ঢাবি মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন ঘটাতে মরিয়া শিক্ষার্থী

  • Update Time : ১২:২২:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ এপ্রিল ২০২২
  • / 190

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি:

চিকিৎসা নিতে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারেই অনশনে বসলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী।
ঢাবি মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন নিশ্চিত করা সহ ৬ দফা দাবি আদায়ে অনশনে বসেছেন তিনি।

জানা গেছে, তিনি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এবং শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।

আজ,শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে তিনি জানান, আমার হল প্রোভোস্ট স্যার, আমার বড় ভাইয়েরা, আমার পরিবারের সবাই আমাকে স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিতে চাচ্ছেন। তাদের প্রতি আমি অনেক কৃতজ্ঞ।

কিন্ত আজ যদি আমি এখান থেকে চলে যাই তাহলে এই মেডিকেল সেন্টারের পরিবর্তন আর কখনোই আসবে না। আধুনিকায়ন আর কখনোই হবে না।

তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি প্রয়োজনে একটি পা স্যাক্রিফাইস করার জন্য প্রস্তত। তবুও আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন না দেখে যাবো না।

গতকাল এই মেডিকেল সেন্টারের পরিচালক মহোদয় এসেছিলেন এবং তার কাছে সব চাওয়া পাওয়া উপস্থাপন করলে তিনি, তার সীমাবদ্ধতা এবং অপ্রতুলতার কথাও স্বীকার করেন।

কিন্ত আমি তাদের কথায় কনভিন্স হতে পারছি না।১০০ বছর বয়স এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মেডিকেল ফি জমা না দিয়ে পরিক্ষার হলে বসতে পারে না। পরিক্ষা দিতে পারে না।

ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের কমিউনিটি মেডিকেল সেন্টার এটা। ১০০ বছর পরেও, ” কিছুই নেই, আমাদের কিছু করার নেই।” এই কথাগুলো কেন শুনবো আমরা.?

আজ যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন! বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষেও আজ বঙ্গবন্ধুর আইন বিভাগের সামনে এত বড় একটা অব্যাবস্থাপনা.. এইটা কি বঙ্গবন্ধুকে অসম্মান করা নয়.?

এখানে গেলেই শিক্ষার্থীদের হাতে সকল রোগের মহৌষধ বলে প্যারাসিটামল দেওয়া হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন আমার দাবি রমজানে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের আগেই আমার সুস্থ হওয়ার পূর্বেই ৬ দফা দাবি নিশ্চিত করতে হবে।

তার এই ৬ দফা দাবি হলো :

১. মেডিকেল সেন্টারের এন্ট্রি পয়েন্টে ইনফরমেশন ডেস্ক স্থাপন করতে হবে।
২. প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক লিফট, র‍্যাম্প, হুইল চেয়ার ও অন্যান্য এক্সেসোরিজ প্রদান করতে হবে।
৩. মেয়ে শিক্ষার্থীদের অন্তর্বর্তীকালীন শারীরিক সমস্যার সকল চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় টিকা প্রদান করতে হবে।
৪. অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় আধুনিক চিকিৎসা সামগ্রী ও ওষুধ প্রদান এবং প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট বা মেশিন স্থাপন করতে হবে।
৫.অতিদ্রুত মেডিকেল সেন্টার কর্তৃক নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার প্রদান ও ক্যান্টিন স্থাপন নিশ্চিত করতে হবে।
৬. অতিদ্রুত হাইকমোড, তথা হাইলি ডেকোরেটেড স্যানিটেশন সিস্টেমে টয়লেট, বাথরুম তৈরি করতে হবে।

সর্বোপরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন নিশ্চিত করা চাই।

তিনি আরও বলেন, আগামী ১২ ঘন্টায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই দাবি পূরণের পরিপূর্ণ নিশ্চয়তা, আশ্বাস এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ শুরু না করলে আমার এই অনশন আমরণ অনশনে রূপান্তরিত হবে।তিনি আজকের ওষুধ, খাবার খাওয়া বন্ধ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

প্রসঙ্গত, মহিউদ্দিন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়ে গত পাঁচ দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে অবস্থান করছেন। কিন্তু মেডিকেল সেন্টারের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা দেখে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে এসংক্রাত একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ঢাবি মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন ঘটাতে মরিয়া শিক্ষার্থী

Update Time : ১২:২২:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ এপ্রিল ২০২২

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি:

চিকিৎসা নিতে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারেই অনশনে বসলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী।
ঢাবি মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন নিশ্চিত করা সহ ৬ দফা দাবি আদায়ে অনশনে বসেছেন তিনি।

জানা গেছে, তিনি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এবং শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।

আজ,শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে তিনি জানান, আমার হল প্রোভোস্ট স্যার, আমার বড় ভাইয়েরা, আমার পরিবারের সবাই আমাকে স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিতে চাচ্ছেন। তাদের প্রতি আমি অনেক কৃতজ্ঞ।

কিন্ত আজ যদি আমি এখান থেকে চলে যাই তাহলে এই মেডিকেল সেন্টারের পরিবর্তন আর কখনোই আসবে না। আধুনিকায়ন আর কখনোই হবে না।

তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি প্রয়োজনে একটি পা স্যাক্রিফাইস করার জন্য প্রস্তত। তবুও আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন না দেখে যাবো না।

গতকাল এই মেডিকেল সেন্টারের পরিচালক মহোদয় এসেছিলেন এবং তার কাছে সব চাওয়া পাওয়া উপস্থাপন করলে তিনি, তার সীমাবদ্ধতা এবং অপ্রতুলতার কথাও স্বীকার করেন।

কিন্ত আমি তাদের কথায় কনভিন্স হতে পারছি না।১০০ বছর বয়স এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মেডিকেল ফি জমা না দিয়ে পরিক্ষার হলে বসতে পারে না। পরিক্ষা দিতে পারে না।

ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের কমিউনিটি মেডিকেল সেন্টার এটা। ১০০ বছর পরেও, ” কিছুই নেই, আমাদের কিছু করার নেই।” এই কথাগুলো কেন শুনবো আমরা.?

আজ যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন! বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষেও আজ বঙ্গবন্ধুর আইন বিভাগের সামনে এত বড় একটা অব্যাবস্থাপনা.. এইটা কি বঙ্গবন্ধুকে অসম্মান করা নয়.?

এখানে গেলেই শিক্ষার্থীদের হাতে সকল রোগের মহৌষধ বলে প্যারাসিটামল দেওয়া হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন আমার দাবি রমজানে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের আগেই আমার সুস্থ হওয়ার পূর্বেই ৬ দফা দাবি নিশ্চিত করতে হবে।

তার এই ৬ দফা দাবি হলো :

১. মেডিকেল সেন্টারের এন্ট্রি পয়েন্টে ইনফরমেশন ডেস্ক স্থাপন করতে হবে।
২. প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক লিফট, র‍্যাম্প, হুইল চেয়ার ও অন্যান্য এক্সেসোরিজ প্রদান করতে হবে।
৩. মেয়ে শিক্ষার্থীদের অন্তর্বর্তীকালীন শারীরিক সমস্যার সকল চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় টিকা প্রদান করতে হবে।
৪. অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় আধুনিক চিকিৎসা সামগ্রী ও ওষুধ প্রদান এবং প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট বা মেশিন স্থাপন করতে হবে।
৫.অতিদ্রুত মেডিকেল সেন্টার কর্তৃক নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার প্রদান ও ক্যান্টিন স্থাপন নিশ্চিত করতে হবে।
৬. অতিদ্রুত হাইকমোড, তথা হাইলি ডেকোরেটেড স্যানিটেশন সিস্টেমে টয়লেট, বাথরুম তৈরি করতে হবে।

সর্বোপরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন নিশ্চিত করা চাই।

তিনি আরও বলেন, আগামী ১২ ঘন্টায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই দাবি পূরণের পরিপূর্ণ নিশ্চয়তা, আশ্বাস এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ শুরু না করলে আমার এই অনশন আমরণ অনশনে রূপান্তরিত হবে।তিনি আজকের ওষুধ, খাবার খাওয়া বন্ধ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

প্রসঙ্গত, মহিউদ্দিন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়ে গত পাঁচ দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে অবস্থান করছেন। কিন্তু মেডিকেল সেন্টারের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা দেখে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে এসংক্রাত একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন।