সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিম গ্রেপ্তার

  • Update Time : ১০:৫১:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 19

ঢাকা-৭ সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মোহাম্মদ সেলিম গ্রেপ্তার হয়েছেন। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল পুরান ঢাকার বংশাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মো. রবিউল হোসেন ভুঁইয়া গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ডিবি পুলিশের একটি দল সাবেক সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে গ্রেপ্তার করেছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় গুলিতে ছাত্র নিহতের একাধিক মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত আসামি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির অন্য নেতাদের মতো হাজী সেলিমও আত্মগোপনে চলে যান। একাধিক মামলার আসামী হাজী সেলিমকে খুঁজছিল পুলিশ। শেষ পর্যন্ত রোববার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।

গ্রেপ্তারের পর হাজী সেলিমকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে কোনো এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন আলোচিত সাবেক এই সংসদ সদস্য। সেই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এর আগে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় ২০০৮ সালে ১৩ বছরের সাজা হয় তার। পরবর্তীতে ২০২২ সালে এই সাজা কমিয়ে ১০ বছর করে হাইকোর্ট।

পুরান ঢাকার ত্রাস হিসেবে পরিচিত হাজী সেলিম অসুস্থ থাকায় গত জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে তার পরিবর্তে ছেলে সুলাইমান সেলিমকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়। ঢাকা-৭ আসন থেকে এমপি হন সুলাইমান। হাজী সেলিমের আরেক ছেলে ইরফান সেলিম স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে এই দুই ভাইও পলাতক রয়েছেন। ৫ আগস্টের পর পুরান ঢাকার বিভিন্ন থানায় হওয়া মামলায় তারাও আসামি বলে জানা গোছে।

সাম্প্রতিক মামলা ছাড়াও হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে জমি ও ভবনসহ বিভিন্ন দখলের অভিযোগ পুরোনো। তার থাবা থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানও রেহাই পায়নি। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘তিব্বত হল‘ দখল করে সেখানে স্ত্রীর নামে গুলশান আরা সিটি নামে মার্কেট তৈরি করেছেন। পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলীর ওয়াইজঘাটের ৮ ও ৯ নম্বর জিএল পার্থ লেনে ৮ দশমিক ৮৮৯ কাঠা জমির ওপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘তিব্বত হল’টি । ছাত্রদের দফায় দফায় আন্দোলন ও সরকারের উপর মহলের আশ্বাসের পরও হাজী সেলিমের কাছ থেকে হলটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ২০০১ সালে তিনি হলটির অবকাঠামো বদলে ফেলে ১০তলা বিশাল ভবন নির্মাণ করে স্ত্রীর নামে ‘গুলশান আরা সিটি মার্কেট’ গড়ে তোলেন। তবে সম্প্রতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর প্রশাসন হলটি উদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছে। রোববার (১ সেপ্টেম্বর)ঢাকা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে মার্কেটের ব্যবসায়ীদের ৩ দিনের আলটিমেটাম দিয়ে এসেছে। হলটি উদ্ধারের পর বিশ্ববিদ্যারয়কে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিম গ্রেপ্তার

Update Time : ১০:৫১:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঢাকা-৭ সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মোহাম্মদ সেলিম গ্রেপ্তার হয়েছেন। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল পুরান ঢাকার বংশাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মো. রবিউল হোসেন ভুঁইয়া গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ডিবি পুলিশের একটি দল সাবেক সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে গ্রেপ্তার করেছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় গুলিতে ছাত্র নিহতের একাধিক মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত আসামি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির অন্য নেতাদের মতো হাজী সেলিমও আত্মগোপনে চলে যান। একাধিক মামলার আসামী হাজী সেলিমকে খুঁজছিল পুলিশ। শেষ পর্যন্ত রোববার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।

গ্রেপ্তারের পর হাজী সেলিমকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে কোনো এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন আলোচিত সাবেক এই সংসদ সদস্য। সেই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এর আগে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় ২০০৮ সালে ১৩ বছরের সাজা হয় তার। পরবর্তীতে ২০২২ সালে এই সাজা কমিয়ে ১০ বছর করে হাইকোর্ট।

পুরান ঢাকার ত্রাস হিসেবে পরিচিত হাজী সেলিম অসুস্থ থাকায় গত জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে তার পরিবর্তে ছেলে সুলাইমান সেলিমকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়। ঢাকা-৭ আসন থেকে এমপি হন সুলাইমান। হাজী সেলিমের আরেক ছেলে ইরফান সেলিম স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে এই দুই ভাইও পলাতক রয়েছেন। ৫ আগস্টের পর পুরান ঢাকার বিভিন্ন থানায় হওয়া মামলায় তারাও আসামি বলে জানা গোছে।

সাম্প্রতিক মামলা ছাড়াও হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে জমি ও ভবনসহ বিভিন্ন দখলের অভিযোগ পুরোনো। তার থাবা থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানও রেহাই পায়নি। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘তিব্বত হল‘ দখল করে সেখানে স্ত্রীর নামে গুলশান আরা সিটি নামে মার্কেট তৈরি করেছেন। পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলীর ওয়াইজঘাটের ৮ ও ৯ নম্বর জিএল পার্থ লেনে ৮ দশমিক ৮৮৯ কাঠা জমির ওপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘তিব্বত হল’টি । ছাত্রদের দফায় দফায় আন্দোলন ও সরকারের উপর মহলের আশ্বাসের পরও হাজী সেলিমের কাছ থেকে হলটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ২০০১ সালে তিনি হলটির অবকাঠামো বদলে ফেলে ১০তলা বিশাল ভবন নির্মাণ করে স্ত্রীর নামে ‘গুলশান আরা সিটি মার্কেট’ গড়ে তোলেন। তবে সম্প্রতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর প্রশাসন হলটি উদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছে। রোববার (১ সেপ্টেম্বর)ঢাকা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে মার্কেটের ব্যবসায়ীদের ৩ দিনের আলটিমেটাম দিয়ে এসেছে। হলটি উদ্ধারের পর বিশ্ববিদ্যারয়কে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।