সাংবাদিক ইকবালকে আবারও ডেকেছে বিতর্কিত তদন্ত কমিটি

  • Update Time : ০৬:৩২:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / 191

কুবি প্রতিনিধি

সংবাদ প্রকাশের জেরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ক্যাম্পাস সাংবাদিক ইকবাল মনোয়ারের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইকবালকে লিখিত বক্তব্যসহ কমিটির সম্মুখে উপস্থিত হওয়ার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে বিতর্কিত ওই কমিটির মাধ্যমে হয়রানি করার উদ্দেশ্য রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনবহির্ভূতভাবে ইকবালকে দেয়া সাময়িক বহিষ্কারাদেশের ওপর ইতোমধ্যে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। ওই সাময়িক বহিষ্কারাদেশের আগে উপাচার্যপন্থি যেসব শিক্ষকরা মানবন্ধন করে ইকবালের শাস্তি দাবি করেছিলেন, তাদের নিয়েই গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি। একই সঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে ইকবালকে জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর লিখিত বক্তব্যসহ তদন্ত কমিটির সম্মুখে উপস্থিত হওয়ার জন্য ইকবালকে চিঠি দিয়েছে প্রশাসন। গত ২১ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের বক্তব্যকে ‘বিকৃত করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তমূলক মিথ্যা তথ্য’ প্রচার করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার কারণ ও উদ্দেশ্য উদঘাটনের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপাচার্যের বক্তব্য ‘বিকৃত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশের’ বিষয়ে লিখিত বক্তব্যসহ হাজির হতে বলা হয়েছে ইকবালকে।

এর আগে এক চিঠিতে গত ১০ আগস্ট তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলেছিল প্রশাসন। তবে অভিযোগ, তদন্ত ও তদন্ত কার্যক্রমের বিষয়ে অবহতিকরণের জন্য গত ৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে চিঠি দেন ইকবাল। ওই চিঠিতে ইকবাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সুনির্দিষ্ট করে অবহিত না করেই তদন্ত কমিটি গঠন ও ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কী অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, কে অভিযোগ দিয়েছে, কোন আইনে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, অভিযোগের ভিত্তি কী, কাদেরকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, কোথায় ও কোন গণামাধ্যমে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তা জানেন না তিনি। বিষয়গুলো অবহিত করতে রেজিস্ট্রারকে অনুরোধ জানান ইকবাল। তবে রেজিস্ট্রার সেসব বিষয় অবহিত না করেই নতুন করে চিঠি দিয়ে ইকবালকে তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত হতে বলেছেন।

এ বিষয়ে ইকবাল মনোয়ার বলেন, ‘অভিযোগ, অভিযোগকারী ও তদন্ত কমিটি সম্পর্কে আমাকে জানাতে লিখিত দিয়েছিলাম আমি। আমার চিঠির উত্তর না দিয়ে আবারও আমাকে তদন্ত কমিটির সামনে লিখিত বক্তব্যসহ উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। অথচ আমি জানিই না, কী ও কার অভিযোগের বিষয়ে আমি লিখিত দেব। প্রশাসন স্পষ্টতই আমাকে ফাঁসাতে প্রহসনমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

ইকবালের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও তদন্ত কার্যক্রমের আইনগত ভিত্তি জানতে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আমিরুল হক চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। এরপর খুদেবার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত ওই চিঠির অনুলিপিতে তদন্ত কমিটির আহবায়ক হিসেবে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এন. এম. রবিউল আউয়াল চৌধুরীর নাম উল্লেখ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীও। উভয়ই গত ২ আগস্ট উপাচার্যের পক্ষে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ইকবালের শাস্তি দাবি করে বক্তব্য দিয়েছিলেন। তাঁদের দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করায় তদন্ত কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মো. জাকির হোসাইন বলেন, ‘স্বাভাবিক ন্যায়বিচারের নীতি হলো স্বার্থসংশ্লিষ্ট কেউ তদন্ত প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত হতে পারবেন না। তদন্ত কমিটির সদস্যরা যদি শাস্তি দাবি করে থাকেন, তাঁর মানে আগে থেকেই তিনি এ বিষয়ের সাথে যুক্ত আছেন। কাজেই তাঁর কাছ থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত আশা করা যাবে না। কারণ, তিনি ইতিমধ্যে একটি পক্ষ অবলম্বন করে ফেলেছেন।’

গত ২ আগস্ট প্রক্টরিয়াল বডি ইকবালকে বহিষ্কার করতে সুপারিশ করে প্রতিবেদন তৈরি করে। সে প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই ইকবালকে বহিষ্কার করে প্রশাসনের ‘উচ্চ পর্যায়ের সভা’। সে সভার প্রধান ছিলেন স্বয়ং উপাচার্য নিজে। উপাচার্যের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে পরিচালিত কার্যক্রমে তিনি সভা প্রধান হওয়ায় ব্যক্তিক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ‘উচ্চ পর্যায়ের সভা’ নামেও কোনো প্রশাসনিক কাঠামো নেই।

এদিকে প্রক্টরিয়াল বডির ওই প্রতিবেদন কী অভিযোগের ভিত্তিতে ও কোন আইনের আলোকে দেওয়া হয়েছিল তা সম্পর্কে ইতোপূর্বে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তর দেননি প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী। সর্বশেষ গতকালও তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইকবালকে দেওয়া চিঠিতে বিষয়টিকে ইতোমধ্যে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বিভ্রান্তিমূলক, মিথ্যা তথ্য’ বলে উল্লেখ করেছে প্রশাসন। প্রমাণ হওয়ার আগেই এমন বলা আইনসম্মত নয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ইউসুফ আকাশ বলেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ একটি আপেক্ষিক শব্দ। কোনো সংবাদ কারও বিপক্ষে গেলে তিনি বিভিন্নভাবেই বিষয়টিকে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। প্রশাসন যে অভিযোগের কথা বলেছে, তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো কিছুই বলেনি। তদন্ত কমিটি ও কার্যক্রম জানানো হয়নি। উপাচার্য যা বলেছেন, সাংবাদিক তা লিখেছেন। এখানে কোনো মিথ্যাচার হয়নি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


সাংবাদিক ইকবালকে আবারও ডেকেছে বিতর্কিত তদন্ত কমিটি

Update Time : ০৬:৩২:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কুবি প্রতিনিধি

সংবাদ প্রকাশের জেরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ক্যাম্পাস সাংবাদিক ইকবাল মনোয়ারের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইকবালকে লিখিত বক্তব্যসহ কমিটির সম্মুখে উপস্থিত হওয়ার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে বিতর্কিত ওই কমিটির মাধ্যমে হয়রানি করার উদ্দেশ্য রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনবহির্ভূতভাবে ইকবালকে দেয়া সাময়িক বহিষ্কারাদেশের ওপর ইতোমধ্যে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। ওই সাময়িক বহিষ্কারাদেশের আগে উপাচার্যপন্থি যেসব শিক্ষকরা মানবন্ধন করে ইকবালের শাস্তি দাবি করেছিলেন, তাদের নিয়েই গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি। একই সঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে ইকবালকে জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর লিখিত বক্তব্যসহ তদন্ত কমিটির সম্মুখে উপস্থিত হওয়ার জন্য ইকবালকে চিঠি দিয়েছে প্রশাসন। গত ২১ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের বক্তব্যকে ‘বিকৃত করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তমূলক মিথ্যা তথ্য’ প্রচার করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার কারণ ও উদ্দেশ্য উদঘাটনের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপাচার্যের বক্তব্য ‘বিকৃত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশের’ বিষয়ে লিখিত বক্তব্যসহ হাজির হতে বলা হয়েছে ইকবালকে।

এর আগে এক চিঠিতে গত ১০ আগস্ট তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলেছিল প্রশাসন। তবে অভিযোগ, তদন্ত ও তদন্ত কার্যক্রমের বিষয়ে অবহতিকরণের জন্য গত ৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে চিঠি দেন ইকবাল। ওই চিঠিতে ইকবাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সুনির্দিষ্ট করে অবহিত না করেই তদন্ত কমিটি গঠন ও ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কী অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, কে অভিযোগ দিয়েছে, কোন আইনে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, অভিযোগের ভিত্তি কী, কাদেরকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, কোথায় ও কোন গণামাধ্যমে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তা জানেন না তিনি। বিষয়গুলো অবহিত করতে রেজিস্ট্রারকে অনুরোধ জানান ইকবাল। তবে রেজিস্ট্রার সেসব বিষয় অবহিত না করেই নতুন করে চিঠি দিয়ে ইকবালকে তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত হতে বলেছেন।

এ বিষয়ে ইকবাল মনোয়ার বলেন, ‘অভিযোগ, অভিযোগকারী ও তদন্ত কমিটি সম্পর্কে আমাকে জানাতে লিখিত দিয়েছিলাম আমি। আমার চিঠির উত্তর না দিয়ে আবারও আমাকে তদন্ত কমিটির সামনে লিখিত বক্তব্যসহ উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। অথচ আমি জানিই না, কী ও কার অভিযোগের বিষয়ে আমি লিখিত দেব। প্রশাসন স্পষ্টতই আমাকে ফাঁসাতে প্রহসনমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

ইকবালের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও তদন্ত কার্যক্রমের আইনগত ভিত্তি জানতে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আমিরুল হক চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। এরপর খুদেবার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত ওই চিঠির অনুলিপিতে তদন্ত কমিটির আহবায়ক হিসেবে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এন. এম. রবিউল আউয়াল চৌধুরীর নাম উল্লেখ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীও। উভয়ই গত ২ আগস্ট উপাচার্যের পক্ষে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ইকবালের শাস্তি দাবি করে বক্তব্য দিয়েছিলেন। তাঁদের দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করায় তদন্ত কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মো. জাকির হোসাইন বলেন, ‘স্বাভাবিক ন্যায়বিচারের নীতি হলো স্বার্থসংশ্লিষ্ট কেউ তদন্ত প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত হতে পারবেন না। তদন্ত কমিটির সদস্যরা যদি শাস্তি দাবি করে থাকেন, তাঁর মানে আগে থেকেই তিনি এ বিষয়ের সাথে যুক্ত আছেন। কাজেই তাঁর কাছ থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত আশা করা যাবে না। কারণ, তিনি ইতিমধ্যে একটি পক্ষ অবলম্বন করে ফেলেছেন।’

গত ২ আগস্ট প্রক্টরিয়াল বডি ইকবালকে বহিষ্কার করতে সুপারিশ করে প্রতিবেদন তৈরি করে। সে প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই ইকবালকে বহিষ্কার করে প্রশাসনের ‘উচ্চ পর্যায়ের সভা’। সে সভার প্রধান ছিলেন স্বয়ং উপাচার্য নিজে। উপাচার্যের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে পরিচালিত কার্যক্রমে তিনি সভা প্রধান হওয়ায় ব্যক্তিক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ‘উচ্চ পর্যায়ের সভা’ নামেও কোনো প্রশাসনিক কাঠামো নেই।

এদিকে প্রক্টরিয়াল বডির ওই প্রতিবেদন কী অভিযোগের ভিত্তিতে ও কোন আইনের আলোকে দেওয়া হয়েছিল তা সম্পর্কে ইতোপূর্বে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তর দেননি প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী। সর্বশেষ গতকালও তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইকবালকে দেওয়া চিঠিতে বিষয়টিকে ইতোমধ্যে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বিভ্রান্তিমূলক, মিথ্যা তথ্য’ বলে উল্লেখ করেছে প্রশাসন। প্রমাণ হওয়ার আগেই এমন বলা আইনসম্মত নয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ইউসুফ আকাশ বলেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ একটি আপেক্ষিক শব্দ। কোনো সংবাদ কারও বিপক্ষে গেলে তিনি বিভিন্নভাবেই বিষয়টিকে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। প্রশাসন যে অভিযোগের কথা বলেছে, তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো কিছুই বলেনি। তদন্ত কমিটি ও কার্যক্রম জানানো হয়নি। উপাচার্য যা বলেছেন, সাংবাদিক তা লিখেছেন। এখানে কোনো মিথ্যাচার হয়নি।