ড. ইউনূসকে নিয়ে দেয়া খোলা চিঠিতে ‘গোপন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ আছে: ইবি শিক্ষক সমিতি
- Update Time : ০৯:০৪:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / 166
ইবি প্রতিনিধি:
নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার জন্য বিশ্বের বিশিষ্টজনদের দেয়া খোলা চিঠিতে এদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার উপর অযাচিত হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শিক্ষক সমিতি। এছাড়াও এতে গোপন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলে মনে করেন তারা।
মঙ্গলবার (০৫ সেপ্টেম্বর) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করা হয়।
শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে বলা হয়, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক জনগণ এ ধরনের অবমাননাকর, অযাচিত ও বেআইনি হস্তক্ষেপ মেনে নেবে না।
এ ধরনের বিবৃতির পেছনে গোপন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান। আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এবং শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়ে অধিকতর সম্মান প্রদর্শনের জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গত ২৮ আগস্ট বেশ কয়েকজন নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন মর্মে আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবগত হয়েছি। একটি দেশের সরকার প্রধানের কাছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিশিষ্টজনদের এধরণের চিঠি স্বাভাবিক ঘটনা হলেও চিঠির বিষয়বস্তুতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বিস্মিত ও হতবাক হয়েছে। চিঠিতে তাঁরা বাংলাদেশের শ্রম আইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছেন। একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর এমন অযাচিত হস্তক্ষেপের বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৪(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করে থাকে। কাজেই এধরনের চিঠি প্রদানের মাধ্যমে তাঁরা অনৈতিক, বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করেছেন বলে আমরা মনে করি। আরও উদ্বেগের সাথে লক্ষ্যণীয় যে, চিঠিতে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিবর্গ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্বার্থরক্ষায় আগ্রহী হলেও ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠান কর্তৃক শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং শ্রমিকদের মানবাধিকার ও আইনী সুরক্ষার বিষয়ে সম্পূর্ণ নিশ্চুপ থেকেছেন। এধরনের বিবৃতি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এবং বাংলাদেশের আইনে শ্রমিকদের প্রদত্ত অধিকার সংক্রান্ত বিধানাবলীর সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তাছাড়া একই চিঠিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে যে ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে, তা স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপের সামিল।