বেইজিংয়ে নতুন করে করোনা সংক্রমণ, ২৭ এলাকা লকডাউন

  • Update Time : ০৪:০৮:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুন ২০২০
  • / 206

নতুন করে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের লাখ লাখ মানুষ আবার লকডাউনের কব্জায় আটকা পড়েছে। রাজধানীর ২৭টি এলাকা লকডাউন করে দিয়ে সেখানকার মানুষকে বাইরে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বেইজিং থেকে ১২০০ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। ৯ জুলাই পর্যন্ত ট্রেন সার্ভিস অনেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে সুইমিং পুল, জিম এবং অনেক রকম খেলাধুলো।

বুধবার বেইজিংয়ে নতুন করে ৩১ জনের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৭। খবর বিবিসির।

ধারণা করা হচ্ছে বেইজিংয়ের শিনফানদি নামে বিশাল এক পাইকারি খাদ্যের বাজার থেকে নতুন করে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। নতুন দফা এই সংক্রমণের আগে টানা ৫৭ দিন ধরে বেইজিংয়ের বাসিন্দাদের মধ্যে কোনো করোনা পজিটিভ রোগী পাওয়া যায়নি।

বেইজিংয়ের যে ২৭টি এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে ২৬টিতে ঝুঁকির মাত্রা মাঝারি, আর একটি এলাকা উঁচু মাত্রার ঝুঁকিপূর্ণ।

এই ২৭টি এলাকার বাসিন্দারা বেইজিংয়ের বাইরে যেতে পারবে না। এমনকি কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষজনকেও রাজধানীর বাইরে যেতে গেলে ভাইরাসের পরীক্ষা করে দেখাতে হবে তারা সংক্রমিত নন।

তবে বেইজিংয়ে এখন ভাইরাস পরীক্ষা করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনটি টেস্টিং সেন্টার বিবিসিকে জানিয়েছে তাদের কাছে এত মানুষ আসছে যে জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত তারা নতুন কারো কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে পারবে না। অন্যান্য কেন্দ্রের সামনেও পরীক্ষার জন্য লম্বা লাইন চোখে পড়ছে।

বেইজিংয়ে বিবিসির সংবাদদাতা জানান, গত ৫০ দিনেরও বেশি সময় ধরে চীনের রাজধানীতে নতুন কোনো সংক্রমণ না হওয়ায় রেঁস্তরা-পানশালাগুলো গমগম করে চলছিল, ট্রেনগুলো সকাল-বিকাল যাত্রীতে ভর্তি থাকত।

‘কিন্তু সেই প্রায়-স্বাভাবিক অবস্থা হঠাৎ করে যেন উধাও। একটি বাজার থেকে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণে আবার বেইজিংকে বিধিনিষেধের বুদবুদে ঢুকে পড়তে হচ্ছে।’ তবে গত ফেব্রুয়ারির লকডাউনের সাথে নতুন করে চাপানো লকডাউনের মূল পার্থক্য যে সরকারি অফিস ও কল-কারখানা এখনো খোলা।

চীনা মিডিয়াগুলো বলছে, শহরের শিনফানদি পাইকারি বাজার থেকে এবার নতুন করে সংক্রমণ ছড়ায়। আমদানি করার স্যামন মাছ কাটার একটি বোর্ডের ওপর প্রথম ভাইরাস শনাক্ত হয়।

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পরবর্তী দুই-আড়াই মাসে চীন সাফল্যের সাথে ভাইরাসের সংক্রমণ বাগে আনতে সক্ষম হয়। মার্চের প্রথম দিকে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তারপর গত সাড়ে তিন মাসে নতুন করে মাত্র ৩২০০ জন শনাক্ত হয়েছে।

মঙ্গলবার সারাদেশে নতুন করে ৩২ জন সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ২৭ জনই বেইজিংয়ের চারটি মহল্লার বাসিন্দা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


বেইজিংয়ে নতুন করে করোনা সংক্রমণ, ২৭ এলাকা লকডাউন

Update Time : ০৪:০৮:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুন ২০২০

নতুন করে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের লাখ লাখ মানুষ আবার লকডাউনের কব্জায় আটকা পড়েছে। রাজধানীর ২৭টি এলাকা লকডাউন করে দিয়ে সেখানকার মানুষকে বাইরে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বেইজিং থেকে ১২০০ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। ৯ জুলাই পর্যন্ত ট্রেন সার্ভিস অনেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে সুইমিং পুল, জিম এবং অনেক রকম খেলাধুলো।

বুধবার বেইজিংয়ে নতুন করে ৩১ জনের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৭। খবর বিবিসির।

ধারণা করা হচ্ছে বেইজিংয়ের শিনফানদি নামে বিশাল এক পাইকারি খাদ্যের বাজার থেকে নতুন করে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। নতুন দফা এই সংক্রমণের আগে টানা ৫৭ দিন ধরে বেইজিংয়ের বাসিন্দাদের মধ্যে কোনো করোনা পজিটিভ রোগী পাওয়া যায়নি।

বেইজিংয়ের যে ২৭টি এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে ২৬টিতে ঝুঁকির মাত্রা মাঝারি, আর একটি এলাকা উঁচু মাত্রার ঝুঁকিপূর্ণ।

এই ২৭টি এলাকার বাসিন্দারা বেইজিংয়ের বাইরে যেতে পারবে না। এমনকি কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষজনকেও রাজধানীর বাইরে যেতে গেলে ভাইরাসের পরীক্ষা করে দেখাতে হবে তারা সংক্রমিত নন।

তবে বেইজিংয়ে এখন ভাইরাস পরীক্ষা করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনটি টেস্টিং সেন্টার বিবিসিকে জানিয়েছে তাদের কাছে এত মানুষ আসছে যে জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত তারা নতুন কারো কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে পারবে না। অন্যান্য কেন্দ্রের সামনেও পরীক্ষার জন্য লম্বা লাইন চোখে পড়ছে।

বেইজিংয়ে বিবিসির সংবাদদাতা জানান, গত ৫০ দিনেরও বেশি সময় ধরে চীনের রাজধানীতে নতুন কোনো সংক্রমণ না হওয়ায় রেঁস্তরা-পানশালাগুলো গমগম করে চলছিল, ট্রেনগুলো সকাল-বিকাল যাত্রীতে ভর্তি থাকত।

‘কিন্তু সেই প্রায়-স্বাভাবিক অবস্থা হঠাৎ করে যেন উধাও। একটি বাজার থেকে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণে আবার বেইজিংকে বিধিনিষেধের বুদবুদে ঢুকে পড়তে হচ্ছে।’ তবে গত ফেব্রুয়ারির লকডাউনের সাথে নতুন করে চাপানো লকডাউনের মূল পার্থক্য যে সরকারি অফিস ও কল-কারখানা এখনো খোলা।

চীনা মিডিয়াগুলো বলছে, শহরের শিনফানদি পাইকারি বাজার থেকে এবার নতুন করে সংক্রমণ ছড়ায়। আমদানি করার স্যামন মাছ কাটার একটি বোর্ডের ওপর প্রথম ভাইরাস শনাক্ত হয়।

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পরবর্তী দুই-আড়াই মাসে চীন সাফল্যের সাথে ভাইরাসের সংক্রমণ বাগে আনতে সক্ষম হয়। মার্চের প্রথম দিকে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তারপর গত সাড়ে তিন মাসে নতুন করে মাত্র ৩২০০ জন শনাক্ত হয়েছে।

মঙ্গলবার সারাদেশে নতুন করে ৩২ জন সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ২৭ জনই বেইজিংয়ের চারটি মহল্লার বাসিন্দা।