বিএনপি কি এবার সেন্টমার্টিন বেচে দেবে, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

  • Update Time : ০৪:১৯:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩
  • / 169

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন তুলেছেন, ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি এবার কি সেন্টমার্টিন বিক্রি করবে?

তিনি বলেন, বিএনপি ২০০১ সালে অন্য দেশের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। তারা এবার দেশ, নাকি সেন্টমার্টিন বিক্রি করবে? আমি কোনো কিছুর মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাই না। আমাদের ভূ-খণ্ড ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে সেটা হতে দেবে না।

বুধবার (২১ জুন) গণভবনে সুইজারল্যান্ড সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

দেশে সংবিধান ও নির্বাচনী আইন অনুযায়ী নির্বাচন হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ উন্নতি চায়, নাকি সন্ত্রাস ও ভোটচুরির যুগে ফিরতে চায় সেই সিদ্ধান্ত তারাই নেবে।

তিনি বলেন. গণতান্ত্রিক ধারা অব্যহত আছে বলেই দেশ এগিয়েছে। কোভিডের পর মরার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো ইউক্রেন যুদ্ধ। অনেক দেশেই মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে। আমাদের দেশেও তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।

কিছুলোক সব সময় পরিস্থিতির সুযোগ নেয় মন্তব্য করে সরকার প্রধান বলেন, আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। কিছু লোক ইচ্ছে করে মজুদ করে দাম বাড়ায়। যারা মজুদদারি, কালোবাজারি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। মানুষের যেটাতে কষ্ট হয় সেটা আমরা লুকাই না। আমরা কষ্ট লাঘবের চেষ্টা করছি।

অতিরিক্ত পণ্য সংরক্ষণের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে কাঁচা মরিচ কিনে শুকিয়ে রেখে দেন। বর্ষায় খাওয়া যাবে। নিজ নিজ জায়গা থেকে একটু উৎপাদন করলে সমস্যা থাকবে না।

এসময় সাংবাদিকদের সঙ্গে একটু রসিকতা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এক কানে শুনি ভাই, আরেক কান তো খালেদা জিয়া গ্রেনেড হামলা করে দিছে শেষ করে। খুনির দল; সে একটা খুনি, তার স্বামী একটা খুনি, তার একটা ছেলেও খুনি।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্তের কেউ যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে সেটাই ছিল খুনিদের লক্ষ্য। সেখানে আমি চার চারবার ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নতি করেছি।

তিনি বলেন, একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক এটাই আমাদেরই দাবি। আমরা জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে।

মানুষ ভোট দিলে ক্ষমতায় থাকবো, না দিলে থাকবো না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রূপকল্প-২১ সহ দেশ উন্নয়নশীলে উন্নীত হয়েছে। এখন ২০২৬ এ তা আরেক পর্যয়ে যাবে। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে এটি কার করার সক্ষমতা আছে।

যারা এদেশের ভাগ্য পরিবর্তন পছন্দ করেনা তারা নানা কিছু বলছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের একটু সমস্যা হয়েছে, সেটা কেটে যাবে। আমাদের একটু সহনশলীল হতে হবে।

এসময় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়নের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রার্থীর বিষয়ে আমরা শতফুল ফুটতে দেয়ার পক্ষে। যে ফুলটি সবচেয়ে সুন্দর সেই ফুলটি বেছে নেবো।

প্রার্থীর জনপ্রিয়তা গ্রহণযোগ্যতা ভিত্তিতে মনোনয়ন দেয়া হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওয়েস্ট মিনিস্টার ব্যবস্থায় যেভবে নির্বাচন হবার সেভাবে হবে। একটি নির্বাচিত সরকারপ্রধান আরেকজন নির্বাচিত সরকারপ্রধান দ্বারা প্রতিস্থাপিত করবেন। এটা আদালতের রায় ও সংবিধান স্বীকৃত। দেশের মানুষকে বিবেচনা করতে হবে তার কী আবারও ২০০৭ এর মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান কী না?

নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সময় যে কয়টা উপনির্বাচন হয়েছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে, আপনারাই বলেন নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হয়েছে কি না। আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে। এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার লিস্ট বিএনপি সরকার করেছিল। এখন তো আর সেটা নেই, এখন ছবিসহ ভোটার তালিকা আছে। আগে লোহার বাক্স ছিল, সিল মেরে বাক্স ভর্তি করত। এখন ট্রান্সপারেন্ট ব্যালট বক্স, সিল মেরে বাক্স ভরার তো কোনো সুযোগ নেই।

ব্রিকস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্রিকসে আমরা যোগ দেবো এই কারণেই যে, প্রথম থেকে এটার সঙ্গে ছিলাম। ব্রিকসে থাকার সিদ্ধান্ত কোনো একটি জোটে থাকা নয়। বরং যাতে সবার সঙ্গে থাকতে পারি এবং দেশের মানুষের কষ্ট লাঘবে কাজ করতে পারি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু ডলারের ওপর নির্ভরশীল না থেকে নিজেদের মুদ্রায় বিনিময় করার চেষ্টা করছি। যেটা তে আমাদের সুবিধা ও দেশের জন্য কল্যাণকর হয় সেটাতে আমরা থাকবো।

সংসারের কাজ ভাগবাটোয়ারা করলে শান্তি বাড়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়েদের ঘরের কাজকে জিডিপিতে নিতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে। ২০০১ এ নৃশংস সাম্প্রদায়িক হামলা করা হয়েছে। রাজনৈতিক নেতা কর্মী ও প্রশাসনে হামলা হয়েছে। বেশ কয়েকজন অপরাধী বিদেশে গিয়ে বিরাট মানবাধিকার কর্মী হয়ে গেছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


বিএনপি কি এবার সেন্টমার্টিন বেচে দেবে, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

Update Time : ০৪:১৯:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন তুলেছেন, ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি এবার কি সেন্টমার্টিন বিক্রি করবে?

