ক্রিকেটে প্রথম লাল কার্ড দেখলেন নারাইন
- Update Time : ০৩:০৮:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৩
- / 143
স্পোর্টস ডেস্ক
ফুটবল মাঠে রেফারি নিজের পকেট থেকে বের করে লাল কার্ড দেখাচ্ছেন এই দৃশ্য খুবই পরিচিত। তবে ফুটবল মাঠ ছাড়া লাল কার্ডের প্রচলন দেখা যায় না বললেই চলে। কিন্তু ক্রিকেট মাঠে তাই বলে এই দৃশ্য দেখা যাবে? এমনটাই ঘটেছে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল)।
সিপিএলে স্লো ওভাররেটের শাস্তির কারণে প্রথম লাল কার্ড দেখা খেলোয়াড় হলেন সুনীল নারাইন। অবশ্য এ ঘটনা মোটেও ভালোভাবে নিতে পারেননি নারাইনের দল ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড। এটিকে ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন ‘হাস্যকর’।
আজ ভোরে সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস প্যাট্রিয়টসের বিপক্ষ ম্যাচে লাল কার্ড দেখেন নারাইন। সিপিএলে এ মৌসুম থেকে চালু হওয়া নিয়ম অনুযায়ী, স্লো ওভাররেটের কারণে মাঠেই শাস্তি দেওয়া হবে প্রচলিত নিয়মের বাইরেও। এ নিয়ম অনুযায়ী, ইনিংসের ১৮তম ওভার শুরুর সময় কোনো দল পিছিয়ে থাকলে বাড়তি একজন খেলোয়াড়কে ৩০ গজের বৃত্তের ভেতরে ঢুকতে হবে, অর্থাৎ কমপক্ষে ৫ জনকে ভেতরে থাকতেই হবে।
প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২০০৫ সালে গ্লেন ম্যাকগ্রা মজা করে আন্ডার আর্ম বল করার পর এই অস্ট্রেলিয়ান পেসারকে লাল কার্ড দেখিয়েছিলেন আম্পায়ার বিলি বাউডেন। সেসব ছিল কৌতুক করে। কিন্তু সত্যিকারের শাস্তি হিসেবে কারও মাঠের বাইরে চলে যাওয়ার ঘটনা ক্রিকেটে এটিই প্রথম।
কয়েক বছর ধরে মন্থর ওভার রেটের প্রবণতা প্রবলভাবে বেড়ে যাওয়ায় এবার বেশকিছু কড়া নিয়ম করে সিপিএল কর্তৃপক্ষ। লাল কার্ড এটিরই অংশ।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একটি ইনিংসের জন্য বরাদ্দ ৮৫ মিনিট। সিপিএলে এবার নিয়ম করা হয়, ইনিংসের ১৭তম ওভার শেষ করতে হবে ৭২ মিনিটের মধ্যে, ১৮তম ওভার শেষ করতে হবে ৭৬ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে এবং ১৯তম ওভার শেষ করতে হবে ৮০ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যে।
শেষের এই ওভারগুলো সময়মতো শুরু করতে না পারার বিভিন্ন শাস্তি রাখা হয়। ১৮তম ওভারের শুরুতে যদি দেখা যায় সময় বেশি লেগে গেছে, তাহলে একজন বাড়তি ফিল্ডার ৩০ গজ বৃত্তের ভেতরে রাখতে হবে। ১৯তম ওভারের শুরুতেও যদি সময় বেশি লাগে, তাহলে দুজন বাড়তি ফিল্ডার (মোট ৬ জন) রাখতে হবে বৃত্তের ভেতরে। শেষ ওভার শুরুর সময়ও যদি সময়ে পিছিয়ে থাকে ওই দল, তাহলে একজন ফিল্ডারকে মাঠের বাইরে চলে যেতে হবে। বৃত্তের ভেতরে তো ৬ জন থাকবেনই (বোলার-কিপারসহ ৮ জন)।
সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের বিপক্ষে রোববারের এই ম্যাচে এই সবগুলি শাস্তিই পেতে হয় ত্রিনবাগোকে। অষ্টাদশ ওভারে একজন বাড়তি ফিল্ডার ভেতরে আনতে হয় তাদের। নারাইনের করা ওভারটি থেকে রান আসে ১২।
১৯তম ওভারে আরও একজন ফিল্ডার বৃত্তের ভেতরে আনতে বাধ্য হয় তারা। পেসার আলি খানের করা ওভারটি থেকে রান আসে ৮।
এরপর শেষ ওভারের ওই লাল কার্ড। একজনকে তুলে নিতে বাধ্য ত্রিনবাগো। তারা বাইরে পাঠিয়ে দেয় নারাইনকে। ততক্ষণে তার চার ওভারের বোলিং শেষ (৪-০-২৪-৩)। ফিল্ডিং তার বরাবরই দুর্বলতার জায়গা।
আম্পায়ার যখন কার্ড বের করছেন, ধারাভাষ্যকক্ষে ইয়ান বিশপ বলেন, ‘এটা হতে পারে ঐতিহাসিক মুহূর্ত… ওহ, লাল কার্ড… এই রঙের কার্ড কেউ দেখতে চায় না।”
বৃত্তের বাইরে স্রেফ ২ জন ফিল্ডার নিয়ে শেষ ওভার বোলিং করেন অভিজ্ঞ ডোয়াইন ব্রাভো। সেই ওভারে তিন চার ও এক ছক্কায় ১৮ রান নেন শেরফেন রাদারফোর্ড।
অবশ্য তাদের দেওয়া ১৭৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ত্রিনবাগো ১৭ বল বাকি থাকতেই পেরিয়ে যায়। নিকোলাস পুরানের ৩২ বলে ৬১ রানের সঙ্গে পোলার্ডের ১৬ বলে ৩৭ ও আন্দ্রে রাসেলের ৮ বলে ২৩ রানের ঝোড়ো ইনিংসে বড় লক্ষ্যকে পাত্তাই দেয়নি নাইট রাইডার্স।
তবে ম্যাচ শেষে ঠিকই স্লো ওভাররেটের এমন শাস্তির নিয়মের সমালোচনা করেছেন পোলার্ড, ‘সত্যি বলতে কি, সবাই যে কঠোর পরিশ্রম করে, তা এতে মিলিয়ে যায়। আমরা দাবার ঘুঁটির মতো, আমাদের যা বলা হবে, তা–ই করব। আমরা যতটা দ্রুত পারি খেলব। তবে আপনাকে যদি এমন টুর্নামেন্টে ৩০ থেকে ৪৫ সেকেন্ডের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়, তাহলে সেটি হাস্যকর হয়ে যায়।’