করোনায় আশার আলো দেখাল অক্সফোর্ডের টিকা
- Update Time : ০৭:২৯:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০
- / 123
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বা টিকা নিরাপদ এবং এটি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাড়ায় বলে পরীক্ষমূলক প্রয়োগে ফল পাওয়া গেছে।
এক হাজার ৭৭ জনের ওপর চালানো ওই পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই টিকা শরীরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং রক্তে শ্বেতকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে, যা করোনার বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। খবর বিবিসির
সোমবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি এই টিকা মানবদেহে প্রয়োগের ফল সম্পর্কে আগাম প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাপ্ত এই ফল খুবই আশাব্যঞ্জক, তবে এটি করোনা থেকে সুরক্ষা দিতে যথেষ্ট কি-না তা এখনই বলা যাচ্ছে না। এজন্য আরও বড় পরিসরে পরীক্ষার কাজ চলছে। যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যে ভ্যাকসিনের ১০ কোটি ডোজ নেওয়ার চাহিদাপত্র দিয়েছে।
‘সিএইচএডিওএক্সওয়ান এনকভিড-১৯’ নামের এ ভ্যাকসিন অনেক দ্রুত গতিতে তৈরি করা হচ্ছে। এটি জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ারড ভাইরাস থেকে তৈরি, যা মূলত শিম্পাঞ্জিকে সংক্রমিত করে। এটি সাধারণ সর্দি-কাশির দুর্বল ভাইরাস (অ্যাডেনোভাইরাস) হিসেবে পরিচিত। গবেষকরা এর জিনগত পরিবর্তন করেছেন, যাতে মানুষের ক্ষতি না করে।
করোনার স্পাইক প্রোটিন-এর জন্য জেনেটিক নির্দেশাবলী স্থানান্তর করে বিজ্ঞানীরা এটি করেছেন। এর অর্থ এই ভ্যাকসিনটি করোনাভাইরাসের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় কীভাবে করোনাকে আক্রমণ করতে হবে এটি তা ইমিউন সিস্টেমকে শেখাবে।
এই টিকা নিরাপদ হলেও এখনও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। তবে বিপজ্জনক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৭০ শতাংশ মানুষের এ টিকা নেওয়ার পর জ্বর ও মাথাব্যথা সেরে গেছে।
অক্সফোর্ড বিশ্বিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক ড. সারাহ গিলবার্ট বলেন, ‘এই টিকা করোনা মাহামারি ঠেকাতে সহায়তা করবে কি-না অর্থাৎ এটির কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে এখনও অনেক কাজ বাকি। তবে প্রাথমিক ফলাফল ইতিবাচক প্রতিশ্রুতিই দিচ্ছে।’
সংক্রমণজনিত রোগ নিয়ে গবেষণা ও টিকা তৈরির জন্য যুক্তরাজ্যের সরকার ও কয়েকটি দাতব্য সংস্থার অর্থায়নে ২০০৫ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে তোলা হয় জেনার ইনস্টিটিউট। এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান বিজ্ঞানী ড. সারাহ গিলবার্টের নেতৃত্বেই তিন মাসের কম সময়ে করোনাভাইরাসের এই টিকা তৈরির কাজ চলছে।
গত ২৩ এপ্রিল অক্সফোর্ডের দু’জন স্বেচ্ছাসেবী বিজ্ঞানীর শরীরে প্রথম এই টিকা প্রয়োগ করা হয়। এরপর যুক্তরাজ্যে পরীক্ষা জন্য ৪ হাজারের বেশি অংশগ্রহণকারীর নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকায়ও চলছে এই টিকার পরীক্ষামূলক ব্যবহার।