তিনি বলেন, বিএনপি ২০০১ সালে অন্য দেশের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। তারা এবার দেশ, নাকি সেন্টমার্টিন বিক্রি করবে? আমি কোনো কিছুর মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাই না। আমাদের ভূ-খণ্ড ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে সেটা হতে দেবে না।

বুধবার (২১ জুন) গণভবনে সুইজারল্যান্ড সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

দেশে সংবিধান ও নির্বাচনী আইন অনুযায়ী নির্বাচন হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ উন্নতি চায়, নাকি সন্ত্রাস ও ভোটচুরির যুগে ফিরতে চায় সেই সিদ্ধান্ত তারাই নেবে।

তিনি বলেন. গণতান্ত্রিক ধারা অব্যহত আছে বলেই দেশ এগিয়েছে। কোভিডের পর মরার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো ইউক্রেন যুদ্ধ। অনেক দেশেই মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে। আমাদের দেশেও তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।

কিছুলোক সব সময় পরিস্থিতির সুযোগ নেয় মন্তব্য করে সরকার প্রধান বলেন, আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। কিছু লোক ইচ্ছে করে মজুদ করে দাম বাড়ায়। যারা মজুদদারি, কালোবাজারি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। মানুষের যেটাতে কষ্ট হয় সেটা আমরা লুকাই না। আমরা কষ্ট লাঘবের চেষ্টা করছি।

অতিরিক্ত পণ্য সংরক্ষণের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে কাঁচা মরিচ কিনে শুকিয়ে রেখে দেন। বর্ষায় খাওয়া যাবে। নিজ নিজ জায়গা থেকে একটু উৎপাদন করলে সমস্যা থাকবে না।

এসময় সাংবাদিকদের সঙ্গে একটু রসিকতা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এক কানে শুনি ভাই, আরেক কান তো খালেদা জিয়া গ্রেনেড হামলা করে দিছে শেষ করে। খুনির দল; সে একটা খুনি, তার স্বামী একটা খুনি, তার একটা ছেলেও খুনি।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্তের কেউ যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে সেটাই ছিল খুনিদের লক্ষ্য। সেখানে আমি চার চারবার ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নতি করেছি।

তিনি বলেন, একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক এটাই আমাদেরই দাবি। আমরা জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে।

মানুষ ভোট দিলে ক্ষমতায় থাকবো, না দিলে থাকবো না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রূপকল্প-২১ সহ দেশ উন্নয়নশীলে উন্নীত হয়েছে। এখন ২০২৬ এ তা আরেক পর্যয়ে যাবে। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে এটি কার করার সক্ষমতা আছে।

যারা এদেশের ভাগ্য পরিবর্তন পছন্দ করেনা তারা নানা কিছু বলছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের একটু সমস্যা হয়েছে, সেটা কেটে যাবে। আমাদের একটু সহনশলীল হতে হবে।

এসময় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়নের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রার্থীর বিষয়ে আমরা শতফুল ফুটতে দেয়ার পক্ষে। যে ফুলটি সবচেয়ে সুন্দর সেই ফুলটি বেছে নেবো।

প্রার্থীর জনপ্রিয়তা গ্রহণযোগ্যতা ভিত্তিতে মনোনয়ন দেয়া হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওয়েস্ট মিনিস্টার ব্যবস্থায় যেভবে নির্বাচন হবার সেভাবে হবে। একটি নির্বাচিত সরকারপ্রধান আরেকজন নির্বাচিত সরকারপ্রধান দ্বারা প্রতিস্থাপিত করবেন। এটা আদালতের রায় ও সংবিধান স্বীকৃত। দেশের মানুষকে বিবেচনা করতে হবে তার কী আবারও ২০০৭ এর মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান কী না?

নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সময় যে কয়টা উপনির্বাচন হয়েছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে, আপনারাই বলেন নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হয়েছে কি না। আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে। এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার লিস্ট বিএনপি সরকার করেছিল। এখন তো আর সেটা নেই, এখন ছবিসহ ভোটার তালিকা আছে। আগে লোহার বাক্স ছিল, সিল মেরে বাক্স ভর্তি করত। এখন ট্রান্সপারেন্ট ব্যালট বক্স, সিল মেরে বাক্স ভরার তো কোনো সুযোগ নেই।

ব্রিকস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্রিকসে আমরা যোগ দেবো এই কারণেই যে, প্রথম থেকে এটার সঙ্গে ছিলাম। ব্রিকসে থাকার সিদ্ধান্ত কোনো একটি জোটে থাকা নয়। বরং যাতে সবার সঙ্গে থাকতে পারি এবং দেশের মানুষের কষ্ট লাঘবে কাজ করতে পারি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু ডলারের ওপর নির্ভরশীল না থেকে নিজেদের মুদ্রায় বিনিময় করার চেষ্টা করছি। যেটা তে আমাদের সুবিধা ও দেশের জন্য কল্যাণকর হয় সেটাতে আমরা থাকবো।

সংসারের কাজ ভাগবাটোয়ারা করলে শান্তি বাড়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়েদের ঘরের কাজকে জিডিপিতে নিতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে। ২০০১ এ নৃশংস সাম্প্রদায়িক হামলা করা হয়েছে। রাজনৈতিক নেতা কর্মী ও প্রশাসনে হামলা হয়েছে। বেশ কয়েকজন অপরাধী বিদেশে গিয়ে বিরাট মানবাধিকার কর্মী হয়ে গেছে।