কুবিতে প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন

  • Update Time : ০৮:৩০:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩
  • / 208

সাঈদ হাসান, কুবি

★ দায়িত্ববান প্রক্টর চাই
★ প্রক্টর রানা এক আতঙ্কের নাম
★ জীবনের নিরাপত্তা চাই

‘যোগ্য ব্যাক্তি থাকার পরও কেন ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর?’, ‘প্রক্টর রানা এক আতঙ্কের নাম’, ‘শিক্ষার্থীদের জন্য প্রক্টর, প্রক্টরের জন্য শিক্ষার্থী নয়’, ‘জীবনের নিরাপত্তা চাই’, ‘দায়িত্ববান প্রক্টর চাই’, এমন বিভিন্ন প্ল্যাকের্ড ও ব্যঙ্গচিত্র হাতে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণসহ পাঁচ দাবী নিয়ে মানববন্ধন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা।

১২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থেকে শুরু করে ব্যবসা শিক্ষা অনুষদ পর্যন্ত রাস্তায় বিভিন্ন বিভাগের অন্তত ৮ শতাধিক শিক্ষার্থী এ মানববন্ধনে অংশ নেয়। মানববন্ধন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈনের কাছে ৬ শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এতে শিক্ষার্থীরা অছাত্র এবং বহিরাগত হামলাকারীদের গ্রেফতার, বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, আহত শিক্ষার্থী এনায়েত উল্লাহ এবং মো: সালমান চৌধুরীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রদানপূর্বক নিরাপদ ক্যাম্পাস সুনিশ্চিত, এবং হামলায় ইন্ধনদাতা হিসেবে বিশ্ববিদ্যায়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণের দাবী জানান।

মানববন্ধনে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শারমিন মেঘলা বলেন, সম্প্রতি ক্যাম্পাসের বাহিরে সংঘটিত মারধরের ঘটনায় দায় না নিতে পারায় প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাই। বিশ্ববিদ্যালয় একটি মুক্ত চিন্তাধারা একটি স্থান। কিন্তু আমরা মুক্ত চিন্তাধারার প্রতিফলন করতে পারিনি। বিগত কয়েক মাসের ব্যবধানে আমরা দেখতে পাই প্রক্টর স্যারের প্রত্যক্ষ মদদে ক্যাম্পাস বারবার উত্তপ্ত হয়েছে। প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী রানা দায়িত্ব নেওয়ার পর ক্যাম্পাস বন্ধ হয়েছে। বিগত ৫ বছরে আমাদের ক্যাম্পাস একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি।

লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সাদ্দাম হোসেন বলেন, আপনি প্রক্টর হওয়ার পর থেকে ক্যাম্পাসে কেন এত সমস্যা? বহিরাগতরা যখন ক্যাম্পাসে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করছে তখন আপনি সিনেমার ফ্লেভার নিয়েছেন। তখন তো আপনি ক্যাম্পাস গিইটে ছিলেন। তখন আপনার পদক্ষেপ কি ছিল? সেটা কি প্রশ্নবিদ্ধ না?

একদিকে শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের বিচার দাবী এবং প্রক্টরের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক অপ্রপচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে কাজী ওমর সিদ্দিকী রানা সমর্থিত শিক্ষকদের একটি পক্ষ। দুপুর ১২ টায় বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের সামনে ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’র ব্যানারে প্রায় ৩০ শিক্ষক মানববন্ধনে অংশ নেন।

মানববন্ধন শিক্ষকেরা দাবী করেন, প্রক্টরের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উসকে দিচ্ছে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির পথে বাঁধা। এছাড়া তারা শিক্ষার্থীর উপর বহিরাগতদের হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
এসময় নৃবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান আইনুল হক বলেন, আমরা চাই শিক্ষার্থীরা ন্যায় বিচার পাবে। তবে প্রক্টরের বিরুদ্ধে প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ কাম্য নয়। অপরাধী যে-ই হোক তদন্ত সাপেক্ষে আমরা শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী জানান, আমার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা ঢালাওভাবে অভিযোগ করছে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে আমি পদত্যাগ করব।
উল্লেখ্য এর আগে গত ৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি বিপ্লব চন্দ্র দাস স্থানীয় যুবদল নেতা ও তাঁর অনুসারীদের নিয়ে ৩ ছাত্রলীগ নেতার উপর হামলা চালায়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


