শাহ আলীতে কিশোর গ্যাং’র হাতে নিহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা

  • Update Time : ০৯:১৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ অক্টোবর ২০২৩
  • / 248

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানীর শাহ আলী এলাকায় জুনিয়র গ্রুপের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল স্থানীয় ব্যবসায়ী ওমর ফারুকের। সম্প্রতি ফারুককে শায়েস্তা করতে চেয়েছিল জুনিয়র গ্রুপ।

পরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার রাতে ওমর ফারুককে চড়থাপ্পড় দেয় জুনিয়র গ্রুপের সদস্য মিম, রনিসহ বেশ ক’জন। এটা মানতে পারছিলেন না ওমর ফারুক। ঘটনার পর তিনি বন্ধুদের বিষয়টি জানিয়ে বলেন, ‘শরীর খারাপ লাগছে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে চলো। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরার পথে আবারও অসুস্থতা বোধ করেন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

নিহত ওমর ফারুক তার বাবার গাড়ির চাকা ব্যবসায় সহযোগিতা করতেন। রনি স্বেচ্ছাসেবক লীগ শাহআলী থানার সাবেক ৮ নং ওয়ার্ডের দপ্তর সাবেক সম্পাদক।

এদিকে ওমর ফারুকের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবার। পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় এক জনকে আটক করা হয়েছে।

জানা গেছে, শাহ আলী থানা এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলার পর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ওমর ফারুক মারা গেছেন। এ ঘটনায় আবু হানিফ রনি নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, চড়থাপ্পড় খেয়ে ভিকটিম বাসায় যাওয়ার সময় অভিযুক্তরা দলবেঁধে আবার তার (ভিকটিমের) বাসায় ঢিল ছুঁড়লে ওমর ফারুক বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। রাস্তায় তাকে মারধরের ঘটনায় মিম, রনিসহ বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে।

রবিবার দুপুরে মিরপুর বিভাগের দারুস সালাম জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মফিজুর রহমান পলাশ নিহতের বন্ধুদের বরাত দিয়ে ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘শত্রুতার জের ধরে গতকাল শনিবার রাতে কিশোর গ্যাং লিডার মিমের নেতৃত্বে পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫-৬ জনের একটি দল স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ও ব্যবসায়ী ওমর ফারুকের ওপর হামলা করে। রাস্তায় তাকে মারধর করা হয়।’

পুলিশ বলছে, এ ঘটনার পর ওমর ফারুক তার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়ার বিষয়টি বন্ধুদের জানান। এর মধ্যে বন্ধুদের খারাপ লাগার কথা বলার পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। উপস্থিত বন্ধুরা তাকে মিরপুর হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তেমন কোনো সমস্যা ধরা না পড়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পরে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। আবারও হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসক পুলিশ ও স্বজনদের নিশ্চিত করেছেন, হার্ট ফাউন্ডেশনে দ্বিতীয়বার আনার আগেই রাস্তায় মৃত্যু হয় ওমর ফারুকের। পরবর্তীতে খবর পেয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

এসি মফিজুর রহমান পলাশ বলেন, ‘ঘটনার পরপরই শাহআলী থানা পুলিশ আবু হানিফ রনি নামের একজনকে আটক করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু নাম পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

এ ঘটনায় মামলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘নিহতের পরিবার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে হত্যা মামলা নেওয়া হবে।’

Please Share This Post in Your Social Media


শাহ আলীতে কিশোর গ্যাং’র হাতে নিহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা

Update Time : ০৯:১৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানীর শাহ আলী এলাকায় জুনিয়র গ্রুপের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল স্থানীয় ব্যবসায়ী ওমর ফারুকের। সম্প্রতি ফারুককে শায়েস্তা করতে চেয়েছিল জুনিয়র গ্রুপ।

পরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার রাতে ওমর ফারুককে চড়থাপ্পড় দেয় জুনিয়র গ্রুপের সদস্য মিম, রনিসহ বেশ ক’জন। এটা মানতে পারছিলেন না ওমর ফারুক। ঘটনার পর তিনি বন্ধুদের বিষয়টি জানিয়ে বলেন, ‘শরীর খারাপ লাগছে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে চলো। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরার পথে আবারও অসুস্থতা বোধ করেন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

নিহত ওমর ফারুক তার বাবার গাড়ির চাকা ব্যবসায় সহযোগিতা করতেন। রনি স্বেচ্ছাসেবক লীগ শাহআলী থানার সাবেক ৮ নং ওয়ার্ডের দপ্তর সাবেক সম্পাদক।

এদিকে ওমর ফারুকের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবার। পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় এক জনকে আটক করা হয়েছে।

জানা গেছে, শাহ আলী থানা এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলার পর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ওমর ফারুক মারা গেছেন। এ ঘটনায় আবু হানিফ রনি নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, চড়থাপ্পড় খেয়ে ভিকটিম বাসায় যাওয়ার সময় অভিযুক্তরা দলবেঁধে আবার তার (ভিকটিমের) বাসায় ঢিল ছুঁড়লে ওমর ফারুক বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। রাস্তায় তাকে মারধরের ঘটনায় মিম, রনিসহ বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে।

রবিবার দুপুরে মিরপুর বিভাগের দারুস সালাম জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মফিজুর রহমান পলাশ নিহতের বন্ধুদের বরাত দিয়ে ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘শত্রুতার জের ধরে গতকাল শনিবার রাতে কিশোর গ্যাং লিডার মিমের নেতৃত্বে পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫-৬ জনের একটি দল স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ও ব্যবসায়ী ওমর ফারুকের ওপর হামলা করে। রাস্তায় তাকে মারধর করা হয়।’

পুলিশ বলছে, এ ঘটনার পর ওমর ফারুক তার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়ার বিষয়টি বন্ধুদের জানান। এর মধ্যে বন্ধুদের খারাপ লাগার কথা বলার পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। উপস্থিত বন্ধুরা তাকে মিরপুর হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তেমন কোনো সমস্যা ধরা না পড়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পরে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। আবারও হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসক পুলিশ ও স্বজনদের নিশ্চিত করেছেন, হার্ট ফাউন্ডেশনে দ্বিতীয়বার আনার আগেই রাস্তায় মৃত্যু হয় ওমর ফারুকের। পরবর্তীতে খবর পেয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

এসি মফিজুর রহমান পলাশ বলেন, ‘ঘটনার পরপরই শাহআলী থানা পুলিশ আবু হানিফ রনি নামের একজনকে আটক করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু নাম পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

এ ঘটনায় মামলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘নিহতের পরিবার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে হত্যা মামলা নেওয়া হবে।’