হল ছাড়তে বাধ্য হলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা, পুলিশের নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাস

  • Update Time : ১১:৫১:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪
  • / 42

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

বাধ্য হয়ে হল ত্যাগ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা । কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের মধ্যে বিরাজমান উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে যাচ্ছেন।

বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরের পর থেকে শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ করতে শুরু করেন। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে হল ছাড়া নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এজন্য বিকেল ৫টার পর ঢাবির হল এলাকায় অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসময় মাইকিং করে ছাত্রছাত্রীদের হল থেকে দ্রুত বের হওয়ার আহ্বান জানায় পুলিশ।

পুলিশ মাইকিংয়ের সময় সূর্যসেন হল, কবি জসীম উদদীন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলসহ বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীদের ব্যাগ নিয়ে বের হতে দেখা যায়। অনেক শিক্ষার্থীকে কান্না করতে দেখা যায় এসময়। অনেকে পুলিশের উদ্দেশ্য “ভুয়া ভুয়া” বলেও স্লোগান দেন।

পুলিশ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হল ছেড়ে চলে যেতে হবে। তা না হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, সন্ধ্যা ৬টার পর শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন আমাদের অনুমতি দিয়েছে। আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। কারণ ৬টার পর হলে অবস্থান করা নিষেধ।

এর আগে, বিকাল ৪ টা নাগাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কার্যালয়ের সামনের অংশে পুলিশ ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হতে দেখা যায়। পুলিশ ক্রমেই হল চত্বর দখল নিতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে না টিকতে পেরে শিক্ষার্থীরা হলের দিকে চলে যায়।

এদিকে ঢাবির আবাসিক হলগুলো খালি করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে দুপুরেই ঢাবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ জন শিক্ষক উদ্বেগ জানান। তারা ঢাবি ভিসির সাক্ষাৎ না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ অন্যদের সঙ্গে দেখা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা।

উক্ত সমাবেশে ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন ক্যাম্পাসে বিজিবি মোতায়েনের নিন্দা জানিয়ে বলেন, এটা তো বাংলাদেশের সীমান্ত নয়, এখানে বিজিবির থাকার কথা নয়। যদি তারা এখানে আসেনও, তাহলে শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকতে হবে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের চলে যেতে বলতে পারেন না। শিক্ষার্থীরা যেটা চাইবে, সেটা করতে দিতে হবে। তাদের কোনো কিছুতে বাধ্য করবেন না।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


হল ছাড়তে বাধ্য হলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা, পুলিশের নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাস

Update Time : ১১:৫১:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

বাধ্য হয়ে হল ত্যাগ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা । কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের মধ্যে বিরাজমান উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে যাচ্ছেন।

বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরের পর থেকে শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ করতে শুরু করেন। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে হল ছাড়া নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এজন্য বিকেল ৫টার পর ঢাবির হল এলাকায় অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসময় মাইকিং করে ছাত্রছাত্রীদের হল থেকে দ্রুত বের হওয়ার আহ্বান জানায় পুলিশ।

পুলিশ মাইকিংয়ের সময় সূর্যসেন হল, কবি জসীম উদদীন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলসহ বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীদের ব্যাগ নিয়ে বের হতে দেখা যায়। অনেক শিক্ষার্থীকে কান্না করতে দেখা যায় এসময়। অনেকে পুলিশের উদ্দেশ্য “ভুয়া ভুয়া” বলেও স্লোগান দেন।

পুলিশ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হল ছেড়ে চলে যেতে হবে। তা না হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, সন্ধ্যা ৬টার পর শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন আমাদের অনুমতি দিয়েছে। আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। কারণ ৬টার পর হলে অবস্থান করা নিষেধ।

এর আগে, বিকাল ৪ টা নাগাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কার্যালয়ের সামনের অংশে পুলিশ ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হতে দেখা যায়। পুলিশ ক্রমেই হল চত্বর দখল নিতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে না টিকতে পেরে শিক্ষার্থীরা হলের দিকে চলে যায়।

এদিকে ঢাবির আবাসিক হলগুলো খালি করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে দুপুরেই ঢাবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ জন শিক্ষক উদ্বেগ জানান। তারা ঢাবি ভিসির সাক্ষাৎ না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ অন্যদের সঙ্গে দেখা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা।

উক্ত সমাবেশে ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন ক্যাম্পাসে বিজিবি মোতায়েনের নিন্দা জানিয়ে বলেন, এটা তো বাংলাদেশের সীমান্ত নয়, এখানে বিজিবির থাকার কথা নয়। যদি তারা এখানে আসেনও, তাহলে শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকতে হবে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের চলে যেতে বলতে পারেন না। শিক্ষার্থীরা যেটা চাইবে, সেটা করতে দিতে হবে। তাদের কোনো কিছুতে বাধ্য করবেন না।