রাবির বিদায়ী উপাচার্যের পেছনের ব্যক্তিদের খোঁজা হচ্ছে

  • Update Time : ০৫:৩২:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মে ২০২১
  • / 172

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ ও নিয়মবর্হিভূতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে জনবল নিয়োগ দিয়েছেন।

সদ্য বিদায়ী উপাচার্য কেন নির্দেশনা অমান্য করে নিয়োগ কার্যকর করেছেন তার কারণ খতিয়ে দেখছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এর পেছনে কারও হাত রয়েছে কি-না তাও দেখা হচ্ছে।

রোববার (৯ মে) তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা জানান, রাবির উপাচার্য নিজ ক্ষমতা বলে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সহায়তায় নিয়ামবর্হিভূত ১৩৭ জন জনবল নিয়োগ দিয়েছেন। সেই নিয়োগ পত্রে বর্তমান রেজিস্ট্রার ও সহকারী রেজিস্ট্রার সাক্ষর করেননি। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অনিয়ম-দুর্নীতি ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জনবল নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন উপাচার্য। তার সঙ্গে কারা জড়িত, কেনই বা উপাচার্য নির্দেশনা অমান্য করে নিয়োগ দিয়েছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা তা খতিয়ে দেখছেন।

তারা বলেন, চার সদস্যের তদন্ত কমিটির সদস্যরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সরেজমিনে গিয়েছেন। সেখানে থাকা নিয়োগ সংক্রান্ত সব কাগজপত্র সংগ্রহ করেছেন। সেসব কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তদন্ত কিমিটির আহ্বায়ক ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর রোববার বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে সব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এই নিয়োগ যে অবৈধ তা উপাচার্য নিজেও জানেন। তারপরেও কেন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এত বিশাল সংখ্যক জনবল নিয়োগ দিলেন তা আমরা খতিয়ে দেখছি। এর পেছনে কেউ রয়েছে কি-না তাও দেখা হচ্ছে।’

ঈদের পর পর তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

গত বৃহস্পতিবার (৬ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব শামীমা বেগম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটি গঠন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কমিটিতে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে আহ্বায়ক করে এ প্রতিষ্ঠানের আরেক সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. জাকির হোসেনকে সদস্য করে ইউজিসির পরিচালক (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) মোহাম্মদ জামিনুর রহমানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। পরদিন শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করা হয়।

উল্লেখ্য ২০১৭ সালের ৭ মে দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য পদে নিয়োগ পান অধ্যাপক আব্দুস সোবহান। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে যোগ্যতা শিথিল করে মেয়ে-জামাতাকে নিয়োগসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। গত বছর ইউজিসির তদন্তে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের নিয়োগ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। তবে শেষ দিনে সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে ১৩৭ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ায় রুটিন দায়িত্ব পেয়েছেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা। গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব শামীমা বেগম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


রাবির বিদায়ী উপাচার্যের পেছনের ব্যক্তিদের খোঁজা হচ্ছে

Update Time : ০৫:৩২:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মে ২০২১

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ ও নিয়মবর্হিভূতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে জনবল নিয়োগ দিয়েছেন।

সদ্য বিদায়ী উপাচার্য কেন নির্দেশনা অমান্য করে নিয়োগ কার্যকর করেছেন তার কারণ খতিয়ে দেখছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এর পেছনে কারও হাত রয়েছে কি-না তাও দেখা হচ্ছে।

রোববার (৯ মে) তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা জানান, রাবির উপাচার্য নিজ ক্ষমতা বলে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সহায়তায় নিয়ামবর্হিভূত ১৩৭ জন জনবল নিয়োগ দিয়েছেন। সেই নিয়োগ পত্রে বর্তমান রেজিস্ট্রার ও সহকারী রেজিস্ট্রার সাক্ষর করেননি। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অনিয়ম-দুর্নীতি ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জনবল নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন উপাচার্য। তার সঙ্গে কারা জড়িত, কেনই বা উপাচার্য নির্দেশনা অমান্য করে নিয়োগ দিয়েছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা তা খতিয়ে দেখছেন।

তারা বলেন, চার সদস্যের তদন্ত কমিটির সদস্যরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সরেজমিনে গিয়েছেন। সেখানে থাকা নিয়োগ সংক্রান্ত সব কাগজপত্র সংগ্রহ করেছেন। সেসব কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তদন্ত কিমিটির আহ্বায়ক ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর রোববার বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে সব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এই নিয়োগ যে অবৈধ তা উপাচার্য নিজেও জানেন। তারপরেও কেন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এত বিশাল সংখ্যক জনবল নিয়োগ দিলেন তা আমরা খতিয়ে দেখছি। এর পেছনে কেউ রয়েছে কি-না তাও দেখা হচ্ছে।’

ঈদের পর পর তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

গত বৃহস্পতিবার (৬ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব শামীমা বেগম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটি গঠন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কমিটিতে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে আহ্বায়ক করে এ প্রতিষ্ঠানের আরেক সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. জাকির হোসেনকে সদস্য করে ইউজিসির পরিচালক (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) মোহাম্মদ জামিনুর রহমানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। পরদিন শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করা হয়।

উল্লেখ্য ২০১৭ সালের ৭ মে দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য পদে নিয়োগ পান অধ্যাপক আব্দুস সোবহান। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে যোগ্যতা শিথিল করে মেয়ে-জামাতাকে নিয়োগসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। গত বছর ইউজিসির তদন্তে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের নিয়োগ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। তবে শেষ দিনে সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে ১৩৭ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ায় রুটিন দায়িত্ব পেয়েছেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা। গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব শামীমা বেগম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।