খুঁটি হওয়ার ৪ বছরেও হয়নি কুবির দত্ত হলের গেইট
- Update Time : ১০:১৯:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ মার্চ ২০২২
- / 179
সাঈদ হাসান, কুবি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের খুঁটি নির্মাণ হওয়ার ৪ বছরেও হয়নি মূল গেইট। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তর জানায় শেখ হাসিনা হলের নির্মাণ প্রকল্প থেকে হলের রাস্তা নির্মানের বাজেট নির্ধারণ করায় এই জটিলতা তৈরী হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী এক প্রকল্প থেকে অন্য প্রকল্পের কাজ করানো সুযোগ না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে কাজের অনুমতি দেয় প্রশাসন। তবে গেইট না থাকায় নিরপত্তাহীনতায় ভুগছে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনে ২০১৭ সালে প্রশাসন শেখ হাসিনা হলের নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়। কিন্তু প্রকল্পের কাজ শুরু হয় তৎকালীন দত্ত হলে প্রবেশের রাস্তার উপর। তখন হলটির প্রবেশ পথ পরিবর্তন করা হয়। পরে শেখ হাসিনা হলের বাজেট থেকে এই রাস্তা ও গেইট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এতে প্রায় ১০০ ফিট রাস্তার জন্য ২৪ লক্ষ ২২হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে।
যেখানে বালি ভরাট বাবদ ৫০ হাজার টাকা, মাটি কাটা ৬২ হাজার টাকা, বিএফএস ১ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা, আরসিসি ১০ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা, রড ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, সি সি ৬০ হাজার টাকা, এন সি এফ বাবদ ১ লক্ষ টাকা ব্যায় দেখানো হয়ছে।
কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তা নির্মিত হলেও গেইটের স্থানে শুধুমাত্র দুটি খুঁটি রয়েছে। আবার নির্মিত রাস্তাটি অধিক খাড়া হওয়া যেকোনো মোটর সাইকেল কিংবা অন্যান্য পরিবহন উঠানামা করতে অধিক ঝুঁকির মুখোমুখি হতে হয়। হলে আবাসিক শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি আবাসিক হলের গেইট থাকলেও এখন পর্যন্ত দত্ত হলে কোন গেইট নির্মাণ করা হয় নি। যা দায়িত্বহীনতার পরিচয়। ২০১৭ সালে হলের নতুন প্রবেশপথের জন্য পূর্ব-দক্ষিন পার্শ্বে পাহাড় কেটে দায়সারাভাবে রাস্তা নির্মাণ করা হয়। কিন্তু প্রবেশমুখে গেট নির্মাণের জন্য দুটি খুঁটি নির্মাণ করা হলেও পরবর্তীতে আর গেট নির্মাণ করেনি কতৃপক্ষ।
শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এম সাকিব হোসেন বলেন, হলের প্রবেশ মুখে গেইট নেই তবে ২টি খুঁটি থাকায় বিষয়টি খুবই দৃষ্টিকটু দেখা যায়। এছাড়া দত্ত হলের নিজস্ব কোন গেইট না থাকায় হলের শিক্ষার্থীরা নিরপত্তাহীনতায় ভুগছে।
এক প্রকল্প থেকে অন্য প্রকল্পের কাজ কেন করা হয়েছে জানতে চাওয়া হলে ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি তো নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করতে পারি না। আমাকে যেভাবে নির্দেশ দেওয়া হয় সেভাবে কাজ করি। এখানে যে টাকা খরচ হয়ছে সেটা পরবর্তীতে রিভাইজ বাজেট করা হয়ছে।
প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান নির্বাহী এস. এম. শহিদুল ইসলাম বলেন, এক প্রকল্প থেকে অন্য প্রকল্প পাশাপাশি হলে কাজ করা যায়। যেহেতু শেখ হাসিনা হল দত্ত হলের রাস্তার উপর করা হচ্ছে এবং দত্ত হলের গেইটের জন্য আলাদা কোন বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। আমরা শেখ হাসিনা হলের টাকা থেকে এই রাস্তা করেছি।
তবে গেইটের খুৃ্ঁটির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, পরবর্তীতে যদি গেইট করতে চায় তাহলে যেন নতুন ভাবে মাটি খনন করা না লাগে সেজন্য এইভাবে করে রাখা হয়েছে।’
দত্ত হলের প্রোভস্ট ড. মিজানুর রহমান বলেন, এটা আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমি নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছি। গেইট নির্মাণের জন্য কোন কাগজ পত্র নেই। হল প্রশাসনের উদ্যোগে গেইট করার ক্ষমতা নেই।আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিবো।
উপাচার্য প্রফেসর ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন বলেন, আমি সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তর কে নির্দেশ দিয়েছি দ্রুততর সময়ে কিভাবে গেইট নির্মাণ করা যায় সেটা আমাকে জানাতে। ওরা আমাকে দ্রুত পরিকল্পনা দিয়ে দিবে। এরপর কাজ শুরু করার নির্দেশ দিবো।
বার্তাপ্রেরক: সাঈদ হাসান
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
মোবাইল:০১৮৬৪৪৩৩৮০৩