কুবিতে প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন

Update Time : ০৮:৩০:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩

সাঈদ হাসান, কুবি

★ দায়িত্ববান প্রক্টর চাই
★ প্রক্টর রানা এক আতঙ্কের নাম
★ জীবনের নিরাপত্তা চাই

‘যোগ্য ব্যাক্তি থাকার পরও কেন ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর?’, ‘প্রক্টর রানা এক আতঙ্কের নাম’, ‘শিক্ষার্থীদের জন্য প্রক্টর, প্রক্টরের জন্য শিক্ষার্থী নয়’, ‘জীবনের নিরাপত্তা চাই’, ‘দায়িত্ববান প্রক্টর চাই’, এমন বিভিন্ন প্ল্যাকের্ড ও ব্যঙ্গচিত্র হাতে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণসহ পাঁচ দাবী নিয়ে মানববন্ধন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা।

১২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থেকে শুরু করে ব্যবসা শিক্ষা অনুষদ পর্যন্ত রাস্তায় বিভিন্ন বিভাগের অন্তত ৮ শতাধিক শিক্ষার্থী এ মানববন্ধনে অংশ নেয়। মানববন্ধন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈনের কাছে ৬ শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এতে শিক্ষার্থীরা অছাত্র এবং বহিরাগত হামলাকারীদের গ্রেফতার, বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, আহত শিক্ষার্থী এনায়েত উল্লাহ এবং মো: সালমান চৌধুরীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রদানপূর্বক নিরাপদ ক্যাম্পাস সুনিশ্চিত, এবং হামলায় ইন্ধনদাতা হিসেবে বিশ্ববিদ্যায়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণের দাবী জানান।

মানববন্ধনে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শারমিন মেঘলা বলেন, সম্প্রতি ক্যাম্পাসের বাহিরে সংঘটিত মারধরের ঘটনায় দায় না নিতে পারায় প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাই। বিশ্ববিদ্যালয় একটি মুক্ত চিন্তাধারা একটি স্থান। কিন্তু আমরা মুক্ত চিন্তাধারার প্রতিফলন করতে পারিনি। বিগত কয়েক মাসের ব্যবধানে আমরা দেখতে পাই প্রক্টর স্যারের প্রত্যক্ষ মদদে ক্যাম্পাস বারবার উত্তপ্ত হয়েছে। প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী রানা দায়িত্ব নেওয়ার পর ক্যাম্পাস বন্ধ হয়েছে। বিগত ৫ বছরে আমাদের ক্যাম্পাস একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি।

লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সাদ্দাম হোসেন বলেন, আপনি প্রক্টর হওয়ার পর থেকে ক্যাম্পাসে কেন এত সমস্যা? বহিরাগতরা যখন ক্যাম্পাসে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করছে তখন আপনি সিনেমার ফ্লেভার নিয়েছেন। তখন তো আপনি ক্যাম্পাস গিইটে ছিলেন। তখন আপনার পদক্ষেপ কি ছিল? সেটা কি প্রশ্নবিদ্ধ না?

একদিকে শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের বিচার দাবী এবং প্রক্টরের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক অপ্রপচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে কাজী ওমর সিদ্দিকী রানা সমর্থিত শিক্ষকদের একটি পক্ষ। দুপুর ১২ টায় বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের সামনে ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’র ব্যানারে প্রায় ৩০ শিক্ষক মানববন্ধনে অংশ নেন।

মানববন্ধন শিক্ষকেরা দাবী করেন, প্রক্টরের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উসকে দিচ্ছে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির পথে বাঁধা। এছাড়া তারা শিক্ষার্থীর উপর বহিরাগতদের হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
এসময় নৃবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান আইনুল হক বলেন, আমরা চাই শিক্ষার্থীরা ন্যায় বিচার পাবে। তবে প্রক্টরের বিরুদ্ধে প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ কাম্য নয়। অপরাধী যে-ই হোক তদন্ত সাপেক্ষে আমরা শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী জানান, আমার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা ঢালাওভাবে অভিযোগ করছে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে আমি পদত্যাগ করব।
উল্লেখ্য এর আগে গত ৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি বিপ্লব চন্দ্র দাস স্থানীয় যুবদল নেতা ও তাঁর অনুসারীদের নিয়ে ৩ ছাত্রলীগ নেতার উপর হামলা চালায়।