদা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগ পরিবার সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে মৌন সমর্থন ও একাত্মতা পোষণ করছে।
তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলের সমস্যা সমাধানে একদমই তৎপর নন প্রাধ্যক্ষ। তারা বলছেন, এক মাস ধরে হলের ক্যানটিন বন্ধ। হলের ইন্টারনেট সেবা (ওয়াই-ফাই) নিম্নমানের। দোকানগুলোতে একধরনের নৈরাজ্য চলছে—জিনিসপত্রের দাম অন্য হলের চেয়ে বেশি। হলের মেসে গ্যাসের সংকট চলছে। পানির পর্যাপ্ত ফিল্টার নেই। হলের শৌচাগারগুলো খুবই অপরিচ্ছন্ন।
মাস্টারদা সূর্য সেন হলে গিয়ে দেখা যায়, দেয়ালের মধ্যে প্রাধ্যক্ষের ছবি দিয়ে এতে লেখা হয়েছে, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হলের সম্মানিত প্রভোস্ট জনাব মকবুল হোসেন ভূঁইয়া ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না-লিল্লাহ…)। তাঁর অকালপ্রয়াণে মাস্টারদা সূর্য সেন হল পরিবার অত্যন্ত শোকাহত৷ মৃত্যুকালে তিনি ১ ছেলে, ১ মেয়ে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন৷ শোকান্তে: মাস্টারদা সূর্য সেন হল পরিবার।’
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বারবার এসব সমস্যার কথা জানানো হলেও তা সমাধানে প্রাধ্যক্ষের কোনো তৎপরতা নেই। আর এসব কারণেই প্রাধ্যক্ষের নামে শোক সংবাদ সাঁটিয়েছেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
তবে এরূপ কাজে ‘মর্মাহত’ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ মকবুল হোসেন ভূঁইয়া।
শোক সংবাদে সাঁটানোর বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মকবুল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘কে বা কারা শোক সংবাদ সাঁটিয়েছেন, কেনই–বা সাঁটিয়েছেন, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। হলে বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে। কিন্তু তাই বলে মৃত্যুসংবাদ প্রচার করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাজ হতে পারে না। আমারও তো পরিবার-আত্মীয়স্বজন আছে৷’
মোহাম্মদ মকবুল হোসেন ভূঁইয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক।
উল্লেখ্য, এর আগেও শিক্ষার্থীরা একই অভিযোগ তুলে গত বছরের নভেম্বরে প্রাধ্যক্ষ মকবুল হোসেন ভূঁইয়ার নামে ‘নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি’ সাঁটিয়েছিলেন ।