দুই জেলায় ৪ ‘মাদক কারবারি’ গুলিতে নিহত

  • Update Time : ০৭:২০:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জুলাই ২০২০
  • / 123
নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকার দিয়াবাড়ি ও কক্সবাজারের টেকনাফে আলাদা দুটি কথিত ‘গোলাগুলির’ ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন, যারা সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি বলে দাবি করছে পুলিশ। দুটি গোলাগুলি হয়েছে বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে ও শুক্রবার ভোরে।

এর মধ্যে দিয়াবাড়িতে র‌্যাবের সঙ্গে গোলাগুলিতে ঘটনায় দুই মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। আর টেকনাফের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে মাদক কারবারিদের সঙ্গে পুলিশের। সেখানে মারা যাওয়া দুই মাদক কারবারির মধ্যে একজন রোহিঙ্গা। অন্যজন সাবেক এক ইউপি সদস্য।

রাজধানীর তুরাগ থানার দিয়াবাড়ি এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে কথিত ‘গোলাগুলিতে’ দুজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ২টা ৩০ মিনিটের দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ইব্রাহিম খলিল (৪৫) ও ওমর ফারুক (৩৫)। খলিলের বাড়ি নরসিংদী আর ফারুকের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে। এ ঘটনায় একজন র‌্যাব সদস্য আহত হয়েছেন।

র‌্যাব-১ এর কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দিয়াবাড়িতে র‌্যাব চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছিল। একটি মোটর সাইকেলকে থামার সঙ্কেত দিলে আরোহীরা না থেমে র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এসময় র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ দুজনকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসত তাদের মৃত ঘোষণা করে। ঘটনাস্থল থেকে তিন হাজার ৯০ কেজি ইয়াবাসহ দেশি-বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে ‘গোলাগুলিতে’ এক রোহিঙ্গাসহ দুই মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। ভোরে টেকনাফের হ্নীলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- উখিয়ার কুতুপালংয়ের মৃত কালা মিয়ার ছেলে মৌলভী বখতিয়ার এবং একই এলাকার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইউছুপ আলীর ছেলে মো. তাহের। তাদের মধ্যে বখতিয়ার উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য ছিলেন। নিহত দুইজনই এলাকার শীর্ষ মাদক কারবারি। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মাদক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে টেকনাফের হ্নীলার ওয়াব্রাংয়ে অভিযান চালিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইউনুছকে ২০ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে পুলিশ উখিয়ার কুতুপালং ই ব্ল-কের ইউনুছ আলীর ছেলে ও স্থলবন্দর ব্যবসায়ী রোহিঙ্গা মো. তাহেরকে গ্রেপ্তার করে।

তাহেরের ভাষ্যমতে উদ্ধার ইয়াবার প্রকৃত মালিক উখিয়া কুতুপালংয়ের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বখতিয়ারের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবা বিক্রির নগদ ১০ লাখ টাকা এবং ২০ হাজার ইয়াবাসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ভোরে তাদের নিয়ে মিয়ানমার থেকে আনা হ্নীলার ওয়াব্রাংয়ে আকাশী গাছের বাগানে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে গেলে তাদের সহযোগী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে দুই মাদক কারবারি গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের কক্সবাজারে পাঠান। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি দেশীয় তৈরি এলজি, ইয়াবা বিক্রির ১০ লাখ টাকা, ১৭ রাউন্ড কার্তুজ, ১৩ রাউন্ড কার্তুজের খোসা এবং ৪০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


দুই জেলায় ৪ ‘মাদক কারবারি’ গুলিতে নিহত

Update Time : ০৭:২০:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জুলাই ২০২০
নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকার দিয়াবাড়ি ও কক্সবাজারের টেকনাফে আলাদা দুটি কথিত ‘গোলাগুলির’ ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন, যারা সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি বলে দাবি করছে পুলিশ। দুটি গোলাগুলি হয়েছে বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে ও শুক্রবার ভোরে।

এর মধ্যে দিয়াবাড়িতে র‌্যাবের সঙ্গে গোলাগুলিতে ঘটনায় দুই মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। আর টেকনাফের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে মাদক কারবারিদের সঙ্গে পুলিশের। সেখানে মারা যাওয়া দুই মাদক কারবারির মধ্যে একজন রোহিঙ্গা। অন্যজন সাবেক এক ইউপি সদস্য।

রাজধানীর তুরাগ থানার দিয়াবাড়ি এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে কথিত ‘গোলাগুলিতে’ দুজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ২টা ৩০ মিনিটের দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ইব্রাহিম খলিল (৪৫) ও ওমর ফারুক (৩৫)। খলিলের বাড়ি নরসিংদী আর ফারুকের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে। এ ঘটনায় একজন র‌্যাব সদস্য আহত হয়েছেন।

র‌্যাব-১ এর কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দিয়াবাড়িতে র‌্যাব চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছিল। একটি মোটর সাইকেলকে থামার সঙ্কেত দিলে আরোহীরা না থেমে র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এসময় র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ দুজনকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসত তাদের মৃত ঘোষণা করে। ঘটনাস্থল থেকে তিন হাজার ৯০ কেজি ইয়াবাসহ দেশি-বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে ‘গোলাগুলিতে’ এক রোহিঙ্গাসহ দুই মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। ভোরে টেকনাফের হ্নীলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- উখিয়ার কুতুপালংয়ের মৃত কালা মিয়ার ছেলে মৌলভী বখতিয়ার এবং একই এলাকার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইউছুপ আলীর ছেলে মো. তাহের। তাদের মধ্যে বখতিয়ার উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য ছিলেন। নিহত দুইজনই এলাকার শীর্ষ মাদক কারবারি। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মাদক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে টেকনাফের হ্নীলার ওয়াব্রাংয়ে অভিযান চালিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইউনুছকে ২০ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে পুলিশ উখিয়ার কুতুপালং ই ব্ল-কের ইউনুছ আলীর ছেলে ও স্থলবন্দর ব্যবসায়ী রোহিঙ্গা মো. তাহেরকে গ্রেপ্তার করে।

তাহেরের ভাষ্যমতে উদ্ধার ইয়াবার প্রকৃত মালিক উখিয়া কুতুপালংয়ের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বখতিয়ারের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবা বিক্রির নগদ ১০ লাখ টাকা এবং ২০ হাজার ইয়াবাসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ভোরে তাদের নিয়ে মিয়ানমার থেকে আনা হ্নীলার ওয়াব্রাংয়ে আকাশী গাছের বাগানে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে গেলে তাদের সহযোগী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে দুই মাদক কারবারি গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের কক্সবাজারে পাঠান। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি দেশীয় তৈরি এলজি, ইয়াবা বিক্রির ১০ লাখ টাকা, ১৭ রাউন্ড কার্তুজ, ১৩ রাউন্ড কার্তুজের খোসা এবং ৪০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।