সাগর উত্তাল, ট্রলার নিয়ে তীরে জেলেরা

  • Update Time : ১১:০১:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০২৩
  • / 145

জেলা প্রতিনিধি

বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় মৎস্যবন্দর আলীপুর খাপড়াভাঙ্গা নদীতে শত শত মাছধরা ট্রলার অবস্থান নিয়েছে। টানা দু’মাসের বেশি সময় নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ২৩ জুলাই রোববার সাগরে মাছ শিকারে নামে জেলেরা। এর একদিন বাদে সাগর আকস্মিক উত্তাল হয়ে ওঠে। ফলে উপকূলের অধিকাংশ মাছধরা ট্রলার ঘাটে ফিরে এসেছে।

বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে সবগুলো ট্রলার উপকূলের বিভিন্ন স্থানে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে বলে দাবি করেছেন আলীপুর মৎস্য আড়ৎদার সমিতির নেতৃবন্দ। তাদের মতে, সাগর শান্ত হলে এসব মাছধরা ট্রলার নিয়ে জেলেরা পুনরায় গভীর সমুদ্রে নামবে।

আলীপুরের এফবি শয়ন নামে একটি মাছধরা ট্রলারের মাঝী শাফায়েত জানান, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বুক ভরা আশা নিয়ে রূপালি ইলিশের সন্ধানে নেমেছিলেন তারা। ২২ জেলের ট্রলারটি সাগরে মাছ শিকারের যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে যেতে প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ হয়, সাগরে প্রচণ্ড ঢেউ থাকায় কোনো মতে ফিরে আসতে পারলেও মাত্র এক লাখ টাকার মাছ বিক্রি করতে পেরেছেন। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা। KSRM

মাঝী শাফয়েতের মত অনুরূপ অবস্থা অসংখ্য জেলের। এ অবস্থায় উপকূলে ফিরে আসা জেলেদের চোখে মুখে হতাশার স্পষ্ট ছাপ লক্ষ্য করা গেছে।

গভীর সমুদ্রগামী কুয়াকাটার জেলে তৈয়ব আলী জানান, তাদের মাছধরা ট্রলারটি নিয়ে সাগরে যাবার উদ্দেশ্যে আন্ধারমানিক নদীর মোহনা থেকে ফিরে এসেছেন। এফবি তামান্না ট্রলারের মাঝি মো. ইউনুস মিয়া জানান, ট্রলারে তৈল ও বরফ ভরে সাগরে নামবার প্রস্তুতি নেওয়া ছিল, সাগর উত্তাল থাকার খবরে আর যাওয়া হয়নি। তবে সাগর মাছ ধরার উপযোগী হলে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, বৈরী অবস্থার মধ্যেও যারা সাগরে মাছ শিকারে ছিলেন তাদের কারও জালেই বড় সাইজের ইলিশের দেখা মিলেনি বলে দাবি করেছেন ভূক্তভোগী জেলে ও স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা। অধিকাংশ মাছধরা ট্রলারে পাওয়া ইলিশ ৩ থেকে ৪শ’ গ্রাম ওজনের ছিল।
মৎস্য বন্দর আলীপুরের ব্যবসায়ী মনি ফিসের মালিক আঃ জলিল ঘরামী বলেন, ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে জেলেরা সমুদ্রে গিয়েছিল। সমুদ্র উত্তাল থাকায় ঘাটে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এদের প্রায় সকলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মাছ না পাওয়ায় উপকূলের জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা রীতিমত হতাশাগ্রস্ত।

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, আমাবস্যার জো’র প্রভাব কেটে গেলে সমুদ্র স্বাভাবিক হবে। তখন আশা করছি, সাগরে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


সাগর উত্তাল, ট্রলার নিয়ে তীরে জেলেরা

Update Time : ১১:০১:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০২৩

জেলা প্রতিনিধি

বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় মৎস্যবন্দর আলীপুর খাপড়াভাঙ্গা নদীতে শত শত মাছধরা ট্রলার অবস্থান নিয়েছে। টানা দু’মাসের বেশি সময় নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ২৩ জুলাই রোববার সাগরে মাছ শিকারে নামে জেলেরা। এর একদিন বাদে সাগর আকস্মিক উত্তাল হয়ে ওঠে। ফলে উপকূলের অধিকাংশ মাছধরা ট্রলার ঘাটে ফিরে এসেছে।

বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে সবগুলো ট্রলার উপকূলের বিভিন্ন স্থানে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে বলে দাবি করেছেন আলীপুর মৎস্য আড়ৎদার সমিতির নেতৃবন্দ। তাদের মতে, সাগর শান্ত হলে এসব মাছধরা ট্রলার নিয়ে জেলেরা পুনরায় গভীর সমুদ্রে নামবে।

আলীপুরের এফবি শয়ন নামে একটি মাছধরা ট্রলারের মাঝী শাফায়েত জানান, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বুক ভরা আশা নিয়ে রূপালি ইলিশের সন্ধানে নেমেছিলেন তারা। ২২ জেলের ট্রলারটি সাগরে মাছ শিকারের যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে যেতে প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ হয়, সাগরে প্রচণ্ড ঢেউ থাকায় কোনো মতে ফিরে আসতে পারলেও মাত্র এক লাখ টাকার মাছ বিক্রি করতে পেরেছেন। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা। KSRM

মাঝী শাফয়েতের মত অনুরূপ অবস্থা অসংখ্য জেলের। এ অবস্থায় উপকূলে ফিরে আসা জেলেদের চোখে মুখে হতাশার স্পষ্ট ছাপ লক্ষ্য করা গেছে।

গভীর সমুদ্রগামী কুয়াকাটার জেলে তৈয়ব আলী জানান, তাদের মাছধরা ট্রলারটি নিয়ে সাগরে যাবার উদ্দেশ্যে আন্ধারমানিক নদীর মোহনা থেকে ফিরে এসেছেন। এফবি তামান্না ট্রলারের মাঝি মো. ইউনুস মিয়া জানান, ট্রলারে তৈল ও বরফ ভরে সাগরে নামবার প্রস্তুতি নেওয়া ছিল, সাগর উত্তাল থাকার খবরে আর যাওয়া হয়নি। তবে সাগর মাছ ধরার উপযোগী হলে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, বৈরী অবস্থার মধ্যেও যারা সাগরে মাছ শিকারে ছিলেন তাদের কারও জালেই বড় সাইজের ইলিশের দেখা মিলেনি বলে দাবি করেছেন ভূক্তভোগী জেলে ও স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা। অধিকাংশ মাছধরা ট্রলারে পাওয়া ইলিশ ৩ থেকে ৪শ’ গ্রাম ওজনের ছিল।
মৎস্য বন্দর আলীপুরের ব্যবসায়ী মনি ফিসের মালিক আঃ জলিল ঘরামী বলেন, ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে জেলেরা সমুদ্রে গিয়েছিল। সমুদ্র উত্তাল থাকায় ঘাটে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এদের প্রায় সকলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মাছ না পাওয়ায় উপকূলের জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা রীতিমত হতাশাগ্রস্ত।

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, আমাবস্যার জো’র প্রভাব কেটে গেলে সমুদ্র স্বাভাবিক হবে। তখন আশা করছি, সাগরে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে।